মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ০৫:২৫ অপরাহ্ন

বিপদ-আপদে পাপ মোচন হয়

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
  • ১৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : পৃথিবীতে চলতেফিরতে মানুষ বিভিন্ন সময় নানা ধরনের বিপদ-আপদের সম্মুখীন হয়। এই বিপদ-আপদ আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মানুষের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। এর মাধ্যমে তিনি পরীক্ষা করেন- বিপদ-আপদে কে ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আর কে অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়। যারা ধৈর্য ধারণ করে, তাদের জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে আছে মহাপুরস্কার।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের, যারা তাদের ওপর বিপদ পতিত হলে বলে- ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং তার সান্নিধ্যেই ফিরে যাব)। তারা সেসব লোক, যাদের ওপর আল্লাহ তাআলার অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং তারাই সুপথপ্রাপ্ত।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৫৫-১৫৭)।

বিপদ-আপদ, কষ্ট-ক্লেশের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার গুনাহ মাফ করেন, পাপ মোচন করেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুসলমান ব্যক্তির যেকোনো ক্লান্তি, রোগ, দুশ্চিন্তা, দুঃখ, কষ্ট ও পেরেশানি দেখা দেয়, এমনকি তার (শরীরে) যদি কোনো কাঁটাও বিদ্ধ হয়, এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার পাপ মোচন করে থাকেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৬৪২)।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, (একদিন) আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট গেলাম, (তখন) তিনি জ্বরাক্রান্ত ছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তো কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। তিনি বলেন, হ্যাঁ, তোমাদের দুজন ব্যক্তি যতটুকু জ্বরে আক্রান্ত হয়, আমি একাই ততটুকু জ্বরে আক্রান্ত হই। আমি বললাম, এটি এ জন্য যে আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ নেকি। তিনি বলেন, হ্যাঁ, ব্যাপারটা এমনই। কেননা, যেকোনো মুসলমান মুসিবতে আক্রান্ত হয়, তা একটি কাঁটা কিংবা আরো ক্ষুদ্র কিছু হোক, এর দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহগুলো এমনভাবে ক্ষমা করে দেন, যেভাবে গাছ থেকে পাতাগুলো (শুকানোর পর) ঝরে যায়। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫২৪৫)।

ধৈর্য অপরিহার্য : মুসিবত গুনাহ মোচনের কারণ হতে হলে তাতে ধৈর্য অবলম্বন করা অত্যাবশ্যক। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার ফয়সালার ওপর আত্মসমর্পণ ও সন্তুষ্টি প্রকাশ এবং আল্লাহর নিকট থেকে সওয়াবের প্রত্যাশা রাখতে হবে।

যখন কেউ ধৈর্যের সঙ্গে দুঃখ-কষ্ট, দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি সহ্য করে এবং আল্লাহর কাছে সওয়াবের প্রত্যাশা করে, তার মানে সে আল্লাহর প্রতি ভালো ধারণা রাখে। সে বিশ্বাস করে যে আল্লাহ তাকে এসব মুসিবতের বিনিময়ে উত্তম কিছু দান করবেন। আল্লাহ তাআলার প্রতি এমন ধারণা পোষণ করা ঈমানদার ব্যক্তির জন্য অপরিহার্য।

সওয়াবের প্রত্যাশা : সওয়াবের প্রত্যাশা রাখার মানে হলো নিজের মনে এ বিশ্বাস রাখা যে এই ধৈর্যের জন্য সে প্রতিদান লাভ করবে। আর যে আল্লাহর প্রতি ভালো ধারণা পোষণ করে, আল্লাহ তাআলা তাকে তার ধারণা অনুযায়ী প্রতিদান দেন।

শাস্তিস্বরূপ বিপদ-আপদ : কখনো কখনো বিপদ-আপদ আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কোনো গুনাহ কিংবা অবাধ্যতার শাস্তি হিসেবেও আসতে পারে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের কাছে যেসব মুসিবত এসেছে, তা তোমাদেরই কৃতকর্মের ফল; আর তিনি অনেক কিছু ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ৩০)।

আল্লাহ তাআলা সবাইকে পাপমুক্ত জীবন দান করুন।

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ, রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

কিউএনবি/অনিমা/১৭ জুন ২০২৫, /বিকাল ৩:১৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit