সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন

‘সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে’

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৫৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ বদ্ধ পরিকর।

তিনি বলেন, একটি গণমুখী, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণ দেশের জনগণের চাহিদা। ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের মাধ্যমে তা প্রকটভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত সোমবার (১১ নভেম্বর) ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ‘Achieving Just Societies: Inclusive Justice Pathways for People and Planet in Asia and the Pacific’ শীর্ষক একটি রিজিওনাল কনফারেন্সে ‘কি-নোট স্পিকার’ হিসেবে দেয়া বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি।

জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় একটি দেশের জন্য স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকা কতটা জরুরি তা পুনরায় উঠে এসেছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে কলোনিয়াল লিগ্যাসি হিসেবে যে আনুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে অনেক সময়ই তা গণপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়। তারই সূত্র ধরে এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের শত বছরের প্রচলিত ঐতিহ্যবাহী বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আধুনিক যুগে নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে মর্মে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন।

এছাড়া, প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার পাশাপাশি লিগ্যাল এইড কার্যক্রমের মাধ্যমে নাগরিকগণের আইনি সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সদস্যগণ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে বিচার সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে মর্মে মাননীয় প্রধান বিচারপতি কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদেরকে অবহিত করেন।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট capability approach প্রয়োগ করে কেবলমাত্র অস্বচ্ছল ব্যক্তি লিগ্যাল এইডের সহায়তা পাবেন এই সংকীর্ণ ধারণাকে আরও বিস্তৃত করেছে। ফলে বর্তমানে অর্থিক অসঙ্গতি ছাড়াও অন্য যে কোন প্রতিকূলতার কারণে কোনো ব্যক্তি আইনজীবী নিয়োগে ব্যর্থ হলে আইনি সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশের উচ্চ আদালত বিভিন্ন জনস্বার্থ মামলায় জুডিসিয়াল রিভিউ এর সফল প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ, জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইনের উদারনৈতিক ব্যাখা প্রদান করে সমাজের টেকশই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে এবং এভাবে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এ সময় তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচার বিভাগ সংস্কারে তার ঘোষিত রোডম্যাপের রূপরেখা তুলে ধরেন। এঠাড়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকল্পে সরকারের নিকট বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর পক্ষ হতে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনাও তুলে ধরেন তিনি।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকল্পে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ‘সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিল’ কে পুনরুজ্জীবিত করেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক প্রক্রিয়া চালু করার বিষয়ে শীঘ্রই উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে বিচার বিভাগের আধুনিকীকরণ তথা বিচার ব্যবস্থায় বিচারপ্রার্থীর অভিগম্যতা বৃদ্ধিসহ বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনয়নে ই-জুডিসিয়ারি বাস্তবায়নে শীঘ্রই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া এসময় তিনি জনবান্ধব বিচার ব্যবস্থা বিনির্মাণের মাধ্যমে inclusive justice নিশ্চিতকরণে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আঞ্চলিক কৌশলপত্র প্রণয়নে আন্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির আহবান জানান।

ইউএনডিপি , থাইল্যান্ড ইনিস্টিটিউট অব জাস্টিস, ইউএনপি, আইডিএলও, ইউনেস্কো, ইউনিসেফ, ইউএন ওমেন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক, পার্থফাইন্ডার, এবং ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই রিজিওনাল কনফারেন্সে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কিউএনবি/অনিমা/১২ নভেম্বর ২০২৪,/রাত ৮:৩৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit