রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
পরিবারে সুখ ফেরাতে বিদেশে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শার্শার রনি শার্শায় গৃহবধূকে গনধর্ষণের অভিযোগ কোম্পানীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণের মৃত্যু মনিরামপুর প্রেসক্লাবের দাতা সদস্যের বোনের ইন্তিকাল মনিরামপুরে রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা আটোয়ারীতে কিন্ডারগার্টেনের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সনদপত্র বিতরণ পাঁচদোনা টু ডাঙ্গা চারলেন সড়ক অপরাধীদের অভয়ারণ্যে  চৌগাছায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত দৌলতপুরে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিনের দাফন সম্পন্ন চৌগাছায় ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে বিএনপি নেতাকে পিটিয়েছে প্রতিবেশী পুলিশ সদস্য

হাদিস শরিফে কুরআন মাজিদ সম্পর্কে কি বলে?

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১০৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, কুরআন মুহাম্মদ (সা.) এর উপর নাজিল হয়েছিল। তার চল্লিশ বছর বয়সে, ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে রমজান মাসের এক রাতে এটি শুরু হয়েছিল। ফেরেশতা জিব্রাইলের মাধ্যমে প্রাপ্ত আয়াত বা আল্লাহ্‌র বানী মানবজাতির নিকট পৌঁছে দেয়া ও লিপিবদ্ধ করার দায়িত্ব তিনি পেয়েছিলেন।

মহাগ্রন্থ আল কুরআন ও মহানবি (সা:) এর অমীয় বাণি আল হাদীস ইসলামী জীবন বিধানের মূল ভিত্তি। কুরআন যেখানে জীবন ব্যবস্থার মৌলনীতি পেশ করে, হাদীস সেখানে এই মৌলনীতির বিস্তারিত বিশ্লেষণ এবং তা বাস্তবায়নের কার্যকর পন্থা বলে দেয়।

কুরআন এবং হাদীস অবতরণের উৎস, পালনের আবশ্যকতা এবং ইসলামী আকিদার মৌল উৎস হিসেবে একটি অন্যটির সম্পূরক। যেমনিভাবে নবী করীম (সা:) কুরআন এবং হাদীসকে আলাদা না করে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং সম্প্রীতির রক্ষাকবজ হিসেবে এই দুইটিকে তাঁর সর্বশেষ ভাষণে এভাবে উল্লেখ করেছেন : “আমি তোমাদের নিকট দুইটি জিনিস রেখে গেলাম।

তোমরা যতক্ষণ এই দুটি জিনিস দৃঢ়ভাবে ধারণ করে থাকবে তোমরা কখনো গোমরাহ হবেনা। তাহলো, আল্লাহর কিতাব (আল কুরআন মাজিদ) ও রাসূলের সুন্নাত (আল হাদিস)। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক ও মিশকাত- হা.নং- ১৮৬) 

কুরআন ও হাদীসের পরিচয়: আল্লাহতায়ালা রাসুলুল্লাহ (স:) এর নিকট দুই ধরনের ওহী পাঠাতেন। যেমন:
এক) ওহি মাতলোবা প্রকাশ্য ও পঠিতব্য ঐশীবাণী; তা হলো, কুরআন মাজিদ। যার প্রতিটি অক্ষর, শব্দ ও বাক্য এমনকি ভাব-ভাষা সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত। কুরআনের ওহী পুরোটাই আল্লাহতায়ালা জিবরাঈল (আ:) এর মাধ্যমে পাঠিয়েছেন।

তিনি তা নবী করীম (সা:) কে শুনিয়েছেন। নবী করীম (সা:) তা মুখস্থ করেছেন। জিবরাঈল (আ:) এর কাছ থেকে শুনবার পর তিনি তা সাহাবীদের শোনাতেন। সাহাবাগণও সাথে সাথে মুখস্থ করে নিতেন এবং লিপিবদ্ধ করে নিতেন।

এ প্রকার ওহীর একটি অক্ষরও পরিবর্তন করার ক্ষমতা বা অধিকার নবী করীম (সা:) এর ছিলনা। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, “যদি এ নবী নিজে কোন কথা বানিয়ে আমার কথা বলে চালিয়ে দিতো। তাহলে আমি তার ডান হাত ধরে ফেলতাম এবং তার ঘাড়ের শিরা কেটে দিতাম।

তোমাদের কেউই (আমাকে) এ কাজ থেকে বিরত রাখতে পারতে না।” (সূরা হাক্কাহ- ৬৯ : ৪৪-৪৭) বর্ণনার দৃষ্টিকোণ থেকে আল-কুরআন সামগ্রিককভাবে এবং প্রতিটি আয়াত পৃথক পৃথক ভাবে অকাট্য ওসন্দেহাতীত। এ ওহী সালাতে তিলাওয়াত করতে হয়। দুই) ওহি গইরে মাতলোবা অপ্রকাশ্য ও অপঠিতব্য ঐশীবাণী; তা হলো, হাদীস শরীফ। হাদীসের ওহী শুধু কেবল জিবরাঈলের মাধ্যমে আসেনি।

বরং সেই সাথে স্বপ্ন, ইলকা, ইলহাম, ও মনের মধ্যে অনুভূতি সৃষ্টির মাধ্যমেও রাসুলুল্লাহ (সা:) লাভ করতেন। তিনি শুধু ভাব লাভ করতেন। আর এ ভাবটিকে তিনি তার নিজের ভাষায় ব্যক্ত করতেন। এইরূপ ওহীকে ওহি গইরে মাতলোবা অপ্রকাশ্য ও অপঠিতব্য ঐশীবাণী বলা হয়।

কেননা রাসুলুল্লাহ (সা:) যাহা কিছু বলেন তাহা ওহী ভিন্ন আর কিছুই নয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন: “তিনি (মুহাম্মদ সা:) নিজের ইচ্ছামতো কোনো কথা বলেননা। তিনি যা কিছু বলেন সবই আল্লাহর ওহী। (সূরা নাজম- ৫৩ : ৩-৪)

কুরআন ও হাদীসের মাঝে মৌলিক সম্পর্ক: ৩। ইসলামী জ্ঞান বিজ্ঞানে  কুরআন যেন হৃৎপিন্ড আর হাদীস এই হৃৎপিন্ডের সাথে সংযুক্ত ধমনী। কুরআন যেন ইসলামের জীবন প্রাসাদের পরিকল্পিত চিত্র তথা ব্লু-প্রিন্ট। সে অনুযায়ী নির্মিত প্রাসাদই হলো হাদীস। কুরআন যে ভাবে ইসলামী জীবন বিধানের মূলনীতি তুলে ধরে তেমনিভাবে হাদীস তার নির্ভুল ব্যাখ্যা দান করে। একারণে ইসলামী জীবন বিধানে কুরআন মজিদের পরেই হাদীসের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

আল্লাহর ইবাদাত ও আনুগত্য করা যেমন রাসুল (সা:) এর আনুগত্য ও বাস্তব অনুসরণ ব্যতীত সম্ভব নয়, অনুরূপভাবে হাদীসকে বাদ দিয়ে কুরআন অনুযায়ী আমল করাও সম্ভব নয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন :“ বলুন হে নবী, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস তবে আমাকে অনুসরণ করে চলো। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন, তোমাদের গুনাহ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ গুনাহ মার্জনাকারী ও দয়াশীল।” (সূরা আলে ইমরান-৩ : ৩১)

কুরআন এবং হাদীসের পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাপারে কুরআনিক দলিল: ইসলামী শরীয়াতের মূল উৎস আল-কুরআন। আল কুরআনের পরই হাদীসের স্থান। হাদীস ইসলামী শরীয়াতের  দ্বিতীয় উৎস ও এক অমূল্য সম্পদ। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন: “আমি রাসুল পাঠিয়েছি একমাত্র এই উদ্দেশ্যে যে, আল্লাহর অনুমতির মাধ্যমে তাকে অনুসরণ করা হবে।” (সূরা নিসা- ৪ : ৬৪)

“ বলুন হে নবী, আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো রাসুলের, যদি তা না করো তবে জেনে রাখো আল্লাহ অবিশ্বাসীদের ভালবাসেন না।” (সূরা আলে এমরান -৩ : ৩২)

“যখন আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল কোন বিষয়ে ফায়সালা করে দেন, তখন সেই বিষয়ে কোন মুমিন পুরুষ বা মুমিনাহ নারীর নিজস্ব মতের কোনো এখতিয়ার থাকেনা। আর যে আল্লাহও তাঁর রাসুলের ফায়সালা অমান্য করবে সে সুপষ্টভাবে বিপথগামী হবে।” (আল আহ্যাব-৩৩ : ৩৬)।

“আল্লাহউম্মী লোকদের প্রতি তাদের মধ্য হতে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন। রাসূল আল্লাহর আয়াতসমূহ তাদের সম্মুখে তিলাওয়াত করে, তাদেরকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে তাদেরকে কিতাব ও হিকমাহ শিক্ষা দেন, যদিও তারা ইহার ইতিপুর্বে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত ছিল।” (সুরা জুমুআহ- ৬২ : ২)

“হে মুমিনগণ! তোমরা আনুগত্য কর মহান আল্লাহর, আনুগত্য কর তাঁর রাসূলের এবং তোমাদের (ধর্মীয় ও সামাজিক) নেতৃত্বের আনুগত্য কর। যদি কোন বিষয়ে তোমাদের মাঝে মতবিরোধ দেখা দেয় তাহলে তোমরা মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের দিকে ফিরে আস। যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালে ঈমান এনে থাক। ইহাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং এর পরিনতি খুবই উত্তম।” (সূরা আল ইমরান-৪ : ৫৯ )

“রাসুলুল্লাহ (সা:) এর আদেশের যারা বিরোধিতা করে তাদের ভয় করা উচিৎ যে, তাদের উপর কোন বিপদ মুছিবত আসতে পারে অথবা কোন পীড়াদায়ক আযাবে তারা নিক্ষিপ্ত হতে পারে।” (সূরা আন-নুর, আয়াত-২৪ : ৬৩) এ বিষয়ে  কুরআনের আরো অসংখ্য আয়াত বর্ণিত হয়েছে, যা থেকে  কুরআন মান্য করার সাথে হাদীসকেও মান্য করার নির্দেশনা বর্ণিত হয়েছে।

কুরআন এবং হাদীসের পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাপারে হাদীস এর দলিল:
ইসলামী শরীয়াতের মূল ভিত্তি আল-কুরআন। হাদীস ইসলামী শরীয়াতের এক অমূল্য সম্পদ এবং দ্বিতীয় ভিত্তি।

আল কুরআনের পরই হাদীসের স্থান। কুরআন এবং হাদীসের মূল উৎসই হলো আল্লাহতায়ালা। তাই কুরআন এবং হাদীসের পারস্পরিক সম্পর্ক একশত ভাগ নিশ্চিত। এ প্রসঙ্গে নিচে কিছু হাদীস উপস্থাপন করা হলো:

মিকদাম ইবনে মা’দি কারাব (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “সাবধান আমাকে কুরআন দেয়া হয়েছে এবং সেই সঙ্গে উহার মত আরো একটি জিনিস দেয়া হয়েছে।

সাবধান সম্ভবত: কোন সুখী ব্যক্তি তাহার আসনে উপবিষ্ট হয়ে বলতে শুরু করবে যে, তোমরা কেবল এই কুরআনকেই গ্রহণ করো, ইহাতে যা হালাল দেখবে তাকেই হালাল এবং যাকে হারাম দেখবে তাকেই হারাম মনে করবে। অথচ প্রকৃত ব্যাপার এই যে, রাসুলুল্লাহ (সা:) আল্লাহর ঘোষিত হারামের মতই অনেক কিছু হারাম করেছেন।” (ইবনে মাযাহ- হা. নং ১২, মিশকাত- হা. নং ১৬৩)।

মালিক ইবনে আনাস (রা:) থেকে মুরসাল হিসাবে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “আমি তোমাদের নিকট দুইটি জিনিস রেখে গেলাম। তোমরা যতক্ষণ এই দুটি জিনিস দৃঢ়ভাবে ধারন করে থাকবে তোমরা কখনো গোমরাহ হবে না। তাহলো আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাত।” (মুয়াত্তা ইমাম মালিক, মিশকাত) আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, “আমার উম্মতের সকলেই জান্নাতে যাবে, কিন্তু যে অস্বীকার করে সে ব্যতিত।

জিজ্ঞাসা করা হলো কে অস্বীকার করে? রাসুলুল্লাহ (স:) বললেন, যে আমার আনুগত্য করে সে জান্নাতে যাবে আর যে আমার আনুগত্য করে না সেই অস্বীকারকারী।” (বুখারী- হা.নং ৭২৮০)। আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “যে বিষয়ে আমি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি, তা তোমরা গ্রহণ করো, আর যে বিষয়ে আমি তোমাদেরকে নিষেধ করেছি, সে থেকে তোমরা বিরত থাকো।

(ইবনে মাজাহ- ১/১) আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন :  যে ব্যক্তি আমার অনুসরণ করল, সে আল্লাহরই অনুসরণ করল, আর যে ব্যক্তি আমার নাফরমানী করল, সে আল্লাহর নাফরমানী করল।” (ইবনে মাজাহ- ১/৩) এ ভাবে প্রচুর হাদীস বর্ণিত হয়েছে, যা থেকে বোঝা যায়  কুরআন ও হাদীস পারস্পারিক সম্পর্কযুক্ত। শুধু  কুরআন অথবা হাদীস মান্য করা দ্বারা ইসলাম পালন করা সম্ভব নয়।

উভয় বিষয়কে গুরুত্ব সহকারে মানতে হবে। সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, কুরআন ও হাদীস একটি অপরটির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পার্থক্য হলো, একটি প্রত্যক্ষ ওহী অপরটি পরোক্ষ ওহী। যেহেতু দুটিই ওহী, তাই দুটিকেই মূল্যায়ন করা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের ঈমানের দাবী। হাদীসকে বাদ দিয়ে শুধু  কুরআনকে মানা যেমন সম্ভব নয়, তেমনিভাবে একজন মুমিন মুসলমানও তার ঈমানের দাবী পূরণ করতে সক্ষম হবেনা।

তাই কুরআন এবং হাদীসের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কে কোন রকম বৈপরিত্য কোন কালেও ছিল না এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। যেমনিভাবে আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন : “যে রাসুলের আনুগত্য (হাদীসের অনুসরণ) করল সে মূলত আল্লাহর আনুগত্য করল।” (সূরা নিসা-৪/৮৫) মহান অল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে  সকল প্রকার গোমরাহি থেকে মুক্ত রেখে তাঁর বিধান সঠিক ভাবে জেনে তা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।।

মুসলমানদের মতে এটি আল্লাহর বাণী, যা ইসলামের নবি ও রাসুল মুহাম্মাদের উপর আরবি ভাষায় অবতীর্ণ হয়। তাদের মতে এটি একটি মুজিজা বা অলৌকিক গ্রন্থ যা মানব জাতির পথনির্দেশক। মুসলমানদের বিশ্বাস, কুরআনে মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে এবং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।

একদিন নবীজী (স) আমাকে বললেন : আমার সামনে কোরআন তেলাওয়াত করো। আমি বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! আপনার সামনে আমি পড়ব! কোরআন তো আপনার কাছেই নাজিল হয়েছে। তিনি বললেন, আমি তেলাওয়াত শুনতে ভালবাসি। আমি তাঁকে সূরা নিসা পড়ে শোনাতে লাগলাম। আমি যখন পড়ছি—‘মহাবিচার দিবসে যখন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একজন সাক্ষী হাজির করব এবং তোমাকেও সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব, তখন এ পাপীদের অবস্থা কী হবে?’ (সূরা নিসা : ৪১) তখন তিনি বললেন, সুন্দর হয়েছে! থামো! আমি যখন তাঁর দিকে তাকালাম, দেখি তাঁর দুচোখে অশ্রুধারা! – আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা); বোখারী, মুসলিম। 

হাদিসে কুরআন মাজিদ সম্পর্কে কিছু হাদিস বর্ণিত হয়েছে- সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে- 

কোরআন অধ্যয়ন করো। মহাবিচার দিবসে অধ্যয়নকারীর জন্যে কোরআন সুপারিশকারী হিসেবে আবির্ভূত হবে।- আবু উমামা (রা); মুসলিম

নবীজীর (স) চরিত্র ও আচরণ পবিত্র কোরআনের বাস্তব উদাহরণ।- আয়েশা (রা); মুসলিম

যে অন্তরে কোরআনের কোনো জ্ঞান নেই, সেই অন্তর হচ্ছে একটি পরিত্যক্ত (পুঁতিগন্ধময়) ঘর।- আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); তিরমিজী

‘মানুষের মাঝেই রয়েছে আল্লাহর লোক’। সাহাবীরা জানতে চাইলেন—আল্লাহর লোক কারা? নবীজী (স) বললেন, কোরআনকে যারা অন্তরে ধারণ করে (সে অনুসারে জীবন পরিচালনা করে) তারাই আল্লাহর লোক।- আনাস ইবনে মালেক (রা); ইবনে মাজাহ, আহমদ

তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম, যে নিজে কোরআনের জ্ঞানে জ্ঞানী হয়ে অন্যদের সেই শিক্ষায় শিক্ষিত করে।- উসমান ইবনে আফফান (রা); বোখারী, আবু দাউদ

সকল জাহেরী, বাতেনী, সূক্ষ্ম ও অনন্ত জ্ঞানের আকর হচ্ছে কোরআন।- আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা); ইবনে হিব্বান

সবকিছুরই অলংকার আছে। কোরআনের অলংকার হচ্ছে সুন্দর কণ্ঠ।- আনাস ইবনে মালেক (রা), আল বারা ইবনে হিজাম (রা); হাকেম, বায়হাকি, দারিমি

কোরআনে পাঁচ ধরনের আয়াত রয়েছে—১. হালাল (বৈধ)। ২. হারাম (অবৈধ)। ৩. মুহকামাত (সুস্পষ্ট বিধিবিধান)। ৪. মুতাশাবেহাত (রূপক)। ৫. কেসাস (উদাহরণ)। তোমরা হালালকে হালাল মানবে। হারাম থেকে দূরে থাকবে। আল্লাহর সুস্পষ্ট বিধিবিধান মোতাবেক কাজ করবে। মুতাশাবেহাত আয়াতের ওপর বিশ্বাস রাখবে (এ নিয়ে কোনো বিতর্কে যাবে না)। কেসাস বা উদাহরণ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে।- আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

কোরআনের শ্রেষ্ঠ মর্যাদাসম্পন্ন সূরা হচ্ছে সূরা ফাতেহা।- আবু সাঈদ রাফাই (রা); বোখারী

হেদায়েতের জন্যে যে ব্যক্তি কোরআনকে যথেষ্ট মনে করবে না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।- আবু হুরায়রা (রা); বোখারী

একজন মুসলমান—যে নিয়মিত কোরআন চর্চা করে, তার উপমা হচ্ছে কমলালেবু। কমলালেবুর রঙ সুন্দর, ঘ্রাণ মনোরম এবং খেতে সুস্বাদু। আর একজন মুসলমান—যে কোরআন অধ্যয়ন করেছে কিন্তু নিয়মিত চর্চা করে না, তার উপমা হচ্ছে খোরমা। খোরমা শুষ্ক ঘ্রাণহীন কিন্তু মিষ্টি। কোরআন পাঠকারী একজন মুনাফেকের উপমা হচ্ছে এমন ফল, যার ঘ্রাণ আছে কিন্তু স্বাদ একেবারে তেতো। আর কোরআন পাঠ করে না এমন মুনাফেকের উপমা হচ্ছে এমন ফল, যার কোনো ঘ্রাণ নেই, আবার তেতোও।- আবু মুসা আশয়ারী (রা); বোখারী, মুসলিম

কোরআন অধ্যয়নের জন্যে, কোরআনের জ্ঞানে জ্ঞানী হওয়ার জন্যে মানুষ যখন কোথাও সমবেত হয়, কিতাবের জ্ঞান নিয়ে আলোচনা করে, তাদের ওপর তখন আল্লাহর বিরামহীন রহমত নাজিল হয়। প্রশান্তি তাদের চারপাশ ছেয়ে ফেলে। ফেরেশতারা তাদের ওপর বিস্তার করে রহমতের ছায়া। আর আল্লাহ তাঁকে বেষ্টনকারী ফেরেশতাদের কাছে এই সমাবেশের কথা উল্লেখ করেন।- আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম

যে ব্যক্তি কোরআনের একটি হরফ অধ্যয়ন করবে, সে একটি নেকি পাবে। এই একটি নেকি অন্য ভালো কাজের ১০টি নেকির সমান।- আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা); তিরমিজী

কোরআনের কোনো বিষয় নিয়ে বিতর্ক-বাদ-প্রতিবাদে লিপ্ত হওয়া কুফরী।- আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা), আবু হুরায়রা (রা); আহমদ, আবু দাউদ, বায়হাকি 

যদি কোনো ব্যক্তি রাতে ওজিফা (সূরা বা সূরার অংশ) পুরোপুরি বা আংশিক না পড়েই ঘুমিয়ে যায় এবং পরদিন জোহরের আগেই তা পড়ে ফেলে, তাহলে রাতে পড়ার সমান সওয়াবই সে পাবে।- ওমর ইবনে খাত্তাব (রা); মুসলিম, নাসাঈ

আল্লাহ বহু জাতির উত্থান ঘটাবেন কোরআনের মাধ্যমে। আবার (অনুসরণ না করার কারণে) বহু জাতির পতনের কারণও হবে কোরআন।
– ওমর ইবনে খাত্তাব (রা); মুসলিম। 

কিউএনবি/অনিমা/০৫ এপ্রিল ২০২৪,/সন্ধ্যা ৬:২১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit