শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন

ভোটের আগে বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্রের মৃত্যু’ হয়েছে

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৫২ Time View

ডেস্কনিউজঃ বাংলাদেশের বিপর্যস্ত বিরোধী দলের নেতারা বলেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিজয়ী হওয়া কোনো আশ্চর্যের বিষয় হবে না। যদিও দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর কৃতিত্ব তারই কিন্তু বিরোধীদের তাকে স্বৈরাচারী বলে সম্বোধন করে। তিনি টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুত বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশে ৭ জানুয়ারী ভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্বাচন কমিশন বুধবার ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণাটি শেখ হাসিনার দলের জন্য উল্লাসের।

বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী সংস্থার সদস্য আবদুল মঈন খান বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সবাই এই নির্বাচনের ফলাফল জানে। এই নাটকের অংশ হয়ে লাভ কী? অর্থহীন নির্বাচনে যাওয়ার কোনো মানে নেই। বাংলাদেশে গণতন্ত্র মরে গেছে।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা বারবার বিরোধীদের পদত্যাগের আহ্বান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এইসব দাবির সমর্থনে রাস্তায় মারাত্মক বিক্ষোভের জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার নির্বাচনী তফসিলের প্রতিবাদে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সব দলকে স্বাগত জানাই এবং ‘কারো জন্য কোনো বাধা থাকা উচিত নয়’।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল কিন্তু ২০১৮ সালে অংশগ্রহণ করেছিল, যেটিকে দলের নেতারা একটি ভুল বলে অভিহিত করেছেন কারণ ব্যাপক কারচুপির পাশাপাশি ভোটার এবং প্রার্থীদের ভয় দেখানোর অভিযোগে ভোটটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা সরকারগুলো ২০১৮ সালের ভোটে বিভিন্ন অনিয়মের তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ, যাদের জোট সংসদে সরাসরি নির্বাচিত ৩০০ আসনের মধ্যে ২৫৭টি জিতেছে, তারা কোনো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মার্কিন অলাভজনক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের একটি সমীক্ষা আগস্টে বলেছে, ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো বেশিরভাগ বাংলাদেশি বিশ্বাস করেন যে দেশটি ভুল পথে চলেছে, প্রধানত উচ্চ মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের এর ওপরে থাকার কারণে। তারপরও ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি শেখ হাসিনার পারফরম্যান্সকে সমর্থন করেন।

জ্বালানি, ইউটিলিটি এবং অন্যান্য মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সাধারণ অসন্তোষের মধ্যে বিএনপি যখন বড় বিক্ষোভ করেছে, তখন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে সাড়া দিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, তারা শুধু সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করেছে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই গ্রেপ্তারকে নির্বাচনের আগে ভয় দেখানোর চেষ্টা বলে অভিহিত করেছে বেল জানিয়েছে রয়টার্স।

বৃহস্পতিবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র এশিয়া গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘চলমান গণরাজনৈতিক গ্রেপ্তার, জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও সমালোচকদের নির্যাতন বাংলাদেশ সরকারের সকলের জন্য মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতিকে অর্থহীন করে তুলেছে।’

শেখ হাসিনা বৃহত্তর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য চীনের পরে বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশের বিশাল গার্মেন্টস সেক্টর ব্যবহার করেছেন, তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর পণ্যের উচ্চ মূল্যের কারণে তাকে বাধ্য হয়ে এই বছর ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার আইএমএফের কাছে চাইতে হয়েছে।

বাংলাদেশি কাপড়ের সবচেয়ে বড় ক্রেতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মে মাসে ‘দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত’ বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা নীতি আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কিউএনবি/বিপুল/১৬.১১.২০২৩/ রাত ১০.০৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit