স্পোর্টস ডেস্ক : পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় আগামী ৩০ আগস্ট শুরু হবে এশিয়া কাপ। স্বাগতিক দুই দেশের সঙ্গে খেলবে ভারত, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও নেপাল।
মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াই শুরুর আগে অতীতের আসর গুলোতে চোখ রাখার চেষ্টা করেছি আমরা। ফিরে দেখা এশিয়া কাপের তৃতীয় পর্ব সাজানো হয়েছে ২০০০, ২০০৪ ও ২০০৮ আসর নিয়ে।
২০০০: পাকিস্তানের প্রথম শিরোপা
ঢাকায় দ্বিতীয়বারের মতো বসল এশিয়া কাপের আসর। চার দল নিয়ে সেই একই ফরম্যাটে হলো খেলা। প্রতিটি দল একবার করে মুখোমুখি হলো একে অপরের। এরপর সেরা দুই দল খেলল ফাইনাল।
লিগ পর্বে তিন ম্যাচের সব কটিতে জয়ের পর ফাইনালেও শ্রীলঙ্কাকে হারায় পাকিস্তান। এশিয়া কাপের সপ্তম আসরে এসে প্রথমবার ট্রফি জয়ের স্বাদ পায় দেশটি। টুর্নামেন্টের সেরা হয়েছিলেন ইউসুফ ইউহানা (মোহাম্মদ ইউসুফ)। ৪ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি ও ২ ফিফটিতে সর্বোচ্চ ২৯৫ রান করেছিলেন তিনি। ৮ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন আব্দুল রাজ্জাক।
বাংলাদেশ এ আসরেও যথারীতি তিন ম্যাচের সব কটিতে হারে। উদ্বোধনী ম্যাচে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বাংলাদেশ মুখোমুখি হয় শ্রীলঙ্কার। আগে ব্যাট করে জাভেদ ওমর বেলিমের অপরাজিত ৮৫ রানে ভর করে ১৭৫ রানের পুঁজি গড়ে। তবে সনাথ জয়াসুরিয়ার দল ৯ উইকেটে জিতে নেয় ম্যাচটি। এরপর সৌরভ গাঙ্গুলির ভারতের বিপক্ষে হার ৮ উইকেটে। সেদিন হাবিবুল বাশার ও আকরাম খানের ফিফটিতে ৬ উইকেটে ২৪৯ রানের পুঁজি গড়ে স্বাগতিকরা। কিন্তু সৌরভের অপরাজিত ১৩৫ রানের ইনিংসে সহজ জয় তুলে নেয় ভারত। এরপর মাঈন খানের পাকিস্তান বাংলাদেশকে হারায় ২৩৩ রানের বড় ব্যবধানে।
২০০৪: প্রথম জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ
এশিয়া কাপের অষ্টম আসর বসল শ্রীলঙ্কায়। প্রথমবার অংশ নিল ৬ দল। তখনকার চার টেস্ট খেলুড়ে দেশ ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে অংশ নেয় আইসিসির দুই সহযোগী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও হংকং।
প্রথম পর্বে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলে দলগুলো। প্রতি গ্রুপ থেকে সেরা দুটি দল পা রাখে সুপার ফোরে। সেখানে সেরা দুই দল ফাইনালে খেলার সুযোগ পায়। ভারত ও শ্রীলঙ্কা খেলে ফাইনাল। সৌরভ গাঙ্গুলির ভারতকে ২৫ রান হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরে মারভান আতাপাত্তুর শ্রীলঙ্কা। টুর্নামেন্টের সেরা হন সনাথ জয়াসুরিয়া।
বাংলাদেশ এশিয়া কাপের প্রথম সাত আসরের ছয়টি অংশ নিয়েও জয়শূন্য ছিল। শ্রীলঙ্কায় অষ্টম আসরে প্রথম জয়ের মুখ দেখে টাইগাররা। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে হংকংকে ১১৬ রানে হারায় হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বাধীন দল। ৬৮ রানের ইনিংস খেলে সে ম্যাচে সেরা হন জাভেদ ওমর বেলিম।
গ্রুপে পরের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে অবশ্য ৭৬ রানে হারে বাংলাদেশ। তবে এ ম্যাচেও জাভেদ ওমর বেলিম খেলেন ৬২ রানের ইনিংস। দুই ম্যাচে এক জয়ে সুপার ফোরে খেলে বাংলাদেশ। তবে সেখানে হারে তিনটিতেই। ভারতের বিপক্ষে ৮ উইকেটে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০ উইকেটে ও পাকিস্তানের বিপক্ষে হারে ৬ উইকেটে।
২০০৮: আশরাফুল-কাপালির সেঞ্চুরি
আগের আসরের ছয় দল নিয়েই বসে এশিয়া কাপের নবম আসর। প্রথমবারের মতো আয়োজক হয় পাকিস্তান। ভারতও অংশ নেয় আসরে। তবে ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশ এবারও একটি জয় পায়। গ্রুপ পর্বে হারায় সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। তবে এ আসর বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছে মোহাম্মদ আশরাফুল ও অলক কাপালির সেঞ্চুরির জন্য।
আরব আমিরাতের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল সেঞ্চুরি তুলে নেন। ম্যাচটা বাংলাদেশ জিতে নেয় ৯৬ রানে। গ্রুপের পরের ম্যাচে অবশ্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩১ রানে হারে টাইগাররা। এরপর সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হার ৭ উইকেটে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৫৮ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেটে।
করাচিতে ভারতের বিপক্ষে অলক কাপালি ৯৬ বলে ১১৫ রানের ঝলমলে এক ইনিংস উপহার দেন। ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটারের এটিই ছিল প্রথম সেঞ্চুরি। যদিও ম্যাচটা জিততে পারেনি বাংলাদেশ।
১৭ উইকেট নিয়ে এ আসরে টুর্নামেন্টের সেরা হয়েছিলেন অজন্তা মেন্ডিস। ওই আসরেই রহস্য স্পিনার হিসেবে আবির্ভাব ঘটেছিল তার। ফাইনালে ৮ ওভারে ১৩ রান খরচায় ৬ উইকেট তুলে নিয়ে মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারতকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
কিউএনবি/আয়শা/২৭ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ১১:৫৮