রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৭ অপরাহ্ন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট ভাগাভাগি হয়ে গেছে , কেবল ফলাফল ঘোষণা ৭ জানুয়ারী -ডক্টর মঈন খান

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৫৪ Time View

জালাল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট ভাগাভাগি ৩০ নভেম্বরই হয়ে গেছে। কোন আসনে কোন প্রার্থী কত ভোট পাবে সেটাও সরকারের হেডকোয়ার্টারে নির্ধারণ হয়ে গেছে। ৭ তারিখে কেবল ফল ঘোষণা করা হবে”।

আজ ২৩ ডিসেম্বর(২০২৩) শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘নির্বাসিত গণতন্ত্র ও বিপন্ন মানবাধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট আয়োজিত এই সভায় মঈন খান বলেন,”আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই। এই নির্বাচন নিয়ে সরকারের ভোট ভাগাভাগি এমন পর্যায়ে গেছে, তাদের লজ্জা বলতে আর কিছু অবশিষ্ট নেই”।

তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের অপকর্মে বাধা দিতে হবে এবং সরকারকে অপসারণ করে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অন্য একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে লক্ষ্যে যার যার অবস্থান থেকে যে যেভাবে পারি এই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।’

বিএনপির এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, জনগণ ধনসম্পদ চায় না। তারা পাঁচ বছর অন্তর একদিন কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো ভোটটা দিতে চায়। এটাই হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার যদি আমরা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে না পারি, তাহলে আমরা যা কিছু বলছি, যা কিছু করছি সব অর্থহীন হয়ে যাবে।’

মইন খান বলেন, ‘বর্তমান ফ্যাসিস্ট বাকশালী সরকারকে অপসারণ করে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে আন্দোলন-সংগ্রাম, সেই সংগ্রামে আমরা রাজপথে আছি। পাশাপাশি এ বিষয়ে আলোচনা, সেমিনার, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার কাজগুলো করতে হবে।

‘প্রতিটি আন্দোলনের যেসব পন্থা আছে, সেগুলা এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আরোপ করতে হবে। আমরা সেমিনার করবো, রাজপথে প্রতিবাদ করবো, সরকারের সমালোচনা করবো, প্রয়োজনে সরকারকে বিদায়ের রাস্তা দেখিয়ে দেবো। কোনো কাজেই আমরা পিছিয়ে থাকবো না’।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে মানুষের মাঝে। আমরা একটি প্রস্তাব দিয়েছি বলে কেউ যে এর সমালোচনা করবে না সেটা চিন্তা করি না। কেউ সমালোচনা করলে জবাব দেয়ার চেষ্টা করবো। শেষে যে মতটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে, সেটিই বিজয়ী হবে। এটাই গণতন্ত্রের ভাষা, পদ্ধতি।

‘অসহযোগ আন্দোলনে বিএনপি পাঁচ দফা বা ইস্যু দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রথম কথা হলো- এই নির্বাচন বর্জন করুন। আমি বলতে চাই, শুধু নির্বাচন নয়, এই সরকারকেও বর্জন করুন।’

ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল আজিজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণফোরাম সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর ,সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল,

চাকসুর সাবেক ভিপি এবং জামায়াত নেতা এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার ,ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, সাবেক সভাপতি মহসীন মিয়া প্রমুখ। ডাকসুর সাবেক ভিপি এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “শ্রমিকরা আগামী ১ জানুয়ারী থেকে লাগাতার আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে। অতীতে যে কোন আন্দোলন -সংগ্রাম সফলতার পেছনে ছাত্ররা এবং শ্রমিকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এবারে শ্রমিকেরা মাঠে নামলেও ছাত্রদের কোন খবর নাই”।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন,”আগামী ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের একটি রাজনৈতিক মৃত্যু হতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দুর্যোগের সাথে অর্থনৈতিক দুর্যোগ রয়েছে ।পাকিস্তান আমলে যেমনিভাবে রাজাকার- আলবদর বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর বাড়ি  হানাদারদের দেখিয়ে দিতো, তেমনিভাবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশকে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘর দেখিয়ে দিচ্ছে”।

তিনি আরো বলেন,”রাজউকের প্লটের মতো সংসদীয় আসন ভাগাভাগি হচ্ছে। আমরা প্রতিটি ঘরে ঘরে নির্বাচন বর্জনের ডাক ইতিমধ্যেই পৌঁছে দিয়েছি”। জোনায়েদ সাকি বলেন, “ভোট দেওয়া মানে ব্যালটে একটা সিলমারা নয়। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ থাকতে হবে এবং পছন্দের প্রার্থীর প্রতীক থাকতে হবে। তাহলে কেবল ভোটার পছন্দের প্রতীকে ভোট দিয়ে নিজের  মতামত প্রকাশ করার সুযোগ পাবে”।

সাংবাদিক আবদুল আজিজ বলেন, “রাজনীতি এখন রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। জাতীয় সংসদে আগে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা ছিল ১৮%। এখন  ৬৩% । তাই রাজনীতি এখন ব্যবসায়ীদের হাতে। স্বৈরাচার কে নামাতে রণকৌশল ঠিক করতে হবে। জমিজমা বিক্রি করে বিএনপি নেতারা নি:স্ব জীবন যাপন করছে। কিন্তু আওয়ামী লীগে যোগদান করেন নি। এখন স্বাধীনতা সংগ্রামের চেয়ে কঠিন সংগ্রাম চলছে”।

সিনিয়র আইনজীবী এবং গণ ফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন,”আওয়ামী লীগে এখন তিন পাগলের মেলা বসে বসেছে।ওবায়দুল কাদের এবং হাসান মাহমুদ আগে থেকেই আছেন। এখন সেখানে শাহজাহান ওমর গিয়ে জড়ো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন,”নেতাকর্মীরা আগে রক্ত আগে দিয়েছে। পুলিশ তাদের কে হাত কড়া দিয়েছে , ডান্ডা বেড়ি পরিয়েছে। কিন্তু দমে যায় নি।বিশ্ব বেহায়া বিশ্ব স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটানোর জন্য যে আইনজীবীরা যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছে”।

ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের নেতা এডভোকেট সৈয়দ  মামুন মাহবুবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক এডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, এডভোকেট পারভেজ হোসেন সহ শতাধিক আইনজীবী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

কিউএনবি/আয়শা/২৩ ডিসেম্বর ২০২৩,/রাত ৮:৫৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit