রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন

আরও ২৬ হাজার ২২৯টি ঘর হস্তান্তর বৃহস্পতিবার

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২০ জুলাই, ২০২২
  • ১১৪ Time View

ডেস্ক নিউজ : সরকারের ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের কাছে আরো ২৬ হাজার ২২৯টি ঘর হস্তান্তর করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি এই গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের কাছে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করবেন।  

ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের কাছে ভার্চুয়ালি ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করবেন।’

তিনি আরো জানান, অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পাঁচটি জেলার পাঁচটি স্থানের সাথে সংযুক্ত থাকবেন।

স্থানগুলো হচ্ছে- লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলাধীন চরকলাকোপা আশ্রয়ন প্রকল্প, বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলাধীন গৌরম্ভা আশ্রয়ন প্রকল্প, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলাধীন চর ভেড়ামারা আশ্রয়ন প্রকল্প, পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন মহানপাড়া আশ্রায়ন প্রকল্প ও মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলাধীন জাঙ্গালিয়া আশ্রয়ন প্রকল্প।

আহমদ কায়কাউস জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সবগুলো উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করবেন।

তিনি আরো বলেন, আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে দেশব্যাপী মোট ৬৭ হাজার ৮০০টি ঘর দেয়া হচ্ছে। এই ৬৭ হাজার ৮০০ ঘরের মধ্যে ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বাকী ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর নির্মাণাধীন রয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২০২২ পর্যন্ত ১ লাখ ৮৫ হাজার ১২৯টি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি, ৬৩ হাজার ৯৯৯ গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার তাদের মাথার উপর ছাদ পায়। আর গত বছরের ২০ জুন আশ্রায়ন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৩০টি পরিবার ঘর পায়।  
আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে সরকার ঘরগুলোকে অধিকতর টেকসই ও জলবায়ু সহিষ্ণু করে গড়ে তুলতে ঘরগুলোর নক্সা পরিবর্তন করেন। এতে ঘরগুলোর নির্মাণ খরচ বেড়ে যায়। আর এজন্যই এখন গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষরা দুই শতাংশ জমির ওপর আরো উন্নতমানের টিন-শেডের আধা-পাকা ঘর পাবে।

ঘরগুলোকে অধিকতর টেকসই করে গড়ে তোলায় প্রতিটি ঘরের নির্মাণব্যায় ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত হয়। সরকার ঘরগুলোকে অধিকতর টেকসই করে নির্মাণ করতে মজবুত কড়ি কাঠ, পাথরের সর্দল ও রিইনফোর্স কংক্রিট কলাম (আরসিসি) পিলার ব্যবহার করা হয়েছে।

আহমদ কায়কাউস জানান, ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত ঘরের নির্মাণের জন্য ৪০২৮ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ের আওতায় চর অঞ্চলের জন্য ১ হাজার ২৪২টির মতো বিশেষভাবে নক্সকৃত ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড় কিংবা বন্যার মতো যে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি মাথায় রেখে বিশেষভাবে স্থানান্তরযোগ্য করে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে- যাতে করে বাড়িগুলো অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের আবাসনের জন্য সরকার খাস জমি ছাড়াও ১৯১ দশমিক ৭৯ একর জমি ক্রয় করেছে। বিশ্বের এটা একমাত্র দৃষ্টান্ত যে-কোন দেশের সরকার এ ধরনের কাজে জমি ক্রয় করেছে।
জমি ক্রয়ের জন্য ১৩৪ দশমিক ৪৯ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।

ক্রয়কৃত জমিতে যে ঘরগুলো নির্মিত হয়েছে- সেখানে মোট ৮ হাজার ৪৬২টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের আবাসনের ব্যবস্থা হবে।

মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে সরকার এই প্রকল্পের জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে ৫ হাজার ৫১২ দশমিক ০৪ একর জমি উদ্ধার করে। সরকারের উদ্ধারকৃত এই খাস জমির বাজার মূল্য ২ হাজার ৯৬৭ দশমিক ০৯ কোটি টাকা। আশ্রায়ন প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ থেকে মোট ৫ লাখ ৯ হাজার ৩৭০টি পরিবারের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই প্রকল্পের আওতায় পুনর্বাসিত পরিবারগুলোকে তিন মাসের জন্য ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সরকারের নীতি অনুযায়ী, এই সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক, বিধবা ও অসমর্থ মানুষদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য কমিউনিটি সেন্টার, মসজিদ, গোরস্থান, পুকুর ও রাস্তাঘাটও তৈরি করা হচ্ছে।

প্রকল্প এলাকাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ফলদ, বনজ ও ঔষধী গাছ লাগানো হয়েছে। গৃহহীনদের কৃষি কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্যও উৎসাহিত করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবিত আশ্রায়ন প্রকল্পটির একটি অনন্য বৈশিষ্ট হচ্ছে- জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)’র আবাসনের সাথে এর একটি বিশেষ যোগাযোগ আছে।

বিভিন্ন টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে পথে কেবলমাত্র এই গৃহ নির্মাণ প্রকল্পটিই হতে পারে প্রধান পদচিহ্ন।  

অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, নারী ক্ষমতায়নের মতো ক্ষেত্রগুলোতে এই আবাসন প্রকল্প ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রেখেছে। ব্রিফিংকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।- বাসস

কিউএনবি/অনিমা/ ২০.০৭.২০২২/ রাত ১০.৪৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit