শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ঢাবি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে সংস্কারকৃত মসজিদ ও ডিজিটাল সাইকেল গ্যারেজ উদ্বোধন ধনশ্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন চাহাল নরসিংদীতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল উদ্ধার বাফুফের অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ক্যাম্পে প্রবাসী ফুটবলার একজন মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহীদের সতর্ক করলো হাইকমিশন মুখের দুর্গন্ধ এড়াতে যা করবেন ভারতের চেয়ে কম শুল্ক আরোপ, রপ্তানিতে সুবিধাজনক অবস্থানে বাংলাদেশ ৫ আগস্টের মধ্যে শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে: জোনায়েদ সাকি ইনস্টাতে সালমানের রহস্যময় পোস্ট ঘিরে নতুন জল্পনা দাপুটে জয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনালে যুবারা

মানবপাচার বন্ধে বাংলাদেশের হস্তক্ষেপ চায় মালয়েশিয়া

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
  • ৩২ Time View

ডেস্ক নিউজ : মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সচল করতে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যেকোনো সময় মালয়েশিয়া শ্রমিক নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে নিরাপদ অভিবাসন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণসহ শ্রমবাজার সম্পর্কিত তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় আলোচনা অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। এর আগে অবৈধ পন্থায় মালয়েশিয়া যাওয়ার অব‍্যাহত প্রক্রিয়ায় লাগাম টানতে বলেছে সে দেশের প্রতিনিধিরা। 

ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বুধবার (২১ মে) দুই দেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সভায় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা এসব তথ্য জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, দুই দেশের প্রতিনিধিদের আলোচনা সফল হয়েছে। যেকোনো সময় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া শ্রমিক পাঠানো শুরু হবে। যৌথ এ আলোচনায় অংশ নিতে মঙ্গলবার মালয়েশিয়া সরকারের ১৪ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসে। মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ড.  ম.  শাহরিন বিন উমর। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া। বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুই দিনব‍্যাপী সভা শেষে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে শ্রমিক নেওয়া সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় আগামী ছয় বছরে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ পন্থায় শ্রমিক গেলে তাদের মালয়েশিয়ার বনে-জঙ্গলে পালিয়ে বেড়াতে হয়। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। মামলা হয়, কারাভোগ করে। তাই অবৈধ প্রক্রিয়ায় শ্রমিক না নিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়টি সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে দেখছে। শ্রমিক গ্রহণকারী দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া সরকার যেসব শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার সেসব শর্ত প্রতিপালনের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন,  ‘প্রথম ধাপে গত বছর শ্রমবাজারটি বন্ধ হওয়ার কারণে সব প্রক্রিয়া শেষ করেও যারা যেতে পারেননি, তাদের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যাবেন। তাদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় বোয়েসেলের মাধ্যমে পাঠানো হবে।’  তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অধিক সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি থাকলেও মালয়েশিয়া সরকার সীমিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক নিতে আগ্রহী। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় আলোচনা চলছে।’  

লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল অ্যান্ট্রি ভিসা দেওয়ার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকার ইতোমধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করছে। মালয়েশিয়া সরকার খুবই আন্তরিকভাবে দেখছে কর্মী নেওয়ার বিষয়টি। দুই পক্ষই স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চায়।’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বায়রার একজন নেতা জানান, ‘যখনই সরকার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার উদ্যোগে নেয়, তখই বায়রার বিপথগামী একটি গ্রুপ প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। বাজার খুলতে বাধা দেয়। এই গ্রুপটি মূলত অবৈধভাবে শ্রমিক পাঠানোর চক্রে জড়িত। তারা চায় না বৈধভাবে শ্রমিক যাক। কারণ, বৈধভাবে শ্রমিক গেলে তাদের অবৈধ শ্রমিক পাঠানোর ব্যবসা হুমকির মুখে পড়ে। 

ওই নেতা আরও জানান, অবৈভাবে শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গেলে দেশটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। আমাদের দেশ থেকে শ্রমিক নিতে অনীহা প্রকাশ করে। আবার অন্যদিকে মালয়েশিয়াও আন্তর্জাতিকভাবে ভাবমূর্তি সংকটে পড়ে। তাদের পণ্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়। তাই অবৈধপথে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করা জরুরি। এর আগে গত ১৪ মে মালয়েশয়ার পুত্রজায়ায় দেশটির স্বরাষ্ট্র ও মানবসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে যৌথসভায় অংশ নেন বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া এবং উপসচিব সারোয়ার আলম। ওই সভায় বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিতে অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে যে মামলা রয়েছে সেগুলোর নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে। 

মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ বলছে, বিভিন্ন এজেন্সির সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ‘হয়রানিমূলক’ মামলা হয়েছে, যা মালয়েশিয়া সরকারের অভিবাসন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মালয়েশিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তাই মালয়েশিয়া দ্রুত মামলাগুলো নিষ্পত্তি চেয়েছে। শ্রমিকের নিরাপত্তা ও স্বার্থ সংরক্ষণ করা, অভিবাসন ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে সহযোগী এজেন্সি প্রথা বাদ দেওয়া।

রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সংগঠন বায়রার সাবেক মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধা আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, কর্মীদের নিরাপদ কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা এবং কম খরচে মালয়েশিয়া যাওয়ার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। আমাদের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের কে ব্যবসা করল, কে করল না- সেটাকে প্রাধান্য না দিয়ে দেশের স্বার্থ ও শ্রমিকের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাছাড়া আমাদের বায়রার কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলকভাবে অর্থ ও মানবপাচারের মামলা দেওয়া হয়েছে। অনতি বিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার বা নিষ্পত্তি করা জরুরি। মামলা থাকলে কোনো এজেন্সি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। তাদের মধ্যে সবসময় এক ধরনের ভীতি কাজ করবে।’

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২১ মে ২০২৫, /বিকাল ৫:৩৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit