শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন

খাদের কিনারা থেকে বাংলাদেশকে টেনে তোলা মাহমুদউল্লাহর সেই ৫ ইনিংস

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪
  • ৫৭ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক : শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে দাসুন শানাকার করা ১৯ তম ওভারের প্রথম বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যদি ওই ছক্কাটি না মারতেন, তাহলে কি ম্যাচ জিততে পারত বাংলাদেশ? ওই রকম কঠিন চাপের পরিস্থিতিতে ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য ছিল বাকি ব্যাটারদের? বাস্তবিক অর্থে যার উত্তর এক কথায় হবে ‘না’। এমন কত ম্যাচে যে বাংলাদেশের ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন, বাংলাদেশকে ম্যাচ জিতিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ; তার সঠিক হিসেব খুঁজে বের করা কঠিন। 

অথচ, বরাবরই আড়ালেই থেকে গিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ দলের পাঁচ পাণ্ডবের মধ্যে সবচেয়ে কম আলোচনা তাকে নিয়ে। দল থেকে বাদ পড়লে নীরবে কঠোর পরিশ্রম করে আবার ফিরে এসেছেন। এই যেমন ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় আরও একবার করে দেখালেন। ২০২২ বিশ্বকাপে জায়গা না পাওয়া মাহমুদউল্লাই এখন দলের অন্যতম আস্থার নাম। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমন বহু ম্যাচে দলের ত্রাতা হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। দলকে টেনে তুলেছেন খাদের কিনারা থেকে। বলতে গেলে শেষদিকে টেলেন্ডারদের নিয়ে একা হাতে লড়াই করে ম্যাচটা বের করে এনেছেন মাহমুদউল্লাহ। এমন ম্যাচের সংখ্যাটা নেহায়েত কম নয়। সেই ম্যাচগুলো থেকে দেখে নেওয়া যাক মাহমুদউল্লার ৫ টি ইনিংস।

প্রতিপক্ষ, ইংল্যান্ড; মাহমুদউল্লাহ ১০৩ (১৩৮)
২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়াটার ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। যার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল মাহমুদউল্লাহর। কোয়ার্টার নিশ্চিত করার ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। যার সুবাদে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ১৩৮ বলে ১০৩ রানের ইনিংস খেলে হয়েছিলেন ম্যাচসেরা। সেই বিশ্বকাপে পরের ম্যাচেও সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরির রেকর্ড একমাত্র মাহমুদউল্লাহর। সেমিফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচেও ভারতের বিপক্ষে জ্বলে উঠতে শুরু করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। যদিও শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউট হতে হয়েছিল তাকে।

প্রতিপক্ষ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ; মাহমুদউল্লাহ ৫৬*(৭৮)
মাহমুদউল্লাহ মূলত, ৬-৭ নম্বরে ব্যাট করেন। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই খুব বেশি রান করার সুযোগ নেই তার। তবে দলের প্রয়োজনে কখনো কখনো তার ১৫-২০ রানের ইনিংসটির গুরুত্ব হয়ে উঠে অনেক। যা ম্যাচ গড়ে দিতে ভূমিকা রাখে। মাহমুদউল্লাহও সেই কাজটিই করে থাকেন। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পথে মাহমুদউল্লাহ ছিলেন দলের মূল কাণ্ডারি। ওই সিরিজে ১৫৯ রান করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশের ১৩৬ রানে অলআউট হওয়ার ম্যাচে বাংলাদেশকে অপরাজিত ৫৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে টেনে তুলেছিলেন। মান বাঁচিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। পরের ম্যাচে ব্যাট হাতে ৪৮ রান ও বল হাতে ২ উইকেট তুলে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন সিরিজ।

প্রতিপক্ষ, নিউজিল্যান্ড; মাহমুদউল্লাহ ১০২* (১০৭)
এরপর ২০১৫ বিশ্বকাপে জোড়া সেঞ্চুরির পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে নিয়ে যাওয়া সবখানেই বাংলাদেশের অন্যতম নায়ক ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সেবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ভয়াবহ বিপদে পড়ে গিয়েছিল দল। তখন সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে জেতান মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশকে তুলেন সেমিফাইনালে। 

প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, মাহমুদউল্লাহ ৪৩*(১৮) ও দক্ষিণ আফ্রিকা ১১১ (১১১)
আর ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে ইসুরু উদানার শেষ ২ বলে যখন ৬ রান লাগে বাংলাদেশের, তখন মাহমুদউল্লার ছয়। যা এখনও চোখে লেগে আছে ক্রিকেট প্রেমীদের। সবশেষ ভারত বিশ্বকাপেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশি ব্যাটারদের অসহায় আত্মসমর্পণের ম্যাচে একা হাতে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ম্যাচ জেতাতে না পারলেও তার দৃঢ়তা ও সেঞ্চুরি পেরোনো ইনিংসেই মান বেঁচেছিল বাংলাদেশের।

প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা; মাহমুদউল্লাহ ১৬* (১৩)
আর সবশেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আরও একবার বাংলাদেশের জয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ১৩ বলে অপরাজিত ১৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছেন তিনি। স্কোরলাইনের দিকে তাকালে এই ইনিংসটিকে সাদামাটা ভাবায় যায়, তবে যারা ম্যাচটি দেখেছে, ওই সময়ের পরিস্থিতি অনুভব করেছে, কাদের নিয়ে লড়াই করে ম্যাচটা জিতিয়েছেন তিনি তা দেখলেই পরিষ্কার হবে মাহমুদউল্লাহর বীরত্ব।

কিউএনবি/অনিমা/০৯ জুন ২০২৪,/দুপুর ১:২৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

November 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit