খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি : জাজিরা উপজেলার পদ্মা সেতু এলাকার পশ্চিম নাওডোবা মৌজায় মায়া বেপারী নামে জাপান প্রবাসী এক নারী জমি ক্রয় করেছেন। রাতের আধারে সেই জমি দখলে নিয়ে মায়া বেপারীর মালিকানা বেদখল করার চেষ্টা করে একটি প্রভাবশারী চক্র। ইতোমধ্যে মহাসড়কের সরকারী গাছ কেটে সেই জমি ভরাট কাজ শুরু করে। জমির মালিকানা তথ্য সম্বলিত মায়া বেপারীর সাইনবোর্ডও সরিয়ে ফেলেছে তারা। প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেছেন প্রবাসী নারী।স্থানীয় ভাবে জানাগেছে, জমির মূল্য নির্ধারণ শেষে ক্রেতা মায়া বেপারীর কাছ থেকে সিংহভাগ পরিমান টাকা বায়না বাবদ গ্রহণ করে দাতা পক্ষ।
পরে ক্রয়সূত্রে জমির মালিকানা দাবী করে মায়া বেপারী জমিতে সাইনবোর্ড স্থাপন করে। বর্তমান সময়ে জমির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই জমি বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রির কথা বলে লাখ লাখ টাকা বায়না গ্রহণ করে। এর অন্তরালে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের হাতছানি রয়েছে। এখন রাতের আধারে সেই জমি থেকে প্রবাসী মায়া বেপারীর সাইনবোর্ড ফেলে দিয়ে জমি ভরাটের চেষ্টা চালায়। সংবাদ পেয়ে রাতেই মায়া বেপারী তার ক্রয়কৃত জমিতে গিয়ে ভরাট কাজে বাধা প্রদান করেন।এই বিষয়ে প্রবাসী নারী পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি লিখিছেন, প্রবাসী নারী মায়া বেপারী (৪৫) মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঠাল বাড়ী গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী বেপারীর মেয়ে।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাপান প্রবাসে রয়েছেন। গত বছরের ২৩ মে দেশে ফিরে একই উপজেলার কুতুবপুর ইমানউদ্দিন বেপারী কান্দি গ্রামের মৃত কাদির বেপারীর ছেলে গফুর বেপারীর কাছ থেকে জাজিরা উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা মৌজার বিআরএস ৫১৯ নং খতিয়ানে ১৮৩১ নং দাগের ৩৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে বায়না বাবদ ২৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করে। জমি ক্রয়ের বিষয়টি আইনগত রূপ দিতে নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না চুক্তি সম্পন্ন করে মায়া বেপারী পুনরায় জাপান প্রবাসে চলে যায়। গত মে মাসে তাকে জমি রেজিষ্ট্রি করে দিবে জানালে মায়া বেপারী ২ মাসের ছুটি নিয়ে দেশে ফিরেন। সেই থেকে অদ্যবধি ক্রেতাকে জমি রেজিষ্ট্রি করে না দিয়ে প্রতারণা করে আসছে বিক্রেতা গফুর বেপারী ও প্রভাবশালী চক্রটি।
জাপান প্রবাসী মায়া বেপারী বলেন, ১ বিঘা জমি ৪৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত পাকা করে বায়না চুক্তি স্ট্যাম্পে লিখি। পরে বায়না বাবদ ২৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করি। গত ২০ মে বিক্রেতা আমাকে জমি দলিল করে দিবে বলে দেশে চলে আসি। জমি রেজিষ্ট্রি করার জন্য জাজিরা সাব রেজিষ্ট্রার অফিসে গেলে জানতে পারি এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এছাড়া আলী আহসান শোভন বেপারী নামে নড়িয়া এলাকার আরো একজন একই জমির ক্রেতা দাবী করে। সেও নাকি একই জমি ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ক্রয় করেছেন। ক্রয় বাবদ ৩৫ লাখ টাকা বায়না জমির মালিক গফুর বেপারীকে প্রদান করেছেন। তাই রেজিস্ট্রি করতে না পেরে সেখান থেকে ফিরে আসি।
তার পর থেকে গফুর বেপারী, রেজাউল মোল্যা, রুবেল বেপারী ও শাহাব উদ্দিন বেপারী মিলে আমার ক্রয়কৃত জমির সাইনবোর্ড ফেলে দেয়। এখন রাতের আধারে সেই জমি ভরাট কাজ শুরু করে। রাতেই সংবাদ পেয়ে জমিতে গিয়ে ভরাট কাজে বাধা দিয়েছি।আমি জাপান প্রবাসে থেকে চাকরি করি। ২ মাসের ছুটি নিয়ে এসে সারে তিন মাস পার করছি তবুও জমি দলিল করে দেয় না। এবার হয়তো আমার চাকুরিটাও থাকবে না। আমি বিদেশে পরিশ্রম করে দেশে রেমিটেন্স পাঠাই। সরকারকে ট্যাক্স ও ভ্যাট দেই। আমার এই বিপদে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
কিউএনবি/অনিমা/২৯ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৩:০৪