ডেস্ক নিউজ : বৃহস্পতিবার (৬ জুন) চণ্ডীগড় এয়ারপোর্টে সিআইএসএফ কনস্টেবল কুলবিন্দর কাউরের হাতে চড় খান সদ্যনির্বাচিত বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউত। কৃষক আন্দোলনের সময় বেফাঁস মন্তব্যের জেরেই এই চড় বলে জানান কুলবিন্দর। এ ঘটনায় ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ পাশে দাঁড়িয়েছেন কঙ্গনার, কেউ আবার সমর্থন করছেন ওই নারী নিরাপত্তাকর্মীকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চড়কাণ্ডের শিকার কঙ্গনার ঘটনা প্রসঙ্গে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নীরব থাকায় চটেছেন কঙ্গনা। তবে একে একে এবার নিজেদের মন্তব্য প্রকাশ করছেন বলিউড সেলিব্রেটিরা।
সোশ্যাল মিডিয়া এক্স হ্যান্ডলে (টুইটারে) দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবানা আজমী এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে লিখেছেন, “কঙ্গনা রানাউতের প্রতি আমার কোনো ভালোবাসা নেই। কিন্তু আমি নিজেকে ‘থাপ্পড়’ উদ্যাপনের এই কোরাসে অংশ নিতে পারছি না। যদি নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের হাতে আইন নিতে শুরু করে, তাহলে আমরা কেউই নিরাপদ থাকতে পারব না।”
অভিনেত্রী শাবানা আজমী। ছবি: সংগৃহীত
অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘পুরুষ নির্বিশেষে শারীরিক হিংসাকে সমর্থন করেন না তিনি। ঋতাভরী বলেন, নারী-পুরুষ যে-ই হোন, শারীরিকভাবে হিংসা ছড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোকে আমি সমর্থন করি না। সে যেমন প্রতিবাদই হোক না কেন?’
অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত
ঋতাভরী আরও বলেন, ‘মারধরে আমি বিশ্বাস করি না। দেশে আইনকানুন এখনও আছে বলেই আমি বিশ্বাস করি।’
এদিকে মনো-সমাজকর্মী পিয়া চক্রবর্তী বলেন, ‘চড় মারার পদক্ষেপকে নিন্দা করা যায়। কিন্তু এর পেছনে যে প্রেক্ষাপট, সেটাও বোঝা দরকার। শারীরিক হিংসা সমর্থন না করলেও আমার ওর (নিরাপত্তাকর্মী কুলবিন্দর কউর) জন্য সহমর্মিতা রয়েছে।’
পরিচালক সুদেষ্ণা রায় বলেন, ‘কঙ্গনা রানাউত যেভাবে সবাইকে তাচ্ছিল্য করেন এবং নীচু চোখে দেখেন, তার জন্য ওই নারীর (কুলবিন্দর) এটা মনে হতেই পারে। তবে আমি মনে করি তার চড় দেয়াটা ঠিক হয়নি। কারণ, তিনি তার কাজে কর্তব্যরত ছিলেন। এ অবস্থায় তার (কুলবিন্দর) কাউকে চড় দেয়াটা সঠিক নয়।’
পরিচালক সুদেষ্ণা রায়ের সুরে সুর মিলিয়েছেন অভিনেত্রী বিদীপ্তা চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, ‘কর্তব্যরত অবস্থায় একজন কর্মী কারো গায়ে এভাবে হাত তুলতে পারেন না। এটা সমর্থনযোগ্য নয়।’
এ ঘটনায় কোনো অনুতাপ নেই নিরাপত্তাকর্মী কুলবিন্দর। শুক্রবার (৭ জুন) নিজের এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘আমার নিজের চাকরির চিন্তা নেই। মায়ের সম্মানের জন্য এমন হাজারও চাকরি হারাতে পারি।’
কুলবিন্দর এমন মন্তব্যে সংগীতশিল্পী বিশাল দাদলানি তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। বলেছেন, ওই কনস্টেবল যদি চাকরি হারান তাহলে তাকে চাকরি দেবেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি আরও লেখেন, ‘আমি কখনও হিংসাকে সমর্থন করি না। তবে আমি এই সিআইএসএফ কর্মীর রাগের কারণটা বুঝতে পারছি।’
সংগীতশিল্পী বিশাল দাদলানি। ছবি: সংগৃহীত
প্রসঙ্গত, চণ্ডীগড় বিমানবন্দরের কর্মরত অবস্থায় সদ্য নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউতকে চড় মারায় নারী নিরাপত্তারক্ষী কুলবিন্দর কাউরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাসপেন্ডের পর করা হয়েছে গ্রেফতার। তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের হয়েছে। ঘটনা তদন্তে এরইমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে সিআইএসএফ কর্তৃপক্ষ।