শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম

বিশ্ব নেতাদের সমালোচনার মুখে ট্রাম্পের নতুন শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৯২ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিলসহ একাধিক দেশ এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে এক বিবৃতিতে ভন ডার লেন বলেন, নতুন কর আমদানিতে ‘অনিশ্চয়তা বাড়বে’ এবং ‘বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের জন্য ভয়াবহ’ পরিণতি ডেকে আনবে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ শুল্কের প্রভাব নিয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন, আর ফ্রান্স সরকারের মুখপাত্র সোফি প্রিমাস বলেছেন, “ফ্রান্স এই বাণিজ্য যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত”।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, তারা “একটি উন্মুক্ত বিশ্বব্যবস্থার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”।

চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক ৫৪%-এ পৌঁছানোর ফলে দেশটি কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে “অবিলম্বে শুল্ক বাতিল” করার আহ্বান জানিয়েছে এবং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, “চীন কঠোর পাল্টা ব্যবস্থা নেবে”।

ট্রাম্পের নতুন শুল্ককে “অত্যন্ত দুঃখজনক” বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম লঙ্ঘন করতে পারে।

২৫% শুল্ক আরোপের কারণে দেশটি “বাণিজ্য সংকট মোকাবিলার” উপায় খুঁজছে।

তারা এই সিদ্ধান্তকে “অযৌক্তিক” বলে আখ্যা দিয়ে মার্কিন প্রশাসনের কাছে গুরুতর আপত্তি জানাবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার বলেছেন, তিনি “শুল্কের প্রভাব প্রশমিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য লড়াই করবেন”।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সতর্ক করে বলেছেন, “মার্কিন শুল্ক লাখ লাখ কানাডীয়কে সরাসরি প্রভাবিত করবে” এবং তার দেশ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

ব্রাজিল কংগ্রেসে “অর্থনৈতিক পারস্পরিকতা আইন” নামে একটি বিল অনুমোদন করেছে, যা মার্কিন শুল্কের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সতর্ক করেছেন, “যেসব দেশ প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে চাইবে, তারা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে”।

১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্কের অধীনে থাকা দেশগুলোর নেতারাও ট্রাম্পের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেছেন, ‘অযৌক্তিক শুল্ক’ আরোপের জন্য শেষ পর্যন্ত আমেরিকানদের সবচেয়ে বড় মূল্য দিতে হবে।

তবে তার সরকার পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নেব না।’

ডাউনিং স্ট্রিটের একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের ওপর কম শুল্ক আরোপের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির ‘সরকারের সাম্প্রতিক বাণিজ্য চুক্তির প্রচেষ্টার প্রমাণ’।

বৃহস্পতিবার সকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার পুনর্ব্যক্ত করেছেন, শুল্কের প্রভাব প্রশমিত করতে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে ‘লড়াই করবেন’। কারণ বিশ্ব ‘একটি নতুন যুগে’ প্রবেশ করছে।

তিনি ব্যবসায়ী নেতাদের বলেন, এই পদক্ষেপগুলোর ফলে ‘তার দেশে এবং বিশ্বব্যাপী উভয় জায়গায়ই’ ‘অর্থনৈতিক প্রভাব’ পড়বে।

তবে তার সরকার ‘ঠান্ডা ও সুশৃঙ্খলভাবে’ প্রতিক্রিয়া জানাবে বলেও জানান তিনি।

লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ ব্রাজিল বুধবার কংগ্রেসে ট্রাম্পের আরোপিত ১০ শতাংশ শুল্ক মোকাবিলায় ‘অর্থনৈতিক পারস্পরিকতা আইন’ -নামে একটি আইন অনুমোদন করেছে।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আশ্রয় নেওয়াসহ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে পারস্পরিকতা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ মূল্যায়ন করবে।

ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট দেশগুলোর প্রতি সতর্কতা জানিয়ে বলেছেন, তারা যেন ‘প্রতিশোধ না নেয়’ এবং ‘এটি মেনে নেয়’।

ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, ‘কারণ আপনারা যদি প্রতিশোধ নিতে চান, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’

বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় যে, বুধবারের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় দুই বাণিজ্য অংশীদার কানাডা ও মেক্সিকোর নাম উল্লেখ করা হয়নি।

রাশিয়া ও তার মিত্র উত্তর কোরিয়াকেও নতুন করে শুল্ক আরোপ করা দেশগুলোর তালিকায় দেখা যায়নি।

হোয়াইট হাউস বলেছে, তারা পূর্ববর্তী নির্বাহী আদেশ অনুসারে উভয় দেশকে [মেক্সিকো ও কানাডা] মোকাবিলা করবে। ফেন্টানিল এবং সীমান্ত সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই দুই দেশের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল ট্রাম্প।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, কানাডা শুল্কের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকবে না।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের মতো পদক্ষেপগুলো ‘লাখ লাখ কানাডীয়কে সরাসরি প্রভাবিত করবে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে এই শুল্কের বিরুদ্ধে লড়াই করার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, মার্কিন শুল্ক ‘বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে মৌলিকভাবে পরিবর্তন করবে’।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্কারোপের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা বাড়বে এবং বাণিজ্যযুদ্ধের নতুন ধাপ শুরু হতে পারে।

কিউএনবি/অনিমা/০৩ এপ্রিল ২০২৫,/রাত ৯:৪৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit