বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : কসবা সীমান্ত থেকে কাঁধে একটা মাঝারি পোটলা। বৃষ্টিতে ভিজে ছুটে চলছেন বৃদ্ধ আবুল খায়ের। মুখে তৃপ্তির হাসি। জানালেন, পোটলায় কয়েক দিনের খোরাক। বিজিবি দিয়েছে। ক্ষোভ নিয়ে বললেন, ‘৬৬ বছর বয়স হলো। মেম্বার-চেয়ারম্যানরা তো আর আমারে ভাতা দিলো না। অহন বিজিবি থেইক্কা চাল, ডাইল পাইলাম।’
আবুল খায়েরের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ভারত সীমাম্তবর্তী মধুপুর গামে। বিজিবি-৬০ ব্যাটালিয়ান আয়োজিত খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান থেকে তিনি ফিরছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে জেঠুয়াুমুড়া সরকারি পাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মুহাম্মদ আশিক হাসান উল্লাহ খাদ্যসামগ্রী তার হাতে তুলে দেন। এ সময় বিজিবি-৬০ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর এ এম জাবের বিন জব্বার সহ বিজিবির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সীমান্তের ১০০ গরীব পরিবারের মাঝে প্রত্যেককে পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি ডাল, এক কেজি তেল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি আলু দেওয়া হয়। জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকি উপলক্ষে এ আয়োজন করা হয়।
এসব খাদ্যসামগ্রী পেয়ে খুশি আব্দুল কুূ্দুস নামে আরেক বৃদ্ধ বলেন, ‘এমনিতে সরকারি সহায়তা খুব একটা পাই না। বিজিবির এ সহযোগিতা খুব উপকারে আসবে। দিবসের কর্মসূচী অনুযায়ি সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন এর মসজিদে জোহর নামাজের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শাহাদাত বরণকারী পরিবারবর্গের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এর পূর্বে মসজিদে বাদ ফজর হতে কোরআন খতম করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রিভিলি হতে রিট্রিট পর্যন্ত ব্যাটালিয়নের সকল স্থাপনায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং কর্মরত সকল সদস্য কালো ব্যাজ পরিধান করে।
এছাড়া সুতলতানপুর ব্যাটালিয়নের চিত্তবিনোদন কক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’ এবং ১৯৭৪ সালের ০৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রাইফেলস এর ৩য় রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধুর দেয়া ভাষণের ভিডিওচিত্র প্রদর্শন এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আয়োজিত আলোচনা সভায় সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ আশিক হাসান উল্লাহ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে অধিনায়ক বলেন, ‘আমাদের বাঙ্গালী জাতি অন্যান্য জাতি হতে খুবই ভাগ্যবান যে আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর মত একজন নেতা পেয়েছিলাম। যার কারণে আজ আমরা একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্ববাসীর নিকট মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছি।’তিনি জানান, একেবারে সীমানা ঘেঁষা মানুষদের অনেকেই বেশ গরীব। এ কারণেই আমরা শহর থেকে দূরের এলাকা বেছে নিয়েছি। আমাদের ঐ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।’
কিউএনবি/আয়শা/১৫ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ৮:২৪