এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় মওসুমের প্রায় শেষের দিকে কাঁঠালের ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষীরা। মওসুমের শেষ দিক হলেও হাট-বাজারে এখনও ব্যাপকহারে আসছে জাতীয় ফল কাঁঠাল। মৌসুমের অন্যতম এই ফলের কদর যেন হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্নজেলার বড় বড় পাইকারী ব্যবসায়ীদের আগমন ঘটছে চোখে পড়ার মত। তারা মৌসুমের শেষের দিকে বিভিন্ন জাতেরমিষ্টি কাঁঠাল সংগ্রহের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। আশানুরূপ দাম পেয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় দেখা দিয়েছে চাঙ্গা ভাব। আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁয়ারা, ড্রাগনসহ সকল ধরনের ফলে সংগ্রহ সময় প্রায় শেষের দিকে যেকারণে গ্রীস্মকালিন সকল ফলের দাম এখন অনেটা বেড়ে গেছে।যশোরের চৌগাছা উপজেলার কৃষকরা বর্তমান সময়ে ফল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। উপজেলার হাট বাজার গুলোতে এখন চলছে রসালো ও মজাদার ফল কাঁঠালের জমজমাট কেনা-বেঁচা। উপজেলার আন্দুলিয়া, পুড়াপাড়া, খড়িঞ্চা, পাশাপোল. ধুলিয়ানী, পাতিবিলা ও হাকিমপুরসহ বিভিন্ন ছোট ছোট হাটে বেশ আগে ভাগেই দেখা মিলছে জাতীয় ফল কাঁঠালের। স্থানীয় ছোট পাইকারিরা ওই সকলহাট থেকে কাঁঠাল কিনে বেশী দামে বিক্রির জন্য চৌগাছা বাজারে নিয়ে আসেন। চৌগাছার প্রধান হাটে এখন ব্যাপক ভাবে কাঁঠালের সমরোহ ঘটছে। মওসুমের শেষ ভাগে দাম ভালো থাকায় বিজয় খুশি মৌসুমী ব্যবসায়ী ও কাঁঠাল চাষিরা ।চৌগাছার প্রধান কাঁঠালের হাটে বেলে মাঠে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর সরবরাহ বেশ ভালো। যেসব চাষি ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গ্রাম হতে কাঁঠাল সংগ্রহ করে হাটে এসেছেন তারা বাইরের ব্যাপারীর সাথে দরদাম নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে ভালো দামে কাঁঠাল বিক্রি করে হাঁসিমুখে বাড়ি ফিরছেন। প্রধান পাইকারি বাজারে কাঁঠালের ভালো দাম থাকায় বাজারের বিভিন্ন খুচরো দোকানে আরো চড়া দামে কাঁঠাল বিক্রি হতে দেখা গেছে।প্রধান পাইকারি বাজারে কাঁঠাল বিক্রি করতে আসা উপজেলার বন্দুলীতলা গ্রামের কাঁঠাল চাষি সিরাজুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরে কাঁঠালের চাহিদা বেশ ভালো। গত কয়েক হাট ঘুরে ঘুরে মঙ্গলবার হাটে কাঁঠাল নিয়ে এসেছি। আশানুরুপ দামে কাঁঠাল বিক্রি করতে পেরেছি । তিনি আরো বলেন শেষ সময়ে বড় বড় পাইকারী ব্যাপারী ও ক্রেতার সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাশের মহেশপুর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের চাষি রেজাউল ইসলাম বলেন, শেষ মুহূর্তে কাঁঠালের দাম ভালো, প্রথমদিকে দাম কিছুটা কম ছিল। বর্তমানে কাঁঠালেরদামে আমরা খুশি।মৌসুমী ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান বলেন, প্রতি বছর আমরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম হতে কাঁঠাল কিনে বাজারে বিক্রি করি। এ বছরও বেশ আগেই ব্যবসা শুরু করেছি তবে বর্তমানে কাঁঠালের দাম অনেকটা ভালো । গ্রামে কাঁঠাল চাষিরাও দাম পেয়ে বেশ খুশি বলে জানান তিনি।
কাঁঠাল চাষী হাজরাখানা গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনা ভালো হলে কাঁঠাল চাষীরা আরো ভালো দাম পেতো কিন্তু মধ্য স্বত্বভোগীরা চাষীদের ভাগের টাকা লুটে নিয়ে যাচ্ছে। বাজারের একটি সুত্রে জানাযায়, প্রতিবছর যশোরসহ সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, ঝালকাটি, পিরোজপুর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা হতে পাইকারী ব্যাপারিরা এসে শেষ সময়ের কাঁঠাল কেনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।বরিশাল জেলা থেকে কাঁঠাল কিনতে আসা পাইকারী ব্যবসায়ী আব্দুল হক জানান, কিছু দিন পূর্বে কাঁঠালের চাহিদা কম ছিল বর্তমানে কাঁঠালের চাহিদা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছ। তিনি বলেন,যদি একটানা বৃষ্টি হতো তাহলে কাঁঠালের চাহিদা আরো বেড়ে যেত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, এ উপজেলার মাটি কাঁঠার চাষের জন্য বেশ উপযোগী। কৃষিবিভাগ গবেশনা করে বারোমাসে কাঁঠালের জাতের চারা তৈরী করেছে। যেটাকে স্থানীয় কলমের চারা বলা হয়। এ জাতের চারা লাগিয়ে দেড় বছরে ফল পাওয়া যায়। অনেক কৃষক দেশের জাতীয় ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।
কিউএনবি/অনিমা/১৬ জুলাই ২০২৪,/দুপুর ১:৪১