জসীম উদ্দিন জয়নাল,পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধীনে মুজিববর্ষে হতদরিদ্র দুস্থ স্বামীহারা বিধবা নারীসহ গৃহহীন- ভূমিহীন প্রতিবন্ধী ফিরোজ আলম প্রতিনিয়ত যার সংসার চলে ভিক্ষা করে সে পাকা বাড়ীতে ঘুমাবে সেটা শুধু তার স্বপ্ন ছিল মানুষের দুয়ারে দুয়ারে খোলা আকাশে যার রাত কেটেছে দীর্ঘ বছর ধরে ভূমিহীন-গৃহহীন ফিরোজ আলমের। হঠাৎ একদিন প্রতিবন্ধী আনোয়ার শুনেছে যাদের জায়গা-জমি নেই তাদেরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমিসহ একটা সেমি পাকা ঘর করে দিচ্ছে। একদিন সে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৃলা দেব এর কাছে যান তিনি গিয়ে তার বিস্তারিত তুলে ধরার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সহায়তায় মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি ঘর পেয়ে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরন হলো প্রতিবন্ধী ফিরোজ আলমের।
৪৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ফিরোজ আলম বলেন বাবার তেমন কোন সম্পত্তি নেই ভিক্ষা করে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে আমার স্ত্রী সহ দুই ছেলে প্রতিবন্ধী তাদের নিয়ে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে ঠিকে আছি কোনরকম। জড়াজীর্ণ ভাঙ্গা পলিথিনের চাউনি দেওয়া কুড়ে ঘরে জন্ম থেকে বাক প্রতিবন্ধি দুই ছেলেকে নিয়ে জবুথুবু হয়ে কোন রকমে রাত্রিযাপন করতেন। পলিথিনের তৈরি ঘরটিতে শীতে কিংবা রোদ বৃষ্টি ঝড়ে থাকতে হয়েছে এভাবেই। মাঝে মাঝে বৃষ্টির রাতে আশেপাশের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিতেন গরু ঘর কিংবা অন্যের বারান্দায়। মাটিরাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন জায়গা মানুষের দূয়ারে দূয়ারে প্রতিদিন ভিক্ষা করে প্রতিবন্ধী দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হয়। কোন কোন সময় শরীর অসুস্থ হলে একদিন ভিক্ষা করতে না পারলে না খেয়ে থাকতে হয় পরিবারকে । পেট চালানোই দায় যেখানে সেখানে নতুন ঘর পাওয়া প্রতিবন্ধী ফিরোজ আলমের এর জন্য আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া আর কি হতে পারে।
প্রতিবন্ধী তার স্ত্রী পুত্রকে নিয়ে সব সময় একটি নতুন ঘরের স্বপ্ন দেখতেন হতদরিদ্র ফিরোজ আলম। যে ঘরে পরিবার নিয়ে থাকবেন আনন্দ আর একটু আরামে। বৃষ্টি এলে বা ঝরের রাতে পরের ঘরে আশ্রয় নিতে হবে না যে ঘরটি ছেড়ে। আকাশ কুসুম কল্পনা বা স্বপ্ন নয় বাস্তবেই প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক পেলেন স্বপ্নের নিবাস। ১লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ব্যায়ে নির্মিত ঘরটি একেবারে বিনামূল্যে পেয়ে আবেগে কেঁদে ফেলেন তিনি। শুধু কি ঘর? না ঘরই নয়, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজ তৃলা দেব এর সহযোগিতায় প্রতিবন্ধি ভাতা করে দেওয়া হয়েছে।প্রতিবন্ধী ফিরোজ আলম দুহাত তোলে চোখের আনন্দাশ্রু মুছে দোয়া করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজ তৃলা দেব এর জন্য।
আবেগাপ্লুত ফিরোজ আলম বলেন, আল্লাহ তুমি যেন শেখ হাসিনারে আমার মত আরো যারা অসহায় আছে তাদের কে ঘর দেওয়ার শক্তি সামর্থ্য দাও। মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজ তৃলাদেব বলেন, মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষ ও গৃহহীন থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি সহ গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজ তৃলা দেব বলেন, অসহায় ভূমিহীন-গৃহহীন ও ছিন্নমূল মানুষকে পুনর্বাসিত করে জাতীয় অর্থনীতির মূলধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষে মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ব্যাতিক্রমী উদ্যেগ আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে মাটিরাঙ্গা উপজেলার ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন।
কিউএনবি/আয়শা/৩০ জুলাই ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/রাত ৮:৩৫