বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : আখাউড়ায় দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবকের বিরুদ্ধে এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দুপুরে অভিভাবক সমাবেশ শেষে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার তানভীর আহমেদ আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। এসময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে ফারুক আহমেদ ও গনেস চন্দ্র দাস নামে আরও দুজন শিক্ষক হামলার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, এবছর এসএসসি পরীক্ষায় আখাউড়া উপজেলার বিদ্যালয়গুলোর ফলাফল খারাপ হয়। দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭২ জন পাস করেছে। পাসের হার ৫৪.৫৫। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে বিদ্যালয়গুলোতে অভিভাবক সমাবেশ করছে শিক্ষা অফিস। মঙ্গলবার দুপুরে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন।
মারধরের শিকার ইংরেজি শিক্ষক তানভীর আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, সমাবেশে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ জন্য শিক্ষকদেরকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেন কয়েকজন অভিভাবক। এসময় প্রধান শিক্ষক ছাড়া অন্য শিক্ষকদেরকে সমাবেশে বসার ও কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সমাবেশ শেষে বিদ্যালয়ের দুতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে সহকর্মীর সাথে কথা বলছিলাম। এসময় দেবগ্রাম গ্রামের শেখ সোহেল ও জসিম উদ্দিন দেওয়ানসহ আরও একজন অভিভাবক এসে আমাকে কিল ঘুষিসহ মারধর করে। এসয়ম শিক্ষক ফারুক আহমেদ ও গনেস চন্দ্র দাস আমাকে রক্ষা করতে এসে তারাও হামলার শিকার হয়।
মারধরের শিকার তানভীর আরও বলেন, শেখ সোহেল হুমকি দিয়েছেন আমি বিদ্যালয়ে গেলে আমার হাত পা ভেঙ্গে ফেলবে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। এ ব্যপারে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক ফারুক আহমেদ বলেন, শিক্ষকদেরকে অপমান করার জন্য কিছু লোককে সাজিয়ে সমাবেশে আনা হয়। তানভীর এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের সাথে কথা বলছিল। এসময় তারা তার উপর চড়াও হয়। তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক কোন ক্লাশ নেয় না। প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া অনেক ছাত্রছাত্রীকে চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এজন্যই ফলাফল খারাপ হয়েছে। সমাবেশে বিষয়গুলো আমাদেরকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ সোহেল বলেন, আমি ওই শিক্ষককে মারধর করিনি। উল্টো তিনি আমার সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। হুমকি দেওয়ার কথা সত্য নয়। জানতে চাইলে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। পরে শুনেছি। খোঁজ খবর নিয়ে বিস্তারিত জানাবো। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল হোসেন এ ব্যপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। শিক্ষকের উপর হামলা হয়ে থাকলে ঘটনাটি দু:খজনক। এ ব্যপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ইউএনও অংগ্যজাই মারমাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কিউএনবি/আয়শা/২৯ অগাস্ট ২০২৩,/সন্ধ্যা ৭:১২