মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন

রোজার আগেই টালমাটাল নিত্যপণ্যের বাজার

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪
  • ৮৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : শুক্রবার (৮ মার্চ) কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ও আগানগর এবং রাজধানীর হাতিরপুল ও পলাশী কাঁচা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। গত দুই সপ্তাহে কিছুটা কমলেও চলতি সপ্তাহে আবারও বাড়ছে সবজির দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে কোনো কোনো সবজি কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।

বাজারঘুরে দেখা যায়, মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৯০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, আলু ৩৫ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা, শসা ৬০ টাকা ও লতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পেঁপে ৪০ টাকা, খিরাই ৫০-৬০ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, কহি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গার ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।

আর প্রতি পিস লাউ ৪০-৬০ টাকা, আকারভেদে প্রতিপিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গত সপ্তাহে সেঞ্চুরি হাঁকানো  করলা ও ঢ্যাড়শ বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ১০০-১৪০ টাকা ও ১২০ টাকা কেজিতে। বিক্রেতারা জানান, বাজারে করলা ও ঢেঁড়শের সরবরাহ তেমন বাড়েনি। তাই দাম কিছুটা বেশি। কেরানীগঞ্জের সবজি বিক্রেতা উজ্জ্বল বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে শাক-সবজির দাম। মূলত সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে।

দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচেরও। পাইকারিতে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায় ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, কলমি ১৫ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা ও লাউ শাক ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা জানান, রোজার আগে আবার বাড়তে শুরু করেছে সবজির দাম। বাজার সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের পকেট কাটছে। নাবিল নামে এক ক্রেতা বলেন,

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে শাক-সবজিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম। এতে রোজার আগে ভোগান্তিতে ক্রেতারা। বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে রোজায় অবস্থা আরও বেগতিক হবে। ঊর্ধ্বমুখী মুরগি ও গরুর মাসের বাজারও। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২২০-২৪০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৭০০ টাকায়।

 

প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকায়। ছবি: বিশ্বজিৎ দাস বিজয়

 

বিক্রেতাদের জানান, পাইকারি বাজারে মুরগির দাম বাড়ায়, খুচরা বাজারেও বেড়েছে। কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজারের নূরুল ইসলাম বলেন, বাজারে হঠাৎ করেই মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। এতে পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায়; এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়ছে। গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। তবে বাড়েনি খাসির মাংসের দাম। বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।

এ ছাড়া প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৪৫-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মাছের বাজারে দেখা যায়, চড়া বেশিরভাগ চাষের ও দেশি মাছের দাম। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে।

বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা, চাষের শিং ৫২০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। আর আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আকাশছোঁয়া মাছের দাম। ছবি: বিশ্বজিৎ দাস বিজয়

 

এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকার ওপরে।
কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী হরিপদ বলেন, বাজারে দেশি মাছের সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে। রোজায় চাহিদা কিছুটা কমলে, দাম কমতে পারে।
রমজান মাস শুরুর আগেই অস্থির হয়ে উঠা রোজার পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন করে দাম না বাড়লেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব পণ্য। বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। আর প্রতি কেজি ছোলার ডাল ১০০-১২০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৮৫-৯০ টাকা, ডাবলির ডাল ৮৫ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫-১১০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, মোটা দানার মুগ ডাল ১৪৫-১৫০ টাকা, চিকন মুগ ডাল ১৭০-১৮০ টাকা ও খেসারি ডাল ১০৫-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য পণ্যের মধ্যে বেসন ১৪০-১৬০ টাকা খোলা আটা ৫০-৫৫ টাকা, প্যাকেট আটা ৬৫-৬৮ টাকা, খোলা ময়দা ৬৫-৭০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি তো বাজার থেকেই উধাও!
তবে বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন দামের ভোজ্যতেল। বোতলজাত সয়াবিন তেল নির্ধারিত দামে বিক্রি হলেও বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেলে। রাজধানীর হাতিরপুল বাজারের এক মুদি দোকানি জানান, বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৩ টাকা ও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।

রোজার আগে ঊর্ধ্বমুখী মসলার বাজারও। জিরা বাদে বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম। প্রতি কেজি জিরা ৭৫০ টাকা, এলাচ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪৬০-৪৭০ টাকা, গোলমরিচ ৯০০ টাকা ও লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায়। তবে বাজারে কিছুটা দাম কমেছে পেঁয়াজের। প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকায়। দেশি নতুন রসুন কেজি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। আর আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকায়। এ ছাড়া মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৮ মার্চ ২০২৪,/সকাল ১১:৫০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit