আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। আর তাইওয়ানে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সম্ভাব্য সফরকে ঘিরে দুই দেশের সেই উত্তেজনার পারদ যেন বাড়ছেই।
যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় ক্ষমতাধর এই রাজনীতিকের তাইওয়ান সফর রুখতে ইতোমধ্যেই সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দিয়ে রেখেছে চীন। তবে এই পরিস্থিতিতেই চীনা হুমকিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মঙ্গলবার (২ আগস্ট) তাইওয়ান যেতে পারেন ন্যান্সি পেলোসি। বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি মঙ্গলবার রাতে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেই পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পেলোসির সম্ভাব্য এই সফর সম্পর্কে জানানো হয়েছে এমন ব্যক্তিরা এই বিষয়ে রয়টার্সকে জানিয়েছে।
এদিকে পৃথক এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি মঙ্গলবার তাইওয়ান সফরে যাচ্ছেন বলে তিনটি সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া পেলোসি তাইওয়ান সফরে গেলে চীন ‘আসলে বসে থাকবেন না’ এমন হুমকিকে যুক্তরাষ্ট্র ভয় পায় না বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
রয়টার্স বলছে, পেলোসির সফরসূচি সম্পর্কে জানেন এমন একজন ব্যক্তি বলেছেন, মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের তাইওয়ান সফরের বেশিরভাগ কর্মসূচি বুধবার নির্ধারিত রয়েছে। এদিনই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের সাথে পেলোসির বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে। আর পেলোসির প্রতিনিধিদল বুধবারের প্রথম দিকে তাইওয়ানে পৌঁছাবে।
তবে ওই ব্যক্তি বলেছেন, ‘সবকিছুই এখনও অনিশ্চিত।’
উল্লেখ্য, তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। অবশ্য তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং।
গত বছরের অক্টোবরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছিলেন, মূল ভূখণ্ডের সাথে তাইওয়ানের পুনরায় একত্রীকরণ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে। এজন্য সামরিক পথে অগ্রসর হওয়ার বিষয়টিও খোলা রেখেছে বেইজিং।
অন্যদিকে চীনের প্রদেশ নয়, বরং নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে থাকে তাইওয়ান। চীনা প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের জবাবে সেসময় তাইওয়ান জানায়, দেশের ভবিষ্যৎ তার জনগণের হাতেই থাকবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করার পর তাইওয়ান দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যদিও তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। এরপর থেকে তাইওয়ান নিজস্ব সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে।
কিউএনবি/অনিমা/০২ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/সকাল ১০:৫৩