আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মরক্কোর মারাকেশ অঞ্চলের বাসিন্দা মিনা মেতিওই। দুই দিন আগে ভয়াবহ ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে তার অঞ্চলটি। এতে অন্তত তিন লাখ লোক ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে মিনা বলেন, ভূমিকম্পের শব্দ ছিল ফাইটার জেটের মতো।
তিনি বলেন, এক সেকেন্ডকেই যেন একটা মিনিট বলে মনে হচ্ছিল। এরপর মানুষের চিৎকার। সবাই বাড়ি-ঘর ছেড়ে বের হয়ে আসতে থাকে। খুবই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা।
গত শুক্রবার রাতে মধ্য মরক্কোয় ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই এলাকায় ১৯০০ সালের পর এত শক্তিশালী ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি। ভূমিকম্পে এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় দুই হাজার মানুষ।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এদের মধ্যে ১৪০০ জনের বেশি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। যারা শারীরিকভাবে আহত হননি তারা এখনও ভয়ংকর মানসিক আঘাতের মধ্যে আছেন। এ ঘটনায় দেশটিতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার।
ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মারাকেশ শহর থেকে ৭১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এটলাস পর্বতমালা এলাকার ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে। ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের নিচে থাকা দুই টেকটোনিকে প্লেটের সংঘর্ষ থেকেই এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি।
ধারণা করা হচ্ছে এই অঞ্চলের ভূ-অভ্যন্তরে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের ফলে অ্যাটলাস পাহাড়ে যে ধাক্কা লাগছে তার সঙ্গে এই ভূমিকম্পের সম্পর্ক আছে। কিন্তু মরক্কোয় আসলে এরকম শক্তিশালী ভূকম্পন হওয়ার কথা নয়।
ইতিহাস বলছে, শুক্রবার রাতে ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল যে এলাকা, তার আশপাশে ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে ১৯০০ সালের পর কখনওই ছয় মাত্রার ওপর ভূমিকম্প দেখা যায়নি। ফলে স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকেরই ভূমিকম্পের কোনও স্মৃতি আছে।
মরক্কোর মোট জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি ৪০ লাখ। আয়তন প্রায় সাড়ে ৪ লাখ বর্গ কিলোমিটার। দেশটির সংস্কৃতিতে আরব, বেরবার, ইউরোপীয় ও আফ্রিকান প্রভাব রয়েছে।
কিউএনবি/অনিমা/১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/রাত ৯:৪৬