স্পোর্টস ডেস্ক : অ্যাডিলেড ওভালে তৃতীয় অ্যাশেজ টেস্টের শেষ দিনে অবিশ্বাস্য এক বিশ্বরেকর্ড হাতছানি দিচ্ছিল ইংলিশদের। টেস্টে সর্বোচ্চ রান তাড়া করার কীর্তিটার খুব কাছে এসে থামতে হলো তাদের। ৪৩৫ রান তাড়া করতে গিয়ে ৮২ রানে হারল ইংল্যান্ড। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। এই হারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় ইংল্যান্ডের জয়ের খরা বাড়ল। দেশটিতে টানা ১৮ ম্যাচ জিততে পারল না তারা।
পঞ্চম দিনের খেলায় বৃষ্টির কারণে কিছু সময় নষ্ট হয়। নাথান লায়নের হ্যামস্ট্রিং চোটও খেলা থামায়। তবু ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিল অস্ট্রেলিয়াই। ইংল্যান্ডের জেমি স্মিথ ৬০ রানে আউট হন। মিচেল স্টার্কের বলে তিনি ভুল শট খেলেন। উইল জ্যাকস ৪৭ রান করেন। লাঞ্চের পর তিনিও স্টার্কের বলেই ক্যাচ দেন। স্লিপে আবারও দারুণ ক্যাচ নেন মার্নাস লাবুশেন।
শেষ দিকে জশ টং স্কট বোল্যান্ডের বলে ক্যাচ দিলে ইংল্যান্ড অলআউট হয় ৩৫২ রানে। ফলে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত হয়। এই হারে অস্ট্রেলিয়ায় ইংল্যান্ডের হতাশা ১৪ বছর ছাড়াল। এই সিরিজকে ইংল্যান্ডের জন্য বড় সুযোগ বলা হচ্ছিল। কিন্তু তিন টেস্টেই হার মানতে হলো ইংল্যান্ডকে। মাত্র ১১ দিনের ক্রিকেটেই অ্যাশেজ জয়ের স্বপ্ন শেষ। এখন মেলবোর্ন বা সিডনিতে অন্তত একটি ম্যাচ জিততে না পারলে ৫-০ হোয়াইটওয়াশের লজ্জা অপেক্ষা করছে।
এটি টানা চতুর্থবার অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজ সফরে প্রথম তিন টেস্টেই হারল ইংল্যান্ড। ২০২৭ সালে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ড সফরে গেলে তখন শেষ অ্যাশেজ জয়ের বয়স হবে ১২ বছর। এই সফরের আগে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস বলেছিলেন, ‘এই সফর আমাদের জন্য ইতিহাস গড়ার সুযোগ’। কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম বলেছিলেন, ‘এই অ্যাশেজ আমাদের দলকে সংজ্ঞা দেবে’। তবে সংজ্ঞা দেওয়ার বদলে এই সিরিজ যেন ইংলিশ ‘বাজবল’ কৌশলের কবরই রচনা করে দিল।
বাজবল কৌশল অস্ট্রেলিয়ার সামনে টিকতে পারেনি। দল নির্বাচন ও প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল। প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলা, নুসায় ছুটি কাটানো এবং ড্রেসিংরুমে ‘দুর্বল মানুষ’ নিয়ে স্টোকসের মন্তব্যও আলোচনায় এসেছে। অ্যাডিলেডে কিছুটা উন্নতি করলেও ভুল কমেনি। প্রথম সকালে উসমান খাজাকে ক্যাচ ফেলেছে ইংল্যান্ড।
দুই ইনিংসেই বাজে শট খেলেছেন অলি পোপ ও হ্যারি ব্রুক। তবে অ্যালেক্স ক্যারির স্নিকো বিতর্কে তারা ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে।অস্ট্রেলিয়ার এই অ্যাশেজ জয়ের মাহাত্ম্য আবার বিশেষ কিছু। সিরিজের শুরু থেকেই সেরা একাদশ পায়নি দলটা। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স প্রথম দুই টেস্ট খেলেননি। জশ হেইজেলউড পুরো সিরিজেই নেই। দ্বিতীয় টেস্টে লায়ন বাদ পড়েছিলেন। অ্যাডিলেডে খেলেননি স্টিভ স্মিথ। তবু ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাথা নোয়াল না অস্ট্রেলিয়া।
কিউএনবি/ মহন / ২১ ডিসেম্বর ২০২৫,/ সকাল ১১:০৫