লাইফস্টাইল ডেস্ক : বাদামের কিন্তু রয়েছে নানা ধরণ। এই যেমন ধরুন, চীনাবাদাম, আখরোট, পেস্তা বাদাম, কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম ইত্যাদি। বাহারি এ সব বাদামেই রয়েছে ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে জানা যায়, পুষ্টিগুণ এবং শরীরিক উপকারিতার দিক থেকে জাদুকরী এক খাবার বাদাম। এতে থাকা ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ই এবং সি, সেলেনিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, পটাশিয়াম, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসহ নানা পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বাড়িয়ে তোলে। শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই নয়, নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাসে মিলবে নানা উপকারিতাও। আসুন, তা একে একে জেনে নিই:
১। ওজন নিয়ন্ত্রণ: বাদাম নিয়মিত খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকে ওজন। এমনই দাবি করা হয়েছে গবেষণায়। কারণ, বাদামে থাকা কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট আর প্রোটিন ওজন নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
২। ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ: বাদামে ফলিক অ্যাসিড আর ফাইটিক অ্যাসিড রয়েছে। এই দুই অ্যাসিড কোলন ক্যানসারের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৩। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়: গবেষণায় দেখা গেছে, বাদাম যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে বাদাম।
৪। দাঁদের যত্ন: যদি দাঁতের ক্ষয়রোগ থেকে দূরে থাকতে চান তবে নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাঁতের যত্নে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী কাজু বাদাম।
৫। ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়: শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে গেলেই শরীরে নানা অসুখ বাসা বাঁধতে শুরু করে। ঝুঁকি দেখা দেয় হার্ট অ্যাটাকের। আর এইসব অসুখকে রুখে দিতে নিয়মিত খেতে পারেন এক মুঠো বাদাম।
৬। মস্তিষ্কের সুরক্ষায়: বাদাম বিশেষ করে চীনাবাদাম ভিটামিন এ, ডি, বি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ম্যাগনেসিয়াম এবং পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। যা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে।
৭। চুলের যত্নে: নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাসে খুশকির সমস্যা দূর হয়। নতুন চুল গজাতে দারুণ কার্যকর বাদাম। সেই সঙ্গে চুলকে করে তোলে ঘন, কালো আর ঝলমলে।
চুল আর ত্বকের যত্নে কার্যকরী বাদাম। ছবি: সংগৃহীত
৮। ত্বকের সৌন্দর্যে: ভিটামিন ই ও এন্টি এজিং হওয়ায় বাদাম ত্বককে রাখে মসৃণ ও উজ্জ্বল। বয়সের ছাপকেও রুখে দিতে পারে এই বাদাম।
৯। হাড় ও জয়েন্টের ব্যথায়: যদি হাড় মজবুত রাখতে চান, জয়েন্টের ব্যথা হওয়া থেকে দূরে থাকতে চান তবে অবশ্যই নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন।
১০। পিত্তথলির পাথর হওয়া রোধ: যদি নিয়মিত বাদাম খান তবে পিত্তথলির পাথর হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। ত্বকের প্রদাহনাশক হিসেবেও কাজ করে এই বাদাম।
এতসব গুণের মাঝে বাদামের অপকারিতাও কিন্তু আছে। নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাসে শরীরে যেমন নানা রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে ওঠে; তেমনি বেশি পরিমাণে বাদাম খাওয়ার অভ্যাসে শুরু হতে পাারে শরীরে নানা সমস্যাও। যেমন:
১। বেশি পরিমাণে বাদাম খাওয়ার অভ্যাসে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।
২। শুরু হতে পারে বদ হজম কিংবা বমি বমি ভাবের সমস্যা।
৩। মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যা তৈরি হয় বেশি পরিমাণে বাদাম খাওয়ার অভ্যাসে।
৪। বেশি পরিমাণে বাদাম খাওয়ার অভ্যাস শরীরে আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম প্রবেশে বাধা দেয়। তাই ত্বকে শুষ্কভাব দেখা দিতে পারে।
৫। বাদামের সঙ্গে লবণ মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সৃষ্টি করে।
৬। বেশি পরিমাণে বাদাম খাওয়ার অভ্যাস ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা সৃষ্টি করে। এমন কি খাদ্যনালিতে জ্বালাপোড়ার জন্যও দায়ী বেশি পরিমাণে বাদাম খাওয়ার প্রবণতা।