স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে ফসলি জমি, পুকুর, দিঘী, নদী সহ প্রায় অর্ধশত স্থানে চলছে মাটি ও বালু কাটার মহোৎসব। আবার মাটি বা বালু কাটার পর রাতদিন ট্রাক্টরে বহনের কারনে ছোট ছোট রাস্তা ভেঙ্গে নষ্ট হবার উপক্রম। তার ওপর ওই সব ট্রাক্টরে ঘটছে অহরহ দূর্ঘটনা। ফলে মাটি ও বালু বোঝাই ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করার দাবিতে এলাকার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী রয়েছে বেশ সোচ্চার। তার পরও থেমে নেই তাদের তৎপরতা।
আর মাটি ও বালু কাটার মহোৎসবে এলাকার কতিপয় জনপ্রতিনিধিদেরও সক্রিয় থাকার অভিযোগ রয়েছে। ফলে গতকাল বুধবার দুপুরে লাউড়ি-রামনগর কামিল মাদ্রাসার সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচি থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাদ্রাসা চলাকালিন সময় মাটিবহনকৃত যান চলাচল বন্ধ রাখার দাবি করা হয়। অন্যথায় মাদ্রাসার সামনের রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষনা দেওয়া হয়।
জানাযায়, উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের লাউড়ি গ্রামে অন্তত: ২০ টি পুকুর ও দিঘী থেকে রাতদিন মাটি ও বালু কাটা চলছে প্রায় ১৫ দিন ধরে। এর মধ্যে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান দুইটি পুকুর ও একটি বড় দিঘী খননের ইজারা নিয়েছেন। আবার একই এলাকায় মন্টু, সোহাগ, মহিদুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, শৈবাল হোসেনসহ আরো কয়েকজন ১৭ টি স্থান থেকে মাটি ও বালু কেটে বিক্রি করছেন। অন্যদিকে হরিদাসকাটি ইউনিয়নের ভূলবাড়িয়া বিল থেকে মাটি কাটছেন মাছনা গ্রামের টিটো, হোগলাডাঙ্গা গ্রামের পলাশ, গরিবপুর হরিহরনদী থেকে বালি তুলছেন ইউসুফ আলী নামে এক বালু ব্যবসায়ী।
এছাড়াও উপজেলার রাজগঞ্জ, রোহিতা, নেহালপুর, চিনাটোলা, মহাদেবপুর, সুন্দলপুরসহ অন্তত: অর্ধশত স্থান থেকে মাটি ও বালি কাটা হচ্ছে।কিন্তু বিপত্তি ঘটে এ মাটি ও বালু বহনের ক্ষেত্রে। অভিযোগ রয়েছে রাতদিন এসব মাটি ও বালু ট্রাক্টরে করে বহন করায় এলাকার ছোট ছোট রাস্তা ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার ওপর পিচের রাস্তায় ওপর মাটি পড়ে কর্দমাক্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে অহরহ ঘটছে দূর্ঘটনা। তবে ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান বলেন, মাটি কি শুধু আমি একা কাটছি। অনেকেই মাটির ব্যবসা করছেন। অথচ একতরফাভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে আমাকে।
গত বুধবার লাউড়ী মাদ্রাসার সামনে রাস্তা দিয়ে মাটিভর্তি ট্রাক্টরের আঘাতে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মোনজিলিন হোসেন আহত হয়। সে বর্তমান চিকিৎসাধীন রয়েছে। মোনজিলিন আহত হবার পর থেকে মাদ্রাসার সামনের রাস্তা দিয়ে মাটিবোঝাই যান চলাচল বন্ধের দাবিতে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। অধ্যক্ষ মাওলানা কেএম মুফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হলেও কার্যত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি শুনেছি। মাটি ও বালু কাটার ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/১০ মে ২০২৩,/রাত ৯:২১