ডেস্ক নিউজ : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘শত বাধা ও জুলুম-নির্যাতন চালিয়েও বর্তমান সরকার জনবিস্ফোরণ ঠেকাতে পারবে না, ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমাতে পারবে না। ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার চিত্র তুলে ধরে আজ বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, রংপুরের গঙ্গাচড়া, পিরোজপুরের নাজিরপুর, যশোরের ঝিকরগাছা, বরগুনার পাথরঘাটায় বিএনপির কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও পুলিশ হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিরোধীদলহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতেই বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বাধা প্রদান করছে। সরকারদলীয় সন্ত্রাসী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ভাংচুর, বানোয়াট মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার এবং বিএনপির সভা-সমাবেশ পণ্ড করা অব্যাহত রেখেছে।
ফখরুল বলেন, ‘গণধিকৃত আওয়ামী লীগ সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং দলীয় সন্ত্রাসীদের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আওয়াজ যেন না ওঠে সেজন্য বিরোধী দলের অস্তিত্ব বিলীন করার কর্মযজ্ঞে মেতে উঠেছে সরকার। সেজন্যই তারা দেশব্যাপী বিএনপি এবং বিরোধী দলগুলোর সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক কর্মসূচির ওপর বেপরোয়া হামলা শুরু করেছে। ‘
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এরই অংশ হিসেবে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর এবং বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট বরগুনা জেলা শাখার আহবায়ক মিল্টন গয়ালীকে গুরুতর আহত করেছে, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় বিএনপির কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ গুলি চালিয়ে ৫০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত এবং ১০-১২ জন নেতাকর্মীকে গ্রপ্তার করে, পিরোজপুরের নাজিরপুরে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে নাজিরপুর শহীদ জিয়া কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক ফয়েজ এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান দুলালসহ অনেক নেতাকর্মীকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আহত করে। ‘
বিএনপি মহাসচিব আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘যশোরের ঝিকরগাছায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নাভারন ইউনিয়ন যুবদল নেতা তরিকুল ইসলাম, মাগুরা ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টুটুল হোসেন, মাগুরা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহপ্রচার সম্পাদক সৌরভ হোসেন, গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আবু মুসা, জামাল গাজী, বাবলু ডাক্তার, মুকুল হোসেন এবং সোহেল রানাকে গুরুতর আহত করেছে। ‘
ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের হামলা, গ্রেপ্তার ও নেতাকর্মীদেরকে আহত করার ঘটনায় এটি সুস্পষ্ট যে, অবৈধ আওয়ামী সরকার জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। বর্তমান সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের কোন দাবি বা অধিকারকে তারা গ্রাহ্য করে না। সরকার তাদের কৃতকর্মের জন্য পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিগুলোকে নির্দয়ভাবে দমন করছে। তবে শত বাধা ও জুলুম-নির্যাতন চালিয়েও বর্তমান সরকার জনবিস্ফোরণ ঠেকাতে পারবে না, ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমাতে পারবে না। ‘
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। পাশাপাশি গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করেন তিনি। ‘
কিউএনবি/আয়শা/০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/রাত ১১:১৯