মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাজ্য-জার্মানির বাজারকে ছাড়িয়ে যেতে কাজ করছি: প্রধানমন্ত্রী

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১১৭ Time View

ডেস্ক নিউজ : ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্য-জার্মানি এবং বর্তমান উচ্চ-প্রবৃদ্ধির ভিয়েতনাম বা থাইল্যান্ডের বাজারকে ছাড়িয়ে যেতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) ৬০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠান ও ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো ২০২৩-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের বিশাল জনসংখ্যা আছে। সেটাকে আমরা সবচেয়ে বেশি কাজে লাগাবো। তাদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে আমরা গড়ে তুলছি। টানা তিন মেয়াদে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর একটিতে পরিণত করেছি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।

তিনি বলেন, শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়সমূহ ও বাণিজ্য সংহতকরণের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭.২৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় মাত্র এক দশকে তিনগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৯৩ মার্কিন ডলারে। জিডিপির আকার ২০০৬ সালের ৪ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৫০.৩১ লক্ষ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দারিদ্র্যের হার প্রায় ৩ গুণ কমে ১৮.৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, অর্থনৈতিক উদারীকরণ এবং বাণিজ্য সংহতকরণের ওপর ভিত্তি করে আজকের এই টেকসই অর্থনীতি ও উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশ ২০২১ সালে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। ২০৩৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ৩৯টি হাই-টেক পার্ক বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কর মওকুফ, রেমিট্যান্স রয়্যালটি, প্রস্থান নীতি, লভ্যাংশ এবং মূলধন সম্পূর্ণ প্রত্যাবর্তন, আইন দ্বারা বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষাসহ বিনিয়োগ নীতিকে আরও সহজ করার জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কাঠামোগত উন্নয়ন কর্মসূচি, বিনিয়োগবান্ধব নীতি, বৃহৎ অভ্যন্তরীণ বাজার, কৌশলগত অবস্থান, উচ্চ মুনাফা, কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন সুবিধার কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের কাছে বিনিয়োগ, শিল্পায়ন এবং রপ্তানির জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাপকহারে টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ করেছি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নদীর তলদেশে টানেল, গভীর সমুদ্র বন্দর এবং গণপরিবহন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ। পদ্মা বহুমুখী সেতু, পদ্মা সেতুর রেল লাইন সংযোগ, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আমাদের সামর্থ্যের বহিঃপ্রকাশ।

২০২৫ সালের মধ্যে শুধু লজিস্টিকস খাতই ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজারে পরিণত হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন জ্বালানি, পানি, লজিস্টিকস এবং পরিবহন খাতে ৩৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অবকাঠামো গড়ার সুযোগ রয়েছে।

২০৩১ সালের মধ্যে জিডিপিতে বেসরকারি বিনিয়োগের অনুপাত ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনার কথা জানান সরকারপ্রধান। ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত ও ধনীক শ্রেণির সংখ্যা ৩ কোটি ৪০ লাখ হবে বলে জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে আনুমানিক মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়াবে ৫ হাজার ৮৮০ মার্কিন ডলার। কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ ৩০০ কোটি মানুষের আঞ্চলিক বাজারের কেন্দ্রস্থল হতে পারে। শেখ হাসিনা বলেন, এসব সাফল্যের ওপর দাঁড়িয়েই, বাংলাদেশ এখন ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ মধ্য-আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

দেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে প্রচেষ্টা জোরদারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন, সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে আমরা আরও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাই। আমরা আমাদের প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করি। আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং ব্যর্থ হওয়ার কোনো কারণও নেই। কারণ, আমরা একটি বিজয়ী জাতি।

তিনি আরও বলেন, আসুন সবাই মিলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজ সম্বলিত উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করি। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, ফিকির প্রেসিডেন্ট নাসের আজাজ বিজয় প্রমুখ।

ফিকির যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৩ সালে। এ বছর চেম্বারটি ৬০ বছরে পর্দাপণ করল। শীর্ষস্থানীয় একটি চেম্বার হিসেবে ফিকি বাংলাদেশের ২১টিরও বেশি খাতে বিশ্বের ৩৫টি দেশের বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিত্ব করছে। ছয় দশকের এ যাত্রায় চেম্বারের ২০০টিরও বেশি সদস্য-প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ রাজস্ব অর্জনে অবদান রেখেছে। এছাড়া ফিকি দেশের ৯০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ এফডিআই-এর প্রতিনিধিত্ব করছে, যা দেশের সার্বিক উন্নয়নের বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৯ নভেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৩:৩০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit