খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের ডামুড্যায় নিয়মবর্হিভূত ভাবে মসজিদের জমি বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও মুছল্লিদের চোখে ধূলো দিয়ে কৌশলে নিয়ম নীতি নামেনে জমি বিক্রি করায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মসজিদ কমিটির সভাপতি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সদস্য ও প্রভাবশালী হওয়ার কারনে কমিটির লোকজনদের কোন রকম তোয়াক্কা করছে না। অভিযোগ রয়েছে ওই সভাপতি জমি বিক্রি করেছেন মসজিদের আর রেজুলেশন লিখেছেন পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রেজুলেশন খাতায়। তাতে তিনি মসজিদ মেরামত এবং কবরস্থান ও অজুখানা নির্মাণের জন্য টাকার প্রয়োজনে এই জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন। মসজিদ কমিটি ও মুছল্লিদের অভিযোগ সভাপতি এলাকায় একটি হাসপাতাল নির্মাণের কথা বলে স্বাক্ষর নিয়েছেন। সেখানে কোন সভা অনুষ্ঠিত বা জমি বিক্রির বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি।
উত্তর ডামুড্যা মসজিদ কমিটির অন্যান্য সদস্য, ইমাম ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৫০ বছরের পুরাতন উত্তর ডামুড্যা মসজিদ। পাশেই রয়েছে ১০৩ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত উত্তর ডামুড্যা হাফিজিয়া মাদরাসা ও দারুসসুন্নাহ এতিমখানা। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মসজিদ ও মাদরাসা সময়োপযোগী পরিবেশে পরিচালিত হয়ে আসছে। ২০২৩ সনের ১৮ ডিসেম্বর মসজিদ মেরামত এবং কবরস্থান ও অজুখানা নির্মানের অজুহাতে মসজিদের নামে রেকর্ডকৃত জমি থেকে ৮ শতাংশ জমি সাফ কবলা দলিলমূলে বিক্রি করেছেন বর্তমান সভাপতি মো. জিবুল বিশ্বাস।
ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় জামাল উদ্দিন বেপারী জানায়, তিনি ২০ বছর দারুল আমান ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ছিলেন। মসজিদ মেরামত এবং কবরস্থান ও অজুখানা নির্মাণের জন্য ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার প্রয়োজন হলেও তা তিনিই দিবেন। টাকার জন্য মসজিদের জমি বিক্রি করা হয়ে থাকলে তা ফিরিয়ে আনতে হবে। বিদ্যালয়ের খাতায় রেজুলেশন লিখে ভুল বুঝিয়ে মসজিদ কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থে জমি বিক্রির কোন সুযোগ নাই।মসজিদের মুছল্লি শাহ জালাল, সদস্য ফারুক বেপারী, মোজাম্মেল হাওলাদার, সহ-সভাপতি সৈয়দ বাহাউদ্দিন জানায়, স্থানীয় প্রাথমি বিদ্যালয়ের রেজুলেশন খাতায় সভাপতি আমাদের স্বাক্ষর নিয়েছে। সেখানে মসজিদের জমি বিক্রির কোন কথা উল্লেখ ছিল না।
মসজিদের ইমাম ও খতিব আব্বাস ইবনে মোস্তফা জানায়, তিনি ১০ বছর এই মসজিদে ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি আরো জানান বর্তমানে মসজিদ মেরামতের জন্য কোন টাকার প্রয়োজন নেই। মসজিদ মাদরাসার উন্নয়নের জন্য এলাকার শফিক ছৈয়াল ও জামাল মেম্বারের সমন্বয়ে কাজ হয়। মসজিদ মেরামতের জন্য জমি বিক্রির করা হয়েছে শুনে তারা খুব কষ্ট পেয়েছে। গত জুমার নামাজের পরে মুসল্লিদের সামনে মসজিদের উন্নয়নের জন্য যত টাকা প্রয়োজন তা জামাল মেম্বার দিতে চেয়েছেন। মসজিদের জমি বিক্রি সংক্রান্তে মসজিদে কোন রেজুলেশন হয়েছে কি না তা আমি জানি না। তবে কিছুদিন পুর্বে মোয়াজ্জেনের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে একটি সভা হয়েছিল।
এই বিষয়ে উত্তর ডামুড্যা মসজিদের সভাপতি মো. জিবুল বিশ্বাস জানায়, রেজুলেশন করে মসজিদের জমি উত্তর ডামুড্যা হোসেন আলী বিশ্বাস কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মানের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর সাব কবলা বিক্রি দলিল দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ কাজ আইন মেনে করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রেজুলেশন খাতা ব্যাবহার ও ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে মসজিদের জমি বিক্রি বা হস্তান্তরের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
কিউএনবি/অনিমা/১৬ জানুয়ারী ২০২৪,/বিকাল ৩:৪১