ডেস্ক নিউজ : ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন এই মামলার সাক্ষী এলজিআরডি ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ অবশিষ্ট জবানবন্দিতে তিনি এই শাস্তি চান। এরপর আসামিপক্ষ থেকে তাকে জেরা করা হয়। আসিফ মাহমুদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় পরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামীম শুনানি করেন। এ সময় অপর প্রসিকিউটর ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সাক্ষীর জবানবন্দিতে বলেন, আমি চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক ছিলাম। আন্দোলনের একপর্যায়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করতে যোগাযোগ শুরু করে। ডিবি কার্যালয়ে আটকে রাখার সময় আমাদের বার বার বলা হয় যে, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (তৎকালীন) নির্দেশে আমাদেরকে ডিবি কার্যালয় তুলে আনা হয়েছে। আন্দোলন প্রত্যাহারে রাজি না হলে আমাদের হত্যা করা হবে মর্মে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে। তবে তারা (ডিবি) দয়া করে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুলে হতাহতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সেদিন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার জবানবন্দিতে বলেন, ওইদিন আমার সামনেই পুলিশের গুলিতে দু’জন নিহত হন। পরবর্তীতে জানতে পারি সেখানে ওইদিন ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেদিন ওখানে পুলিশ চাইনিজ রাইফেল ও শটগান দিয়ে গুলি করে। সেদিন বেলা দেড়টার দিকে আমরা জানতে পারি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
চানখারপুলের হত্যাকাণ্ডের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ ও গুলি চালানো পুলিশ ও কমান্ড কর্তৃপক্ষ দায়ী বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত ৯ অক্টোবর জবানবন্দি দেন আসিফ মাহমুদ।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় চলতি বছরের গত ১৪ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন।
এই মামলায় যে আট আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, তারা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। এই আসামির মধ্যে প্রথম চারজন পলাতক। অন্য চারজন গ্রেফতার।
কিউএনবি/আয়শা/১৬ অক্টোবর ২০২৫,/সন্ধ্যা ৭:২৮