দ্য ওয়ার্নিং !
————
বিএনপি বানের জলে ভেসে আসা কোন রাজনৈতিক দল নয়। এদেশের মাটি ও মানুষের সংগে নিবিড় সম্পর্ক রচনা করেই বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী ধারার রাজনীতি প্রচলন শুরু করে বিএনপি। বিএনপির জনক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এখনো বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় একজন নেতা।
বিএনপিকে মহীরুহ রূপদান করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। রাজনীতিতে কমিটমেন্ট যদি হয় অনুষঙ্গ বিশেষ তাহলে বেগম খালেদা জিয়া সে অনুষঙ্গের রচয়িতা। যায় যাক জীবন, তবু দেশের মানুষের সংগে বিশ্বাস ভঙ্গ নয়, এই আস্থা নিয়েই বেগম খালেদা জিয়া দেশবাসীর বিশ্বাস তৈরী করতে সক্ষম হয়েছেন।
নির্বাসিত জীবনে একটি বৃহৎ দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা, সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী রূপ দেয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রোল মডেল প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন। বাংলাদেশে একটিমাত্র দল বিএনপি, যার দৃশ্যমান কোন বিভক্তি নেই। নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে দীর্ঘ দেড় দশক রাজনীতির মাঠে টিকে থাকার দৃষ্টান্ত স্থাপনে তারেক রহমান সুযোগ্য নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন।
এখন আসি – বিএনপিকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের এক কানাঘুষার কথা। সকলকে মনে রাখা উচিত স্বৈরাচারের লৌহমানবী শেখ হাসিনা ১৫ বছর যাবৎ আদাজল খেয়েও বিএনপির একটা পশম ছিড়তে পারেনি। বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্যে কি না করেছেন তিনি ? কিন্তু সফলকাম হতে পারেননি। নিষ্ঠুর এক বিদায় তাকেই নিতে হয়েছে।
নাক চিপলে দুধ বের হবে এমন কিছু নতুন নতুন পালোয়ানের দেখা ইদানিং হচ্ছে। এদের মনের মধ্যে কি কিলবিল করে তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু বাস্তবতা বড় কঠিন বিষয়। শেখ হাসিনার পতনের পর কিছু অতি বিপ্লবী মনে মনে ভাবে, বিএনপিকে বাদ দেয়া যায়না? এই অতি বিপ্লবীদের ওয়ার্নিং দিচ্ছি – দুঃস্বপ্নের লিমিট থাকে। এমন দুঃস্বপ্ন দেখা উচিত না। বিএনপির শেকড় অনেক গভীরে গ্রথিত।
এই সরকার জনগণের সরকার নয়। বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের উচিত দ্রুত সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে একটা গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করা। এর বাইরে তাদের বিকল্পতাও নেই।
বাংলাদেশে শয়তানের অভাব নেই। অনেক শয়তান এরমাঝেই ফায়দা লুটেছে। একটা উদাহরণ শুধু দেই – শেখ হাসিনার আস্থাভাজন, প্রিয়ভাজন এবং মদদপুষ্টরাই প্রশাসনের শীর্ষপদগুলোতে পদায়ন লাভ করেছিল। তারা এখনো কেন ? স্বৈরতন্ত্রের সচিব আমলারা জাতিকে কি উপহার দিতে পারবে ? কেন তারা এখনো বিদায় হয়নি ? তাদেরকে রেখে মৃতপ্রায় স্বৈরশাসকের দেহে কি প্রাণসঞ্জীবনী সুধা ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে ? কিন্তু লাভ হবে না। কোন লাভ হবে না। স্রোত এখন ভিন্ন ভাবে প্রবাহিত হচ্ছে।
এখনই সময়। এখনই এই সরকারকে নিষ্কলুষ থাকার চেষ্টা করতে হবে। কিছু ভুল সিলেকশন হয়েই গেছে। মজুমদারদের নিজস্ব একটা এজেন্ডা আছে। এই এজেন্ডা অতীতেও যেমন দেশের জন্যে মঙ্গল বয়ে আনতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবেনা। সুতরাং এখনই সঠিক সময় ত্রুটিগুলো মেরামত করে নেয়া। নতুবা ঘন্টায় কিন্তু বারি দিয়ে ফেলেছে বিএনপি। সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্টিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলনের মাঠেই থাকবে। এই ওয়ার্নিং এর সহজবার্তা কারও বোধগম্য না হলে তারা অচিরেই পস্তাবে।
লেখকঃ লুৎফর রহমান একজন রাজনীতিবিদ ও লেখক। তিনি নিয়মিত লেখালেখির পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক নিউজ মিডিয়ার সম্পাদক ও প্রকাশক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র লুৎফর রহমান ৮০ এর দশকের স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরতে চারটি রাজনৈতিক উপন্যাস লিখেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় জীবনের খন্ডচিত্র এঁকে তিনি এখন ব্যাপক পরিচিত পাঠক মহলে।
কিউএনবি/বিপুল/১১.০৯.২০২৪/ সন্ধ্যা ৬.৩৪