মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:২১ পূর্বাহ্ন

নারীদের সুবিধার্থে ইসলামী বিধানের সহজীকরণ

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫
  • ১২৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : নামাজ ও রোজা গুরুত্বপূর্ণ দুটি ইবাদত। এই ইবাদত নারী-পুরুষ সবার ওপর ফরজ। তবে শারীরিক গঠন ও নারীত্বসুলভ স্বাভাবিক পার্থক্যের কারণে নারীদের জন্য কিছু ক্ষেত্রে নামাজ ও রোজা পালন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে শিথিলতা ও সহজীকরণ করে দেওয়া হয়েছে।

এটি তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে করুণা ও রহমত।

নামাজ ও রোজা নিষিদ্ধ

মাসিক (হায়েজ) হওয়া নারীদেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। প্রতি মাসে সঠিক সময়ে মাসিক শুরু হওয়ার মাধ্যমে নারীদের শারীরিক সুস্থতা ও সন্তান ধারণে সক্ষমতা নিশ্চিত হয়। একজন নারীর মাসিকের সর্বনিম্ন সময় তিন দিন আর সর্বোচ্চ সময় ১০ দিন।

‌তিন দিন থেকে ১০ দিন পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে মাসিক চলাকালে নামাজ ও রোজার বিধান স্থগিত রাখা হয়েছে। (বুখারি, হাদিস : ১৮২৭)
 

রোজার কাজা আদায় করা

মাসিকের দিনগুলোতে এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সর্বোচ্চ ৪০ দিন পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা নারীদের জন্য নামাজকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দিয়েছেন। তবে যদি এর আগেই কেউ পবিত্র হয়ে যায় তাহলে পবিত্রতার বিধান শুরু হয়ে যায়। কিন্তু রোজা স্থায়ীভাবে মাফ হয় না।

হায়েজ বা নিফাস শেষে আবার রোজার কাজা আদায় করতে হয়। মুআজা (রহ.) থেকে বর্ণিত, এক মহিলা আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, আমাদের কেউ কি তার হায়েজের দিনগুলোর নামাজ কাজা করবে? আয়েশা (রা.) বললেন, তুমি কি হারুরিয়্যা (খারেজি)? রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে আমাদের কারো হায়েজ হলে পরে তাকে (নামাজ) কাজা করার নির্দেশ দেওয়া হতো না। (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৪)

নারীদের জন্য শিথিল বিধান

আল্লাহ তাআলা গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীর জন্য রোজার হুকুম শিথিল করে দিয়েছেন। দুগ্ধদানকারী নারী রোজা রাখলে যদি সন্তান দুধ না পায় আর ওই সন্তান অন্য কোনো খাবারেও অভ্যস্ত না হয়, তাহলে সন্তানের মৃত্যু বা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা দেখা দিলে তিনি রোজা ভাঙতে পারবেন এবং পরে কাজা আদায় করবেন। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা মুসাফির থেকে অর্ধেক নামাজ ও রোজা কমিয়ে দিয়েছেন আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিণী মহিলাদের জন্য রোজা পালন মাফ করে দিয়েছেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৭১৫)

মাসিক চলাকালীন তাওয়াফ

হজ পালনকালে ঋতুস্রাব হলে তাওয়াফ ছাড়া অন্য আমলগুলো করা যাবে। তবে ফরজ তাওয়াফ পরে পবিত্র হয়ে আদায় করতে হবে। (বুখারি, হাদিস : ৫১৫০)

ইস্তেহাজা অবস্থায় নামাজ ও রোজা

স্ত্রীলোকের বিশেষ অঙ্গ থেকে হায়েজের সর্বনিম্ন সময় তিন দিন থেকে কম অথবা অভ্যাসের অতিরিক্ত ১০ দিনের চেয়ে বেশি যে রক্তস্রাব হয় শরিয়তের বিধানে সেটা হলো ইস্তেহাজা। ইস্তেহাজার কারণে নামাজ ও রোজা মাফ হয় না। অতএব, ইস্তেহাজার কারণে নামাজ ও রোজা কাজা করতে পারবে না। প্রত্যেক ওয়াক্তে নতুন করে অজু করে নামাজ আদায় করতে হবে। আয়েশা (রা.) বলেন, ফাতিমা বিনতে আবু হুবায়শ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.) -এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার ইস্তেহাজা হয়েছে (সব সময়ই রক্ত ঝরে), কখনো আমি পবিত্র হই না। আমি কি নামাজ ছেড়ে দেব? তিনি বললেন, না, ওটা শিরার (ধমনি) রক্ত, হায়েজ নয়। যখন হায়েজ আসবে তখন নামাজ ছেড়ে দেবে আর যখন তা চলে যাবে তখন তোমার শরীর থেকে রক্ত ধুয়ে ফেলবে এবং নামাজ আদায় করবে। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৬)

হায়েজ-নেফাস অবস্থায় আমল

হায়েজ ও নেফাস অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা নিষেধ। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, হায়েজ বিশিষ্ট মহিলা এবং যাদের ওপর গোসল ফরজ তারা কোরআনের কিছু তিলাওয়াত করবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ১৩১)

তবে ওই সময় নারীদের আল্লাহর জিকির, দোয়া, দরুদ ও নেক কাজের সুযোগ আছে। তাই এই সময়টাতে ইবাদতের পরিকল্পনা এবং দ্বিন শেখার মাধ্যমে কাজে লাগানো উচিত। আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন।

কিউএনবি/অনিমা/১৪ মার্চ ২০২৫,/রাত ১০:২০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit