রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন

নিজেকে জান্নাতি দাবি করার সুযোগ নেই

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪
  • ৫৪ Time View

ডেস্ক নিউজ : একজন পীর সাহেবের দিকে ইঙ্গিত করে অনেকে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন। কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে আমি কথা বলি না এবং এ জাতীয় কথা শুনতেও সম্মত নই। কারণ, একেই গিবত বলে, যা শরিয়তে মহাপাপ। তবে ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে ইসলাহের উদ্দেশে বিষয়বস্তুর ওপর কথা বলা যায়। 

আপনাদের অবগতির জন্য সংক্ষিপ্তভাবে বলছি, বুজুর্গির মূল উপাদান দুটি, যার মধ্যে এই দুটি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে, সে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে পারে। তবে চূড়ান্ত কোনো কিছু বলার অধিকার আমাদের নেই। কারণ এটা নির্ভর করে ইমানি মৃত্যুর ওপর। এ সম্পর্কে একমাত্র আল্লাহপাকই জানেন, অন্য কারও জানার উপায় নেই। 

যদি কেউ নিজেকে ওলি অথবা জান্নাতি বলে দাবি করে, তাহলে এরূপ দাবি অনধিকার চর্চা বলে গণ্য হবে এবং এটা ওলি না হওয়ারই আলামত। বুজুর্গির প্রধান উপাদান হচ্ছে ইখলাস। আর ইখলাসের অর্থ হচ্ছে কেবল আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির জন্য আমল করা, আল্লাহকে খুশি করার জন্য আমল করা। লোক দেখানো, তাদের কাছে সম্মানিত হওয়ার জন্য অথবা অন্য কোনো বস্তুস্বার্থ উদ্ধারের জন্য আমল না করা। অন্যথায় আমলের গুরুত্ব থাকে না এবং আল্লাহর কাছে তা কবুল হয় না। 

ইখলাসের আলামত দুইটি। ক. নিজকে মুখলিস মনে না করা, ইখলাসের দাবি না করা। যদি নিজের আমলে নিজের ইখলাসের দাবি হয়, ইখলাস অনুভূত হয়, তাহলে এই দাবি এবং অনুভবই ইখলাস না থাকার প্রমাণ। যেমন : বিশিষ্ট সুফি আল্লামা সুসি বলেন : নিজের আমলে ইখলাস অনুভূত না হওয়াই ইখলাসের প্রমাণ; আর ইখলাস অনুভূত হওয়া ইখলাস না হওয়ার প্রমাণ। 

খ. আমল কবুল হলো কিনা- এ নিয়ে অস্থিরতা উপলব্ধি করা, আর কবুল হওয়ার জন্য দীনতা-হীনতার সঙ্গে আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করা। ইমাম গাজালি বলেন- সমস্ত মানুষ ধ্বংসের পথে, তবে যারা আলেম; সমস্ত আলেমগণ ধ্বংসের পথে-তবে যারা আমল করে; আমলকারীগণ সবাই ধ্বংসের পথে, তবে যারা মুখলিস। আর মুখলিস হচ্ছে তারা, যারা তাদের আমল আল্লাহর দরবারে গৃহীত হলো কিনা-এ ব্যাপারে ভীত-সন্ত্রস্ত। 

উপরোক্ত আলোচনায় এ কথা সুস্পষ্ট যে, ইখলাসের প্রধান উপাদান হচ্ছে দুটি। যথা : ইখলাসের দাবিদার না হওয়া এবং নিজের আমলের কবুলের ব্যাপারে সন্দিহান থাকা। 

রসুলেপাক সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ জন্যই ইরশাদ করেছেন, ‘ইমান আল্লাহর ভয় এবং তার করুণার প্রতি আশা-ভরসার মধ্যস্থলে অবস্থিত। হজরত ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু অনেক বড় সাহাবি ছিলেন। তিনি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা এবং সেই সঙ্গে রসুলেপাকের শ্বশুর ও জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবি। 

তিনি বলতেন, আল্লাহপাক যদি হাশরের ময়দানে একজন ব্যতীত সবাইকে জাহান্নামে যেতে বলেন, তবে আমার আশা হয় যে, ওই একজন ভাগ্যবান ব্যক্তি হয়তো আমি হতে পারি। আর যদি তিনি বলেন, একজন ছাড়া বাকি সব জান্নাতে যাও, তাহলে আমার আশঙ্কা হয় যে, ওই জাহান্নামি ব্যক্তি আমি হতে পারি। এখান থেকে বুঝা যায় যে, ইখলাস কী জিনিস এবং ইখলাস ও নিজের বুজুর্গির দাবি কতটুকু ন্যায়সঙ্গত।

লেখক : আমির, আল হাইআতুল উলয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ

কিউএনবি/অনিমা/০৯ জুন ২০২৪,/রাত ১১:৪২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit