খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : নড়িয়ায় সুফি ঘরানার প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠান চিশতীনগরে উদযাপিত হল বিশ্বনন্দিত ফার্সি কবি ও মহাতাপস মাওলানা জালালুদ্দীন রুমি (রহঃ) এর স্মরণসভা। ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার চিশতীনগর মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন অব ফ্যাকাল্টি, আইন অনুষদের প্রক্টর এবং মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের সহকারী ব্যক্তিগত সচিব ড. মোহাম্মদ মাহমুদ আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল সরকারী এমএম কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আসরারুল হক চিশতী, শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ মোঃ সালাহউদ্দীন, ইরানের আল-মোস্তফা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র আবু সালেহ এবং অধ্যক্ষ ড. লায়লা আক্তার রাত্রি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চিশতীনগরের গদিনশীন শাহযাদা সৈয়দ গোলাম মুদাসসের মাওলা চিশতী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সৈয়দ গোলাম মুঈনুদ্দীন চিশতী হেলাল। অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন চিশতীনগরের সার্বক্ষনিক তত্ত্বাবধায়ক, লেখক ও সম্পাদক পীরজাদা প্রকৌশলী সৈয়দ গোলাম মুরসালিন।
হযরত জালালুদ্দীন রুমী সম্পর্কে অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল রচনা প্রতিযোগিতা। দেশব্যাপী আহূত এই রচনা প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, শরীয়তপুরের জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর সরকারী কলেজ, চট্টগ্রাম ল্যাবরেটরি স্কুল, ঢাকার ইস্পাহানি ডিগ্রী কলেজ, নড়িয়া সরকারী কলেজ, ফেনীর মুঈনিয়া চিশতীয়া স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকার বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুল রউফ পাবলিক কলেজ, পন্ডিতসার উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীগণ এবং পেশাজীবী কবি ও গীতিকার, সুধীজন সহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট ২৯ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহনকারীদের সিনিয়র ও জুনিয়র গ্রুপে ভাগ করা হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রতি গ্রুপের প্রথম পাঁচ জনকে মেধা পুরস্কার এবং অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সকলকে সৌজন্য পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিবৃন্দদের ক্রেষ্ট, ফুল ও বই দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন চিশতীনগরের তত্ত্বাবধায়ক পীরজাদা প্রকৌশলী সৈয়দ গোলাম মুরসালিন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর তারিখে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত তার লেখা “বিশ্বনন্দিত কবি মাওলানা জালালুদ্দীন রুমি (রহঃ)” শিরোনামের প্রবন্ধটি তার স্বাগত ভাষনে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল রুমি রচিত কবিতার বাংলা ও ইংরেজী অনুবাদের উচ্চমানসম্পন্ন আবৃত্তি। ঢাকার ঋৃদ্ধস্বর আবৃত্তি একাডেমির সিনিয়র আবৃত্তি শিল্পী সারিকা আক্তার মৃদুলা এবং সরকারী কিশোর কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের আবৃত্তি শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাসুদ বাংলা অনুবাদকৃত কবিতার আবৃত্তি করেন। ইংরেজী অনুবাদের আকর্ষণীয় আবৃত্তি করে খান হাসান মাসুদ।
উপস্থিত সুধীজনদের মধ্য থেকে বক্তাগণ বিশ্ববরেণ্য কবি ও সাধক হযরত জালালুদ্দীন রুমীর বিস্ময়কর প্রতিভাদীপ্ত জীবনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট নিয়ে আলোচনা করেন। ইতিহাস ভিত্তিক এবং বিস্লেষণধর্মী এসব বক্তব্য শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। সভাপতির সমাপ্তি ভাষণের পর সমাগত সুধীজনদের আপ্যায়িত করা হয় এবং তার পর অনুষ্ঠিত হয় রুমি রচিত ফর্সি গজল। চিশতীনগরের কাওয়াল দল তাদের পরিবেশিত গানে শ্রোতাবৃন্দকে মুগ্ধ করেন। অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ফার্সি গজলের উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ সম্বলিত লিফলেট অতিথিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
কিউএনবি/আয়শা/০১ অক্টোবর ২০২৩,/সন্ধ্যা ৬:৩৪