মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪১ পূর্বাহ্ন

লোহিত সাগরে হুথিদের হামলা বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে হুমকি

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৪৬ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথির হামলা এরই মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্যকে নাড়া দিয়েছে। ১২টি বড় কোম্পানি ও জ্বালানি তেল পরিবহনকারী সংস্থা লোহিত সাগর দিয়ে তাদের পরিষেবা বন্ধ রেখেছে। সমষ্টিগতভাবে এ কোম্পানিগুলো বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে। ফলে পণ্য ও জ্বালানি তেল সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

অক্টোবরের শুরুতে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এক ডজনেরও বেশি জাহাজ হামলার শিকার হয়েছে। 

সম্প্রতি বাহরাইন সফররত মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, “যুক্তরাজ্য, বাহরাইন, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সেশেলস ও স্পেনের সঙ্গে মার্কিন বাহিনী এ অঞ্চলে জাহাজের নিরাপত্তার জন্য একটি নতুন বাহিনী গড়ে তুলবে।”

সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে ১২টি কোম্পানির কথা বলা হয়েছে, যারা নাবিক ও জাহাজের নিরাপত্তার জন্য লোহিত সাগর হয়ে পূর্বনির্ধারিত সব যাত্রা বাতিল করেছে বা করবে। এ কোম্পানিগুলো হচ্ছে- বিপি, এমএসসি, মায়ের্স্ক, হ্যাপাগ লয়েড, সিএমএ সিজিএম, ইয়াং মিং মেরিন ট্রান্সপোর্ট, ইকুইনর, ইউরোনাভ, ফ্রন্টলাইন, এইচএমএম, ওওসিএল ও এভারগ্রিন।

এভারগ্রিন জানিয়েছে, এটি সাময়িকভাবে ইসরায়েলগামী যেকোনও কার্গো পরিবহন বন্ধ করবে। ইসরায়েলে শিপিং পরিষেবা স্থগিত করবে।

চীনা মালিকানাধীন কসকো শিপিং গ্রুপের ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কন্টেইনার লাইন (ওওসিএল) জানিয়েছে, “‌পরিচালন সমস্যা থাকায় ইসরায়েলি কার্গো পরিবহন বন্ধ করা হয়েছে।”

ইসরায়েলি চেম্বার অব শিপিংয়ের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইয়োনি এসাকভ জানান, ইসরায়েলি আমদানির প্রায় ৩০ শতাংশ লোহিত সাগর দিয়ে কন্টেইনার জাহাজে আসে। এগুলো ভোগ্য বা অন্যান্য পণ্যের জন্য দুই-তিন মাস আগে বুক করা হয়। এখন যদি জাহাজগুলো রুট পরিবর্তন করে, তাহলে পণ্যগুলো প্রাচ্য থেকে আমদানি করা কঠিন হবে।

ইয়োনি এসাকভ বলেন, “‌আমদানিকারকদের অনিশ্চয়তার কারণে মজুদ বাড়াতে হবে। পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যাবে। অনেকে তাদের বাজার হারাবে। বাজার প্রতিযোগিতা হারাবে।”

যুক্তরাজ্যভিত্তিক জ্বালানি তেল কোম্পানি বিপির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “‌আমাদের জনগণ এবং যারা আমাদের পক্ষে কাজ করছেন তাদের নিরাপত্তা বিপির অগ্রাধিকার। নাজুক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে বিপি অস্থায়ীভাবে লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে সব ট্রানজিট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

তেল ট্যাংকার গ্রুপ ফ্রন্টলাইনও বলেছে, তারা লোহিত সাগর এড়িয়ে চলছে।

অনলাইন শিপিং মার্কেটপ্লেস ফ্রেইটসের তথ্যানুসারে, সমুদ্রে পণ্য পরিবহন খরচ এরই মধ্যে বেড়ে গেছে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর এশিয়া-ইউএস ইস্ট কোস্টের (কার্গো সার্ভিস) দাম প্রতি ৪০ ফুট কন্টেইনারে ৫ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৪৯৭ ডলারে পৌঁছেছে। এটি আরও বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। কারণ বড় কোম্পানিগুলো সুয়েজ খাল এড়িয়ে যাচ্ছে। ভারত মহাসাগরে যাওয়ার জন্য আফ্রিকা ঘুরে যেতে হচ্ছে। এ পথ ঘুরে যেতে ১৪ দিন পর্যন্ত অতিরিক্ত যোগ করতে হয়। একই সঙ্গে যোগ করতে হয় উচ্চ জ্বালানি খরচ। ফলে জাহাজগুলো তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক বেশি সময় নেয়।

সমুদ্র লজিস্টিকস কোম্পানি কিনে+নেগেলের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল অ্যাল্ডওয়েল বলেন, “‌বৈশ্বিক শিপিংয়ের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হচ্ছে কন্টেইনার শিপিং। যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ কোটি ডলার। আনুমানিক ১৯ হাজার জাহাজ প্রতি বছর সুয়েজ খাল দিয়ে চলাচল করে। সমুদ্রে ব্যয় করা অতিরিক্ত সময় বিশ্বব্যাপী সক্ষমতার ২০ শতাংশ হ্রাস করবে। ফলে এশিয়ায় খালি কন্টেইনার ফেরত দিতে বিলম্ব হবে, যা সরবরাহ চেইনকে সংকটে ফেলবে।” সূত্র: সিএনবিসি

কিউএনবি/অনিমা/২০ ডিসেম্বর ২০২৩/দুপুর ২:০৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit