স্পোর্টস ডেস্ক : সাকিব আল হাসানের সংবাদ সম্মেলন বর্তমানে নানা ঘটনার মঞ্চস্থল হয়ে ওঠে। সেখানে হাসি ঠাট্টা হয়, ঠোঁটকাটা জবাব দেয়া হয়, আবার সুচিন্তিত উত্তরও দেয়া হয়। কলম্বোয় ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচের আগে তেমনই এক সংবাদ সম্মেলন হলো।
তাতে নানা রূপ দেখা গেল সাকিবের। এশিয়া কাপের ফল বিশ্বকাপে প্রভাব ফেলতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বললেন ‘নেক্সট’। এরপর কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন ‘আবার নাও পরে। আমি জানি না।’ এমন জবাব দেয়া সাকিব আর এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্বকাপের আগে কালকে ভারতের সঙ্গে ম্যাচসহ বাকি থাকা ৬ ম্যাচকে কাজে লাগানোর বাস্তব সম্মত উত্তরও দিলেন।
বিশ্বকাপের আগে ৬ ম্যাচের হিসাবটা সহজ। ভারতের বিপক্ষে কালকের ম্যাচের পর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ঘরের মাঠে হবে তিন ম্যাচের সিরিজ। এরপর গৌহাটিতে শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি ম্যাচ। এখানে তিন ম্যাচে বিশ্বকাপের দলে থাকা ক্রিকেটারদের অনেকেই খেলবেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে পুরো দলতো আর খেলছেন না।
তবুও বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতির ব্যাপারে সাকিব জানালেন, ‘আরও ৬টি ম্যাচ বাকি আছে। সেখানে আমরা দেখতে পারব আমরা কোথায় আছে। এশিয়া কাপও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে শেষ ম্যাচে ভারতের সাথে জিততে পারলেও তা আমাদের সাহায্য করবে।’ভারতের সঙ্গে সত্যি-ই জিতে গেলে এশিয়া কাপ ব্যর্থতা ভুলে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু তা উচিত হবে না। এক ম্যাচ জয়ের আত্মতুষ্টি তখন বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে পিছিয়ে দিবে। ভারতের সঙ্গে জিতে গেলেও নিজেদের নিয়ে যে বিস্তর কাজ করতে হবে তা জানেন সাকিব। সেই কাজটা যে ক্রিকেটারদের সবার তা মনে করিয়ে দিলেন অধিনায়ক, ‘একটা জিনিস হচ্ছে সব দায়িত্বই এখানে আমার না।
সবার সব দায়িত্ব আছে। আমি নিশ্চিত সবাই যার যার জায়গা থেকে কাজ করবে। আলাদা আলাদাভাবে যদি সবাই যার যার জায়গা থেকে কাজগুলো করতে পারে, তাহলে আমাদের ভালো করার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে। আলাদা কাজগুলো একসঙ্গে যোগ করতে করলে, তখন হয়তো আমরা ভালো করব। সবাই চেষ্টা করবে আমি জানি, কেউ কারও জায়গা থেকে একটুও কম কাজ করবে না, যাতে যে বিশ্বকাপ ভালো করতে না পারে। আমি আশাবাদী আমাদের দল ভালো করবে।’
সব দায়িত্ব সাকিবের না হলেও অধিনায়ক অবশ্যই কিছু বিষয় আলাদা করে রেখেছেন সতীর্থদের জানানোর জন্য বা কোচ-টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনার জন্য। তবে সেসব সংবাদ মাধ্যমে বলতে চান না সাকিব, ‘এগুলো আসলে মিডিয়াতে বলার বিষয় না– কোন জায়গা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট, কোন জায়গা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট না। এগুলো আসলে আমাদের টিম ম্যানেজমেন্টের আলোচনা করার বিষয় এবং ওখান থেকে সমাধান বের করার বিষয়।’
সাকিব অবশ্য আক্ষেপ করেছেন এই এশিয়া কাপে তাদের ব্যাটিং নিয়ে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর সাকিব জানান গত কয়েক সিরিজ ধরে বাংলাদেশের ব্যাটিং পারফরম্যান্সের পারদ নিচের দিকেই যাচ্ছে। ভারতের বিপক্ষে ভাল করে এই অবস্থা ফেরানোর একটা পথ দেখতে পারেন সাকিবরা। তার জন্য যারা বাল করছেন না তাদের এগিয়ে আসা চাই। সাকিব অবশ্য ভরসা রাখছেন ব্যর্থদের ফিরে আসার ওপর, ‘হ্যাঁ, যে ধরনের ব্যাটিং করার ইচ্ছে আমাদের ছিল, তা করতে পারিনি।
কিন্তু পরের সিরিজে হয়তো কামব্যাক করতে পারবে সবাই। সব সময় ভালো করবে এটাও না, খারাপ করবে তাও না। যারা ভালো করেছে অবশ্য তাদের জন্য ভালো। যারা ভালো করতে পারেনি তাদের জন্য পরবর্তীতে আবার সুযোগ আসবে, তখন তারা যেন সেটা আবার করতে পারে।’টানা সুযোগ পেয়েও অবশ্য প্রত্যাশা মতো খেলতে পারেননি নাঈম শেখ। নিচের দিকে নেমে ম্যাচ বাঁচানোর দুটি সুযোগ পেয়েও হেলায় হারালেন শামিম হোসেন। সামনের ৬ ম্যাচে আবার তাদের সুযোগ দেয়া হবে না বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় বাংলাদেশ হাঁটবে তাই দেখার।
কিউএনবি/আয়শা/১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/রাত ৮:০৮