ডেস্কনিউজঃ সিলেটে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর ডাকা অবরোধ কর্মসূচি রুখে দিতে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ। অবরোধের মাঠে দফায় দফায় মোটরসাইকেল বহরে সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেই সাথে পৃথক পৃথকভাবে নগরীতে নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল বহর নিয়ে মহড়া দিয়েছে যুবলীগের নেতাকর্মীরাও। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে রামদা, রড, হকিস্টিক ও লাঠি হাতে বিএনপি-জামায়াত বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকাল থেকে দিনভর ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে দক্ষিণ সুরমা ও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের সক্রিয় অবস্থান দেখা গেছে। নেতৃত্বে ছিলেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ এবং মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি কিশওয়ার জাহান সৌরভ ও সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ।
বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আতঙ্ক ছড়ানোর পাশাপাশি তাদের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। তবে অস্ত্র নিয়ে মহড়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ।
সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাজি মোহাম্মদ দিনার বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অস্থিতিশীল করতে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানাব, তারা যেন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়।
দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়ার বিষয়টি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম অস্বীকার করে তিনি বলেন, তথ্যটি সঠিক নয়। তবে কিছু নেতাকর্মীর হাতে লাঠি ছিল। বিএনপি-জামায়াতের হাত থেকে প্রাণরক্ষার স্বার্থেই কিছু নেতাকর্মীর হাতে লাঠি ছিল। কারণ, বিএনপি-জামায়াত তো অবরোধের নামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি উত্তর) মো: আজবাহার আলী শেখ বলেন, বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখে সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে অবরোধের মাঠে জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিবিজির টহল ছিল। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় অবরোধের শেষ দিনেও সিলেট থেকে সব রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও সড়কপথের যাত্রী সঙ্কটের কারণে মহাসড়কগুলোতে বাস চলাচল ছিল কম। তবে নগরীর অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক ছিল।
সকালে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেলিবাজার তেমুখীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গাছের ডালপালা ও শুকনা পাতায় আগুন ধরিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। প্রায় আধা ঘণ্টা পর এখান থেকে সরে যান। এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকায় যুবদলের ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে একজনকে আটক করে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দক্ষিণ সুরমার বাইপাস এলাকার রাস্তায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে পিকেটিং করে ছাত্রদল ও যুবদলের কিছু নেতাকর্মী। তবে কিছুক্ষণ পর সেখানে পুলিশ উপস্থিত হলে পিকেটারেরা পালিয়ে যায়।
কিউএনবি/বিপুল/০২.১১.২০২৩/ সন্ধ্যা ৭.৫৭