সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন

শরীয়তপুরে এইচএসসির ফলাফলে অসন্তোষ শিক্ষার্থী-অভিভাবক

খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি
  • Update Time : সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ২৩৩ Time View

খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি : ২০২৩ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে গত ২৬ নভেম্বর। প্রকাশিত ফলাফল হাতে পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ। ২০২০ সালে এসএসসিতে অটোপাশ ও ২০২১ সালে শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়া এবং শিক্ষার্থীরা মোবাইল আশক্ত হওয়ায় ফলাফলে বিপর্যয় হয়েছে বলে দাবী করেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি অভিভাবকরা দায়িত্ববান হলে আশানুরূপ ফলাফল ফিরে পাওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল।শরীয়তপুর সরকারি কলেজ থেকে পাওয়া তথ্য, চলতি বছরে এই কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ৩৫৬ জন অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৭১, মানবিকে ৮২৯ জনের মধ্যে ৩৫৩ ও বিজ্ঞানে ১৯৪ জনের মধ্যে ১১৯। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ হাজার ৩৭৯ জন। তার মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে ৭৩৬ জন। পাশের হার ৪৬.৯৭ শতাংশ।

শরীয়তপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হারুন-অর রশিদ বলেন, মেধা যাচাই ছাড়াই ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করতে হয়। কলেজে ভর্তি হয়ে তারা শুধু মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তারা ক্লাশে আসেনা আবার বাড়িতেও পড়েনা। আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করি তবে অভিভাবকরা সচেতন হলে এই সংকট থেকে উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব।সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ থেকে পাওয়া তথ্য, এই কলেজ থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ১১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, মানবিক থেকে ৩৩৮ জন অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৪০ জন। মোট পাশের হার রয়েছে ৩৮ শতাংশ।

এই কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওয়াজেদ কামাল জানায়, হতদরিদ্র পরিবারের মেয়েরা এই কলেজে ভর্তি হয়। তাদের কলেজ ইউনিফর্ম, বই ক্রয় ও কলেজে আসার গাড়ি ভাড়ার টাকাও থাকে না। একদিন আসলে দুই দিন আসে না। এই ধরণের মেয়েদের কাছ থেকে এর বেশী কিছু প্রত্যাশা করা যায় না। বিজ্ঞান বিভাগ থাকাস্বত্ত্বেও শিক্ষক সংকটে ছাত্রী ভর্তি করা হয় না। এই বছর প্রায় ১৫ জন বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করেছি।শরীয়তপুর সরকারি ট্যাকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে কম্পিউটার, ইলেক্ট্রিক, ইলেক্ট্রনিক্স ও ফিস কালচার ট্রেড রয়েছে। কম্পিউটার ট্রেড থেকে ৩৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে ২১ জন, ইলেক্ট্রিক ট্রেড থেকে ৪০ জনের মধ্যে ১৩ জন, ইলেক্ট্রনিক্স ট্রেডে ১৩ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ২ জন ও ফিস কালচার ট্রেডে ১১ জনের মধ্যে ৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।

এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রঊফ জানায়, শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি ও শিক্ষক সংকট ফলাফল পরাজয়ের প্রধান কারণ। তিনি আরো জানায়, কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ইলেক্ট্রনিক্স ও ফিস কালচার ট্রেডে কোন শিক্ষক নেই। ৪৩ জন শিক্ষকের স্থলে রয়েছে মাত্র ৬ জন শিক্ষক।অভিভাবকগণ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। শিক্ষা উপকরণের মূল্যও আকাশছোঁয়া। তবুও খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের পড়ালেখ চালিয়ে যাই। প্রতি বিষয়ে প্রাইভেট পড়াতে হয়। আমাদের দিক থেকে কোন কারপন্যতা করি না। সরকারও শিক্ষকদের উচ্চ স্কেলে বেতন-ভাতাদি ও সুযোগ সুবিধা দেয়। প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে না পারা শিক্ষকদের ব্যর্থতা।

কতিপয় শিক্ষকদের সাথে কথা হয়। তারা নাম প্রকাশে অনিহা প্রকাশ করে জানায়, অন্যকিছু জানা থাকলে শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে দিতাম। শিক্ষার কারিকুলামে শিক্ষনিয় কিছুই নাই। লটারিতে ছাত্র ভর্তি করা হয়। ষষ্ঠ শ্রেণির একজন ছাত্রকে রিডিং পড়া শেখাতে হয়। কোন ছাত্র শুধু রেজিষ্ট্রেশন করে একদিনও ক্লাশে আসেনি তবুও তাকে পরীক্ষায় সুযোগ দিতে হয়। সারা বছর বইয়ের সাথে কোন সম্পর্ক নাই সেই ছেলে পরীক্ষায় কি করবে। এমন হাজারো সমস্যার মধ্যে চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে পড়ালেখা করে ছাত্ররা কিছুই হতে পারবে না তাই আমাদের সন্তানদের মাদরাসায় ভর্তি করি।

কিউএনবি/অনিমা/০৪ ডিসেম্বর ২০২৩,/দুপুর ২:১৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit