স্টাফ রিপোর্টার চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় প্রতারকের ফাঁদে পা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন সোহেল রানা নামের এক প্রবাসী যুবক। সোহেল রানা প্রতারনার শিকার হয়েছেন বলে দাবী করছেন। এ ঘটনায় তিনি প্রতারক সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ও জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মিতা খাতুনকে আসামি করে যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট, চৌগাছা আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের খড়িঞ্চা ওয়ার্ডের (কমলাপুর) গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ বিশ্বাসের ছেলে সোহেল রানা দীর্ঘ দিন কুয়েতে ছিলেন। ২০১৭ সালে সোহেল রানার দুই বাল্য বন্ধু একই গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও পাশ্ববর্তী সাঞ্চাডাঙ্গা গ্রামের কোবাদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বকুল কুয়েত যাওয়ার জন্য তার নিকট নগদ টাকা ধার করেন। কুয়েত যাওয়ার পর সমুদয় ধার পরিশোধ করবেন। তাদের পরিবারের কষ্টের কথা চিন্তা ও বিবেচনা করে নগদ টাকা ধার দিই। ২০১৭ সালের ২ জুলাই উল্লেখিত ব্যক্তিদের সাথে স্টা¤েপ একটি অঙ্গিকারনামা করা হয়।
আমি বন্ধুত্বের সুবাদে ও সহজ সরল মনে ওই সালের ৭ আগস্ট জাহাঙ্গীর আলম লাভলুকে নগদ ৪ লাখ৭০ হাজার এবং ২ আগস্ট সাইফুল ইসলামকে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ধার দিই। তারা এলাকার ছেলে গরীব অসহায় পরিবারের সন্তান বিদেশ গিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারলে পরিবার ভাল থাকবে। তারা সকলেই সুখে থাকবে এচিন্তা করে টাকা দিই।আমার টাকায় জাহাঙ্গীর আলম লাভলু ও সাইফুল ইসলাম সকল প্রস্তুুতি সেরে কুয়েত গিয়ে কাজে যোগ দেয়। সেখানে কাজ করে তারা ভাল রোজগারও করতে থাকে।
এর পর আমি তাদের নিকট আমার টাকা ফেরত চাই কিন্তু আমার টাকা দিতে তারা অস্বীকার করে। ফোন করলেও ধরে না। তাদের বাড়ীতে যোগাযোগ করলেও কেহ টাকার দায়িত্ব নিতে চাই না। পরে বুঝলাম আমারটাকা দেওয়ার কোন আগ্রহ তাদের নেই। আমি নানাভাবে চেষ্টা করেও ধার দেয়া টাকা তাদের নিকট থেকে আদায় করতে ব্যর্থ হই। তারা কুয়েত যাওয়ার আগে যে ব্যবহার করতো কুয়েতে পৌঁছে সম্র্ণনু আচরণ পরিবর্তন হয়ে যায়। তখনই আমি বুঝতে পারি তারা আমার সাথে প্রতারণা শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমি উভয় পরিবারের সাথে একাধিক বার আলোচনা করেও কোন ফল পাইনি। এরই মধ্যে তারা উভয়ই দেশে ফিরে আসে। দেশে আসার পর অসংখ্যবার টাকার জন্য তাদের নিকট যাই। কিন্তু তারা টাকা দিতে নানা টালবাহানা শুরু করে।
এক পর্যায়ে চলতি বছরের ২৮ আগস্ট যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট, চৌগাছা আমলী আদালতে সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ও জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মিতা খাতুনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করি। এই মামলা করার পর তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। হুংকার দিয়ে বলছে কোন টাকা দেবে না পারলে আদায় কর। ভুক্তভোগী সোহেল রানা বলেন, আমি নিজে বিদেশে গিয়ে হাঁড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে অনেক কষ্টে টাকা আয় করেছি। রক্তপানি করা সেই টাকা প্রতারকদেরকে ধার দিয়ে আমি মহাবিপাকে পড়েছি।
বর্তমানে দেশে ছোট একটি ব্যবসা করে পরিবার পরিজন নিয়ে কোন মতে জীবিকা নির্বাহ করছি। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে দুইজন প্রতারক মিলে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা হজম করে ফেলেছে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা করলেও পাওনা টাকা আজও ফেরত পাইনি। আমার কষ্টের টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগকারী সোহেল রানা আমাদেরকে কুয়েত পাঠান। সেখানে যাওয়ার পর আমাদের প্রায় ৮ মাস আটক করে রেখে নির্যাতন করে। পরে কোন উপায় না পেয়ে দেশে ফিরে আসি। আমরা তার নিকট ৮ লাখ টাকা পাই। তিনি পাওনা টাকা না দেওয়ার জন্য বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিয়েআমাদের নামে মিথ্যে মামলা করেছেন।জাহাঙ্গীর আলম লাভলু মোবাইলে বার-বার কল করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কিউএনবি/আয়শা/০৮ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৬:৪৯