যশোরের চৌগাছায় হায়াতপুর কালিমন্দির পাহারায় উপজেলা জামায়াতের নায়েবী আমির মাওঃ নুরুল ইসলাম
এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় হিন্দুদের মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা পাহারায় জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা নিয়োজিত রয়েছেন। দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ উপজেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনা এবং জানমাল রক্ষায় ঢাল হয়ে দাড়িয়েছেন তারা।
কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্দেশে ও উপজেলা জামায়াতের আমির মাওঃ গোলাম মোরশেদের উদ্যোগে এ নয়া কর্মসুচি গ্রহণ করা হয়েছে। তারা মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা বন্ধ ও দুস্কৃতকারিদের হাত থেকে লুটপাট ঠেকাতে এ কর্মসুচি গ্রহণ করেছেন। এ কাজে রাত জেগে পাহারা দিতে অংশ নিয়েছে দলটির শত শত নেতা কর্মীরা।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির মাও. গোলাম মোরশেদ বলেন, সোমবার (৫ আগষ্ট) থেকে আমরা নেতা-কর্মীদের এ উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছি। তাঁদের মনে সাহস দিতে বলেছি। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশে জামায়াত-শিবির রয়েছে। জামায়াত মনে করে, সংখ্যালঘু বলে দেশে কিছুই নেই, সবাই দেশের নাগরিক। উপজেলার হায়াতপুর মন্দি, চুটারহুদা কালি মন্দীর, বল্লবপুর মন্দীর, হাজরাখানা হিন্দু পাড়া মন্দির, রানিয়ালী গ্রামের শিব মন্দীর, খড়িঞ্চা গ্রামের হালদার পাড়া মন্দীরসহ শহরের ঋষিপাড়া মন্দীর, কালিতলা দূর্গ মন্দিরে পাহার বসানো হয়েছে।
এদিকে কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর যেন কেউ অত্যাচার-অবিচার না করে সে জন্য পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল মন্দির পরিদর্শনে জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দল কাজ করছেন। তারা জানান হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশে আমরা রয়েছি। হিন্দু-মুসলিম আমরা সবাই ভাই ভাই। সকলে এ দেশেরই নাগরিক। সোমবার রাত থেকে চৌগাছা উপজেলার প্রত্যেকটি মন্দির শহরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থাপনা পাহারা দিতে দেখা গেছে। ৫ আগষ্ট রাতেই দলটির নেতারা পৌর শহর ও উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে বিভিন্ন দলে ভাগ করে পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব নেন।
শহরের বিভিন্ন স্থাপনা পাহারা দেওয়ার সময় উপজেলা জামায়াতের আমিরের সাথে উপস্থিত ছিলেন চৌগাছা পৌর সভার সাবেক প্যানেল মেয়র জামায়াত নেতা মাষ্টার কামাল আহমেদ, পৌর জামায়াতের আমীর মাও. আব্দুল খালেক, সেক্রেটারি জিল্লুর রহমান, জামায়াত নেতা মহিউদ্দীন, সামছুর রহমান, মাসুদ রানা, তৌহিদুর রহমান, অ্যাড.সাগর হোসেন, আব্দুল মান্নানসহ অর্ধশতাধিক জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মী। এ ছাড়া উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন জামায়াতের আমিরের দায়িত্বে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে কেন্দ্রিয় জামায়াতের ঘোষণা অনুযায়ি এ দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান উপজেলা জামায়াতের আমির। দেশের পরিস্থিতি সাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করে যাবেন বলেও জানান তিনি।
উপজেলার সুকপুকুরিয়া ইউনিয়নের হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, জামায়াত বিএনপির কেউ তাদের উপরে হামলা করতে পারেনা। ইতোপূর্বে এই উপজেলায় জামায়াতের এমপি ছিলেন। সে সময় তারা সম্পূর্ণ নিরাপদে থেকেছেন। তাদের এলাকার আওয়ামীলীগের কয়েকজন দুস্কৃতকারিরা বিএনপির সাথে মিশে গিয়ে তাদের উপরে হামলা করার আশঙ্কা করছেন তারা।
চৌগাছা পৌর সভার সাবেক প্যানেল মেয়র জামায়াত নেতা মাষ্টার কামাল আহমেদ, বলেন, এই এ উপজেলা ও পৌর এলাকায় বসবাসরত কোনো সংখ্যালঘুর বাড়িঘর, উপাসানলয় কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এমনকি যারা বিরোধী মতে থেকে এতদিন নির্যাতন নিপীড়ন করেছে তাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেন একটি ঢিলও না পড়ে। তাদের সব কিছু পাহারা দেয়ার দায়িত্ব এখন আমাদের। আশা করি সে দায়িত্ব পালনে সকলেই সহযোগিতা করবেন।
কিউএনবি/আয়শা/০৭ অগাস্ট ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:৫৪