বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার নুরপুর রুটি আব্দুল হক ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য পদে নির্বাচনে ভোটার তালিকা করতে ভুল করেন প্রধান শিক্ষক। আর এ কারণে খেসারত দিতে হচ্ছে ভোটে জয়ী হওয়া চার প্রার্থীকে! প্রধান শিক্ষকের ওই ভুলের কারণে ইতিমধ্যেই পুনরায় নির্বাচন করার মতামত দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। নির্বাচন হওয়ার ১৫দিন পর ৩১ জুলাই ইউএনও গাজালা পারভীন রুহি এ মতামত দেন। এ অবস্থায় জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এর আগে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দু’দিন পর ১৮ জুলাই ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম না থাকার বিষয়ে অভিযোগ দেন পাঁচজন অভিভাবক। অভিভাবকদের দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, দশম শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ভোটার তালিকায় অন্তভুক্ত করা হয়নি। অভিযোগের আলোকে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে পুনরায় নির্বাচনের মতামত দেওয়া হয় বলে ইউএনও গাজালা পারভীন রুহি তাঁর দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
তবে নির্বাচিত সদস্যরা বলছেন, একটি পক্ষ নিজেদের পছন্দমতো সভাপতি বসাতে পারবেন না বুঝতে পেরে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। ভোটার তালিকা প্রকাশের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ নিয়ে আপত্তি না তুলে ফলাফলের পর অভিযোগ করাটা সম্পূর্ণই উদ্দেশ্যমূলক। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ এর পিছনে কলকাঠি নাড়ছেন বলে তারা অভিযোগ করেন। ওই ব্যক্তি জামায়াত-বিএনপি’র একজনকে বসাতে চাচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে ৩১ জুলাই জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত দিয়েছেন নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যরা। এর আগে গত ১৬ জুলাই ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচজনের মধ্যে চারজন সদস্য পদে জয়লাভ করেন। ১৮ জুলাই দশম শ্রেণির পাঁচ শিক্ষার্থীর অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর করা এক দরখাস্তে অভিযোগ করেন যে, তারা ভোট দিতে গিয়ে দেখেন যে ভোটার তালিকায় নাম নেই।
ইউএনও গাজালা পারভীন রুহি ৩১ জুলাই নির্বাচনের রিটানিং অফিসার তথা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেওয়া এক চিঠিতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচন করার বিষয়ে মতামত দেন। সেখানে বলা হয়, ৬ষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের খসড়া তালিকা করে শুনানো হয় এবং নোটিশ বোর্ডে পাঁচদিন টানানো হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের কাছে এ বিষয়ে তখন কোনো আপত্তি আসেনি। সেখানে আরো উল্লেখ করা হয়, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৪ জন। প্রকৃত অভিভাবক ভোটার ৬০ জন। কিন্তু তাদেরকে ভুলবশত তালিকাভুক্ত করা হয়নি বলে প্রধান শিক্ষক তদন্তকালে স্বীকার করেন।
প্রধান শিক্ষক মো. মনির হোসেন ভুঞা নিজের ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ’ভোটার তালিকা করতে গিয়ে ভুল একটা হয়ে গেছে। ভুল তো হতেই পারে। আসলে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা প্রার্থী হতে পারবেন না বলে উল্লেখ আছে। কিন্তু ভুলে তাদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ অবস্থায় আমি নির্বাচিতদেরকে ডেকে বলেছি যে আপাতত এডহক কমিটি করা হোক।
কিউএনবি/আয়শা/০২ অগাস্ট ২০২৪,/রাত ১১:২৫