এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছার হাকিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলামকে সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। তার অপসরনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে বুধবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ তিনি ২০১৯ সালে এ পদে নিয়োগ পাবার পর থেকে নানা রকম অনিয়ম ও দূর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদে ৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়োগ বণিজ্যের অভিযোগ করে বিক্ষোভকারি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বিক্ষোভকারি শিক্ষার্থী ইলিয়াচ হোসেন ও কয়েকজন অভিভাক জানান, বর্তামন প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ২০১৯ সালের ৬ আগষ্ট তারিখে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদান করে কমিটির মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন পদে ৭ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। কমিটির কাউকে না জানিয়ে তিনি অর্ধকোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন।কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে কোনো আয়-ব্যায় হিসাব কমিটি ও শিক্ষকদের নিকট দেন না। কয়েকবার এ ব্যাপারে তাকে বলা হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। বিদ্যালয়ের আর্থিক হিসাবের ব্যাপারে কোনো শিক্ষক বেশি কথা বললে তার চাকরি খেয়ে নেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।
শিক্ষকরা আরো জানান, এ বিদ্যালয়ে প্রতি বছর ৬০/৭০ হাজার টাকা করে টিউশন ফিস উত্তোলন করেন। এই টাকার একটি পয়সাও তিনি হিসাব দেয়নি। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের বিদ্যালয়র ফান্ড থেকে কোনো উৎসব ভাতা দেওয়া হয় না।কমিটির সদস্যরা জানান, প্রধান শিক্ষক নিজের মতো করে চলেন। কারো সাথে কোনো পরামর্শ করেন না। তিনি অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী কারো সাথেই ভালো আচরণ করেন না।
এ সব ঘটনার জের ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে গিয়ে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যায় হিসাব জানতে চাই। এ সময় প্রধান শিক্ষক হিসাব দিতে রাজি না হলে তারা অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে তারা বিক্ষোভ করতে শুরু করে। শিক্ষার্থীরা তাকে অফিসে অবরুদ্ধকরে রাখে। সকাল থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত নানা রকম শ্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদ্যস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
শিক্ষার্থীরা তাদের এক দফা দাবিতে অনড় থাকে। এক পর্যায়ে থানা পুলিশ গিয়েও প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করতে ব্যার্থ হন। পরে সন্ধ্যায় এলাকার গণ্যমান্যব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষক সাময়িক অব্যহতি পত্র দিলে শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়। শিক্ষার্থী ইলিয়াচ হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকার দূর্নীতির অভিযোগের প্রমান পাওয়া গিয়েছে। এই টাকার কোনো হিসেব তিনি দিতে পারেননি।
এছাড়া তিনি বিদ্যালয়ের ফান্ড তছরুপ করেছেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি তৈমুর রহমান খান বলেন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিন উদ্দীন খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আজ বৃহ¯পতিবার শিক্ষার্থী, এলাকাবসি ও অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক জরুরীসভা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি একটি পক্ষের পরিস্থিতির শিকার।
কিউএনবি/আয়শা/১৪ অগাস্ট ২০২৪,/রাত ১০:২৮