মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০১:২২ পূর্বাহ্ন

নিবন্ধন স্থগিত তিন মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০২২
  • ৩৩৪ Time View

ডেস্ক নিউজ : রাজধানীর তিনটি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খোলাবাজারে নিয়ম না মেনে ডলার কেনাবেচা করায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নিবন্ধন ছাড়াই বিদেশি মুদ্রা লেনদেন করায় ১১টি মানি এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নজরদারিতে খোলাবাজারে ডলারের উত্তাপ কিছুটা কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তদারকির কারণে অনেক মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ডলার কেনাবেচা করতে ভয় পাচ্ছে।

লাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, খোলাবাজারে নিয়ম না মেনে ডলার কেনাবেচা করায় ফকিরাপুলের বিসমিল্লাহ মানি চেঞ্জার, পুরানা পল্টনের অঙ্কন মানি চেঞ্জার এবং নয়াপল্টনের ফয়েজ মানি এক্সচেঞ্জের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ১১টি এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদিও এসব প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। সিরাজুল ইসলাম আরো বলেন, ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০টি পরিদর্শক দল অভিযান পরিচালনা করছে। বাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।

রাজধানীর বাজারে ডলারের দাম গতকাল সোমবার কিছুটা কমে বিক্রি হয়েছে ১০৮ টাকায়। খোলাবাজারে ব্যবসায়ীরা ১০৭ টাকা ৫০ পয়সায় কিনে ১০৮ টাকায় বিক্রি করেছেন। গত মঙ্গলবার একলাফে যা ১১২ টাকায় উঠেছিল। রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল ও বায়তুল মোকাররম এলাকার বেশ কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, গতকাল সকাল থেকে তারা ডলার কিনছে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা রেটে। এক বছরে আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েছে ১১.৭০ শতাংশ। আর ব্যাংক ও খোলাবাজারে বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দরের চেয়ে ব্যাংকে ক্ষেত্রবিশেষে ১০ টাকা আর খোলাবাজারে ১৮ টাকা বেশিতে বিক্রি হতে দেখে অভিযান শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গুলশানের একটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জানান, ডলার কেনার জন্য অনেকেই আসছেন, তবে বিক্রি করার লোক কম। এ ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তদারকির কারণে অনেক ব্যবসায়ীই ডলার কেনাবেচা করতে ভয় পাচ্ছেন। এর আগে গত ২৬ জুলাই রেকর্ড ১১২ টাকায় পৌঁছেছিল ডলারের দাম। মনিটরিংয়ের কারণে পরদিন বুধবার দাম ১০৮ টাকায় নেমে আসে। গত বৃহস্পতিবার দাম দুই টাকা বেড়েছিল। গত সপ্তাহে কয়েকজন মানি চেঞ্জার ডলারপ্রতি ১১২ টাকা চার্জ নেওয়ার পর বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন পরিদর্শনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাজধানীতে ১০টি দল মোতায়েন করে।

এদিকে চলমান ডলারসংকট নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম। আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ডলার রেট ৯৪.৭৫ টাকা প্রতিটি ব্যাংক যেন দেয় এবং বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ডলার লিমিট কমানোসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেন তিনি। গত রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে নবনিযুক্ত গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব প্রস্তাব দেন।

চেম্বার সভাপতি ডলারের নির্ধারিত রেট নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনে কঠোর মনিটরিং চালু করা, নির্দেশনা অমান্য করলে এডি অথবা ব্যাংকগুলোকে শাস্তি এবং বড় অঙ্কের জরিমানার আওতায় আনা, মানি এক্সচেঞ্জগুলোকে কঠোরভাবে মনিটর করা, ক্রেতাদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করা, বিধিবহির্ভূত ও দলিল প্রমাণ ছাড়া কারও কাছে ডলার পাওয়া গেলে তা বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান। একই সঙ্গে ট্যুরিস্ট ভিসায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ডলার নেওয়ার লিমিট কমানো ও ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের মূল্যের ব্যবধান এক থেকে দুই টাকার মধ্যে রাখার প্রস্তাব রাখেন তিনি।

মাঠে বাংলাদেশ ব্যাংক ও গোয়েন্দা সংস্থা

ইচ্ছামতো দাম হাঁকিয়ে দেশের ডলারের বাজার অস্থিতিশীল করছে গুটিকয়েক মানি এক্সচেঞ্জ। এমন ১৬৫টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও একটি গোয়েন্দা সংস্থা। পরে যৌথ অভিযানে নামে সংস্থা দুটি। ব্যবস্থা নেওয়া হয় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি অবৈধভাবে ডলার মজুদকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

গত রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০টি ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার ৩০টি টিম মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে সরেজমিন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থাকে আরো নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেশের কার্ব মার্কেটে স্থিতিশীলতা ফেরাতে আহ্বান জানিয়েছেন দেশীয় আমদানি-রপ্তানিকারকরা। গতকালও কয়েকটি মানি চেঞ্জার পরিদর্শন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন দল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাজার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই পরিদর্শন অব্যাহত থাকবে। রেমিট্যান্স বাড়ছে। আমদানি কমছে। আশা করছি, শিগগিরই ডলার বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ’

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০২ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৬:৫৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit