লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : পরিচিত ও সকলের পছন্দের সবজিগুলোর মধ্যে একটি কুমড়া। মিষ্টি স্বাদের এই সবজিটি সবাই খেতে পছন্দ করলেও এই সবজির বীজ অবহেলা করে ফেলে দেন অনেকেই। আবার অনেকে জানেই না যে অসাধারণ স্বাস্থ্য উপাদানের জন্য এটি সুপার ফুডগুলোর একটি এই কুমড়ার বীজ।
দেখতে চ্যাপ্টা ও কিছুটা হলদেটে রংয়ের ক্ষুদ্র আকৃতির কুমড়ার বীজে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। কুমড়ার বীজে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বেশকিছু উপাদান পাওয়া যায়। যেমন– প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ও কপার। এছাড়া আরও থাকে কুমড়ার বীজে থাকে ফাইটোকেমিক্যালস। এসব উপাদান মানুষের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
১. কুমড়া বীজের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ওমেগা থ্রি ওজন কমায় আর আমাদের হার্ট ভালো রাখতেও সাহায্য করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখতে সাহায্য করে। রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমানও কমিয়ে আনে।
২. কুমড়ার বীজ হাড়ের সংযোগস্থলে ভেঙে যাওয়া চর্বিগুলোর পরিমাণ বাড়তে দেয় না। ভেঙে যাওয়া চর্বি হাড়ের সন্ধিস্থলে জমা হয়ে ব্যথার সৃষ্টি হয়। এভাবে চর্বি জমতে বাধা দিয়ে সে বাতের ব্যথা কমিয়ে দেয়।
৩. কুমড়ার বীজে ভালো মাত্রায় জিংক পাওয়া যায়। যা পুরুষের উর্বরতা বাড়ায় ও প্রোস্টেটের সমস্যা প্রতিরোধ করে। এতে থাকা ডিএইচইএ (ডাই-হাইড্রো এপি-অ্যান্ড্রোস্টেনেডিয়ন) উপাদান প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৪. কুমড়ার বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, সালফার, জিংক, ভিটামিন এ, বি আর কে, যা চুল উজ্জ্বল ও ঘন করে তুলতে সহায়তা করে। এ ছাড়া কুমড়ার বীজে থাকা কিউকারবিটিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড চুল বাড়তে সাহায্য করে।
৫. কুমড়ার বীজ ভিটামিন ই এবং ক্যারোটিনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে কোলাজেনকে উদ্দীপিত করতে সহায়তা করে।
৬. কুমড়ার বীজে রয়েছে সেরাটোনিন নামের রাসায়নিক উপাদান। যা স্নায়ুতন্ত্রের চাপ কমিয়ে অনিদ্রার সমস্যা কাটাতে সাহায্য করে। এটা ট্রিপটোফ্যানের একটি প্রাকৃতিক উৎস, যা মূলত একটি অ্যামিনো অ্যাসিড। ফলে ঘুম ভালো হয়। এই হরমোন ঘুমের চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৭. যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তারা কুমড়োর বীজ খেতে পারেন। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী। কুমড়ার বীজে থাকা ভিটামিন সি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৮. গর্ভকালীন অবস্থায় কুমড়ার বীজ মা ও ভ্রুণের জন্য পুষ্টিকর। এই বীজে থাকা বেটা-ক্যারোটিন ভ্রূণের হার্ট, হাড়, চোখ, কিডনি, ফুসফুস, নার্ভ উন্নত করতে সাহায্য এর আয়রন ভ্রূণের দেহে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
পুষ্টিবিদদের মতে কুমড়ার বীজ খাওয়ার সর্বোত্তম সময় হল সকালের খাবার বা নাস্তার সাথে খাওয়া। প্রতিদিনের সালাদের সঙ্গে সুস্বাদু কুমড়ার বীজ যোগ করা যেতে পারে।
এছাড়াও বিকালের নাস্তায় ভাজাপোড়া বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে এই বীজ অনন্য। আর বেইক করা খাবারেও কুমড়ার বীজ যোগ করা যায়।
এই বীজ রান্নায় ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে তার আগে বেটে নিতে হবে। এ ছাড়াও এটি অল্প সেঁকে বা কাঁচা খেলেও উপকার পেতে পারেন।
কিউএনবি/আয়শা/১৪ জুলাই ২০২৩,/সকাল ১০:৫৫