খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের নড়িয়াতে কমল বিশ্বাস (৫২) নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) শাখা ব্যবস্থাপক ছিলেন। মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের গবিন্দমঙ্গল এলাকা থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত কমল বিশ্বাস ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার মৃত কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে।
নড়িয়া থানা সুত্র জানা যায়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বারখাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা কমল বিশ্বাস। তিনি পরিবার নিয়ে শরীয়তপুর শহরে থাকতেন। তার স্ত্রী তাপসী রানী বিশ্বাস শরীয়তপুর জজ কোটের আইনজীবী। কমল বিশ্বাস নড়িয়া উন্নয়ন সমিতিতে (নুসা) কাজ করতেন। ২ বছর যাবৎ নড়িয়ার বিঝারী ইউনিয়ন শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন।
তিনি মাঝেমধ্যে কার্যালয়টির একটি কক্ষে রাত্রি যাপণ করতেন। মঙ্গলবার সকালে একই শাখার দুইজন মাঠকর্মী অফিস কক্ষে প্রবেশ করে ফ্যানের সাথে কমল বিশ্বাসের মরদেহ ঝুলতে দেখে বাড়ির মালিক নূর ইসলাম ঢালীকে জানান। পরে নূর ইসলাম ঢালী বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মরদেহের পাশ থেকা চিরকুটে লেখা ছিলো,’ আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী মনজিলা, মাইনুদ্দিন ও ইতি দাস। ১ নং মনজিলা আমার কাছ থেকে চুরানব্বই হাজার সাতশো টাকা বিভিন্ন মাসে নিয়ে তা স্বীকার করে না। তার স্বাক্ষী মোক্তার হোসেনের নামে আরো ৮০ হাজার টাকা চেয়েছিলো। তাকে না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা শুরু করে যা মিথ্যা ও বানোয়াট। সে ঝগড়াটে, মিথ্যুক, প্রতারক, অত্যাচারী, আমার মৃত্যুর জন্য সেই মূল দায়ী। ২ নং মাইনুদ্দিন আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৫০ টাকা নিয়ে স্বীকার করে না। সে ফাঁকিবাজ, অলস, শয়তান। সে আমার টাকাগুলো মেরে খাওয়ার জন্য মনজিলার সাথে মিলে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ৩ নং ইতি দাস আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে স্বীকার করেছে। আমার মোট বেতন ও গাছ বিক্রির টাকা ৩ লক্ষ ২৭ হাজার ৫৫০ টাকা পাওনা।
সংস্থাটির (নুসার) মানবসম্পদ বিভাগের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কমল বিশ্বাস খুব ভালো মানুষ ছিলেন। আমি সকালে খবর পেয়ে এখানে ছুটে আসি। পরে ওনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। ওনার মরদেহের পাশে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে। সেখানে কয়েকজন কর্মীকে টাকা ধার দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ আছে। বিষয়টি পুলিশের পাশাপাশি আমরাও তদন্ত করছি।
নড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এক এনজিও কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমরা মরদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছি। সুইসাইড নোটে টাকা পয়সার বিষয় উল্লেখ ছিলো।
কিউএনবি/আয়শা/১৯ ডিসেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৫:৩০