বিনোদন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত ভারতেই অবস্থান করছেন তিনি। জুলাই আন্দোলনে বিনোদন জগতের তারকারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। আর ছাত্র-জনতার পক্ষে ছিলেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া।
শবনম ফারিয়া আরও লিখেছেন— একটা গল্প আছে না, শীতের সকালে একজন ইমাম আর একজন চোরের। ইমাম ভাবে— কী ভালো একটা মানুষ এই ঠান্ডায় ফজরের নামাজ পড়তে এসেছে। আবার চোর ভাবে— কী ভদ্রলোক দেখতে, দাড়ি দুড়ি রেখে আবার চুরি করে। এই গল্প থেকে আমরা কি শিখেছিলাম? তিনি বলেন, যে যেমন, যার চিন্তাধারা যেমন, অন্যদেরও তাদের সেইম মনে হয়।
অভিনেত্রী বলেন, কিন্তু বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর সব মানুষ টাকার কাছে তাদের ‘এথিক্স’ বিক্রি করে না। দুনিয়ার ‘সব মানুষের’ কাছে টাকাই ‘সব’ না। মানুষ স্রোতের বিপরীতেও যায়, রিস্ক নেয়। তিনি বলেন, জুন মাসে যখন আন্দোলন তুঙ্গে, ইন্টারনেট চলে যাওয়ার পরপর যেসব সেলিব্রেটির কাছে, মেট্রোরেল/বিটিভিতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদ করার জন্য ভিডিও বানাতে বলা হয়। আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম।
এ অভিনেত্রী বলেন, আমি প্রথমে সময় চাই, বলি— ভেবে জানাব। স্বাভাবিক, সে সময় ডিরেক্ট না করার মতো সাহস জোগাড় করতে পারিনি। তারাও বলে সময় নেন, আপাতত এমনেই ইন্টারনেট নেই। যেহেতু হোয়াটআপ বন্ধ, তাও সিয়ামকে মেসেজ দিই— ‘তুমি কি কল পেয়েছ?’। সে আমাকে জানায়, পেয়েছে এবং না করেছে। তখন আমিও সাহস পাই এবং না বলে দিই।
ফারিয়া বলেন, এসব কথা অযথা বলে বেড়ানোর কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। সেই সময় এটাই করার কথা— না বলেছি বলে আমি বিশেষ কোনো ক্রেডিট নিতে চাইনি। যেহেতু আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনোভাবেই জড়িত না। অদূর ভবিষ্যতেও কোনো ইচ্ছা কিংবা পরিকল্পনা নেই। তাও যখন দেখি কেউ লেখে— ‘এরা তো ডলার খাইছে’ মার্কা কল্পনিক গল্প, হাসা ছাড়া কিছু করার থাকে না।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি, যারা মন থেকে আওয়ামী লীগ ভালোবাসে। কিন্তু জুলাইতে লাল ডিপি দিসিলো। হয়তো জুলাইকে আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেভাবে সেই সময় পোট্রে করা হইছে, এখন বিষয়টি তেমন নেই, কিন্তু সেই সময় আপনি যদি মানুষ হয়ে থাকেন, অমানুষ না হোন তাহলে আপনি কোনো মানুষকে হত্যা করার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারতেন না। আপনার রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা মতাদর্শ যাই থাকুক।
নিজ দেশের কাছে আর কোনো প্রত্যাশা রাখেন না জানিয়ে অভিনেত্রী লিখেছেন— এই স্ট্যাটাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পলিটিকস নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়া বন্ধ করলাম। কারণ ফাইনালি আমি বুঝে গেছি, জাতি হিসাবে আমরা অত্যন্ত বেহায়া ও নির্লজ্জ, আমরা কখনো ভালো হবো না।
যত আন্দোলন হোক, সরকার পরিবর্তন হোক, যতই শান্তিতে নোবেল পাওয়া মানুষ আসুক, আমাদের কেউ দুর্নীতি ও চুরি করা থেকে আটকাতে পারবে না। শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধ যেই ক্ষমতা পাবে, সেই তার অসৎ ব্যবহার করবে। আমি আর আমার নিজ দেশের কাছে আর কোনো প্রত্যাশা রাখি না। তিনি আরও লিখেছেন, পরিশেষে বলতে চাই— সত্যি সত্যি ডলার পেলে আসলে ভালোই লাগতো। শ্রীলংকা যাওয়ার আগে ২৫,৩০০ টাকা দিয়ে ২০০ ডলার পাসপোর্টে এন্ডোরস করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
কিউএনবি/আয়শা/১৯ জুন ২০২৫, /বিকাল ৩:৫০