মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন

শ্বশুর বাড়িতে গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ; থানায় মামলা

মশিউর রহমান, আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি ।
  • Update Time : শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৪১ Time View
মশিউর রহমান, আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি : ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার পূর্ব জামগড়া রূপায়ন মাঠ এলাকার আলমাছের মেয়ে রিমা আক্তার আফরিনকে তার স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন মিলে যৌতুকের টাকার জন্য শারীরিক নির্যাতন করে জোরপূর্বক বিষ পানে হত্যা করেছে বলে এমন অভিযোগ নিহতের পরিবারের। এঘটনায় কোতোয়ালি থানায় স্বামী রাজনকে প্রধান আসামি করে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

শনিবার দুপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এসব অভিযোগের তথ্য দেন নিহতের পরিবার। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ার পূর্ব জামগড়া এলাকায় তাদের পারিবারিক কবরস্থানে আফরিনকে দাফন করা হয় এবং বুধবার (৬ই নভেম্বর) রাতে ঢাকার বাদামতলীর মদীনা (কমপ্লেক্সে-২) এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিতহ আফরিন (২৩) আশুলিয়ার পূর্ব জামগড়া রূপায়ন মাঠ এলাকার আলমাছের মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামী রাজন (২৮) কোতোয়ালি থানার বাদামতলী এলাকার মৃত রিপনের ছেলে। নিহত আফরিন তার স্বামীর সাথে ফুফুর বাসায় থেকে কাপড়ের ব্যবসা করতো।
নিহতের বাবা আলমাস অভিযোগ করে বলেন, ৫ বছর আগে আমার মেয়ে আফরিনের সাথে রাজনের  মোবাইলে পরিচয় হয়। পর্যায়ক্রমে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ছেলের বাবা-মা না থাকায় সে ঢাকায় তার ফুফুর সাথে থেকে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য দেখাশোনা করতো। তার ফুফুর কথার বাইরে সে কিছুই করে না। আমার মেয়ে তাদের সম্পর্কের কথা বললে আমরা ছেলের লোকজনের সাথে কথা বলে বিয়ে দিয়ে দেই। সামাজিক ভাবে যেটা পেতে পারে আমার সাধ্য অনুযায়ী দেই। এর কিছুদিন পরে রাজন আমার মেয়ের কাছে ৩ লাখ টাকা যৌতুক চায়। একথা শোনার পরে আমি সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে ৩ লাখ টাকা দেই। এর কয়েকদিন পরে আরও ৭ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে। এনিয়ে আমার মেয়েকে মারধর করতো।
পরে আমার মেয়ে সেখান থেকে রাগ করে আমার বাড়ীতে চলে আসে। আফরিন এখানে একটি কারখানায় চাকরি নেয়। ৬ মাস চাকরি করে ১ লাখ জমায়। ওই টাকা নিয়ে সংসার করতে সে তার স্বামীর কাছে চলে যায় এবং তাকে ১লাখ টাকা দেয়। এতে তার হবে না বিধায় রাজন ও তার ফুফুরা আরও ৬ লাখ টাকার জন্য চাপ দেয়। এবং বিভিন্ন সময়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। এরই জের ধরে ৬ই নভেম্বর রাতে টাকার জন্য আফরিনকে শারীরিক নির্যাতন করে জোরপূর্বক বিষপানে প্রলুব্ধ করে এবং তাকে বিষ পান করানো হয়।
পরে ৭ই নভেম্বর দুপুরে আমার মেয়েকে মিটফোর্ডের স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে মেয়ের ননদ ফোনে আমাকে বলে আপনার মেয়ে বিষ পান করেছে। এরপরে তারা আমার মেয়েকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। ৬ দিন ধরে মেডিক্যালের আইসিইউতে রাখার পরে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে আমি কোন উপায় না পেয়ে ঢাকার কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করি। আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এভাবে যেন আমার মত আর কোন মা-বাবার কোল খালি না হয়, এইজন্য আমি প্রশাসনের সুদৃষ্ট কামনা করছি, জড়িতদেরকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবিও জানান নিহতের বাবা।
ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো.আরাফ বলেন, ১৮৬০ দন্ডবিধির ৩০৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তি আত্মহত্যা করে, তাহলে যে ব্যক্তি আত্মহত্যায় সাহায্য করবে বা প্ররোচনা দান করবে, সে ব্যক্তিকে ১০ বছর পর্যন্ত যে কোনও মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
এবিষয়ে কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ ওসমান গণি বলেন, এঘটনায় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় অভিযুক্ত স্বামী রাজনসহ পাঁচজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। নিহত রিমা আক্তার আফরিনের ময়ণা তদন্তের রিপোর্ট আসার পরে এর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৬ নভেম্বর ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:৫৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit