স্পোর্টস ডেস্ক : ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ বিগব্যাশ, পিএসএলসহ অন্য লিগগুলোকে টিকে থাকতে হলে অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলী। ভারতীয় মিডিয়া গোষ্ঠী জি এন্টারটেইন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের মস্তিষ্ক থেকে বের হয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের আইডিয়া। জন্ম হয়েছিলো ভারতের প্রথম ফ্রাঞ্চাইজি লিগ আইসিএলের। কিন্তু বিসিসিআই অনুমোদন না দেয়ায়, তা পরিণত হয় বিদ্রোহী লিগে। শেষ পর্যন্ত যা আর টিকে থাকতে পারেনি ক্রিকেট বিশ্বে।
কিন্তু, প্যান্ডোরার বক্সটা ঠিকই খুলে দিয়ে যায় আইসিএল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে ভারতে জন্ম নেয় আরেক ফ্রাঞ্চাইজি আসর আইপিএল। ললিত মোদীর দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় দারুণ জনপ্রিয়তা পায় শুরুতেই। আর প্রথম ম্যাচেই ব্রেন্ডন ম্যাককালামের সাইক্লোন ইনিংস টোন সেট করে দেয় টুর্নামেন্টটির। রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৭৩ বলে ১৫৮ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে কলকাতার ম্যাককালাম জানিয়ে দিয়েছিলেন আগামীর ক্রিকেটে নান্দনিকতার জায়গাটা দখল করবে ব্যাকরণবহির্ভূত উদ্ভাবনী ক্রিকেট।
এরপর আর কখনোই পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগকে। আর এখন তো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট এই ঘরোয়া লিগটি। বাজারে যার লভ্যাংশই থাকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এ বছর টিভি স্বত্ব বিক্রি হয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকায়। আইপিএল এখন টক্কর দেয় ইপিএল, লা লিগা, ইউসিএলকে।
ভারতের দেখাদেখি এরপর ফ্রাঞ্চাইজি লিগ শুরু করে প্রায় সব দেশ। বাংলাদেশে বিপিএল, ক্যারিবিয়ানে সিপিএল, পাকিস্তানে পিএসএল, অস্ট্রেলিয়ায় বিগ ব্যাশ, শ্রীলঙ্কায় এলপিএল। এদের দেখাদেখি ইংল্যান্ড বাজারে এনেছে আরেকটি নতুন সংস্করণ দ্য হান্ড্রেডস। ১২০ বলের খেলাও যেখানে নেমে এসেছে ১০০ বলে। আবুধাবিতে হয় টি-টেন। এ বছর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা শুরু করেছে এসএ টি-টোয়েন্টি, আমিরাতে হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি।
বিশ্বব্যাপী ব্যাঙের ছাতার মতো এতো টুর্নামেন্ট হলেও এর ভবিষ্যৎ খুব একটা ভালো দেখছেন না ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটার সৌরভ গাঙ্গুলী। সোজা জানিয়ে দিলেন, আইপিএল ছাড়া কারোরই নেই টিকে থাকার খুব বেশি সম্ভাবনা।
তিনি বলেন, ‘ সব দেশেই এখন নিত্যনতুন টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট চলছে। কিন্তু আমার মনে হয় এর বেশিরভাগই টিকবে না। আইপিএলের কথা আলাদা, কারণ ভারতে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি এবং বাজার বড়। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলোর ভবিষ্যতও হয়ত ভালো। তবে আরব আমিরাতেরটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। সেখানে ক্রিকেট নিয়ে মানুষের আগ্রহ কম।’
তবে, টিকে থাকার একটা মূল্যবান পরামর্শও দিয়েছেন সাবেক এই ক্রিকেটার ও ক্রিকেট প্রশাসক। ক্রিকেটের মানোন্নয়নে অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিতে বলছেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছেন জিম্বাবুয়েকে। একসময়কার পরাক্রমশালী দলটা অবকাঠামোগত দুর্বলতায় আজ হারিয়ে যেতে বসেছে ক্রিকেটের এলিট শ্রেণি থেকে।
কিউএনবি/আয়শা/০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/রাত ৮:০০