আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা ‘এসআইআর’ আতঙ্কে পশ্চিমবঙ্গে প্রাণ গেল আরও এক ব্যক্তির। মৃত ব্যক্তির নাম ক্ষিতীশ চন্দ্র মজুমদার (৯৫)। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহরের তোলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা হলেও আত্মহত্যা করেন বীরভূম জেলার ইলামবাজারে মেয়ের বাসায়।
বৃহস্পতিবার সকালে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি এলাকায় গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতের নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ক্ষিতীশ মজুমদারের নাম ছিল না। এরপর থেকেই তিনি মানসিক চাপে ভুগছিলেন। আশঙ্কা করতেন— এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হলে হয়তো তাকে দেশছাড়া হতে হবে। যদিও পরবর্তী ভোটার তালিকাগুলিতে তার নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল, তবু ভয় কাটেনি।
বৃহস্পতিবার সকালে মেয়ের বাড়ির একটি ঘর থেকে ক্ষিতীশ মজুমদারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়।
মৃতের কন্যা পুতুল বিশ্বাস জানান, এনআরসি আর এসআইআর নিয়ে চারপাশে যে ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তাতেই বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি চুপচাপ থাকতেন। সেই আতঙ্কই শেষ পর্যন্ত এমন পরিণতি ডেকে আনল।
খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। দলের মেদিনীপুরের বিধায়ক ও জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা মৃতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানান।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ক্ষিতীশ চন্দ্র মজুমদার দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে তোলাপাড়া এলাকায় বসবাস করছিলেন। সম্প্রতি নিজের বাড়িও নির্মাণ করেন। তার ছেলে কর্মসূত্রে আসামে অবস্থান করছেন।
নাতনি হিরুবালা মজুমদার বলেন, দাদুর ভোটার কার্ড আগে ছিল না। সম্প্রতি তা তৈরি হয়েছে। তবুও তিনি খুব চিন্তিত ছিলেন। এখন আমরাও ভয় পাচ্ছি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত মঙ্গলবারও উত্তর ২৪ পরগনার মহাজাতি নগর এলাকায় একই কারণে আত্মহত্যা করেন প্রদীপ কর (৫৭) নামে এক ব্যক্তি। পরপর এমন ঘটনায় রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
কিউএনবি/অনিমমা/৩০ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ৯:৪০