মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

বাল্যবিবাহ হয় কাজী কেফায়েতুল্লাহর পরামর্শে

খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি ।
  • Update Time : রবিবার, ৩ জুলাই, ২০২২
  • ২৯৮ Time View

খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন কৌশলে বাল্যবিবাহ হয়ে থাকে। করোনা কালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ ছুটিতেই বাল্য বিবাহ অতিমাত্রায় হয়েছে। এই বাল্য বিবাহের সাথে সরাসরি ভাবে জড়িত রয়েছেন বিবাহ ও তালাক নিবন্ধক (কাজী)। তাদের পরামর্শে ও সহায়তায় অধিকাংশ বাল্যবিবাহ হয়। এমনি একজন কাজী ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের কেফায়াতুল্লাহ। তিনি নিজেও বাল্য বিবাহ দিয়ে থাকেন। কাজীর অনুপস্থিতিতে তার ছেলে স্কুল শিক্ষক মোতালেব হোসেনও পিতার দেখানো পথে হাটেন।

তিনি এই পেশায় রয়েছেন তিন যুগের বেশী সময় ধরে। বিবাহ নিবন্ধন আইনে কনের ক্ষেত্রে ১৮ ও বরের ক্ষেত্রে ২১ বছর ধায্য রয়েছে। সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় পেক্ষাপটে বিয়ের পরে স্বামীকেই স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্বভার গ্রহণ করতে হয়। তাই ২১ বছরের নিচে ছেলেরা বিয়ে করার সাহস করে না। মেয়েরা যেহেতু স্বামীর উপর নির্ভরশীল তাই ভালো বরের সন্ধানে থাকেন কনের পিতা-মাতা। টাকাওয়ালা বরের সন্ধান পেলে কনের বয়স ১৩ হলেও সমস্যা হয় না। কাজীর কাছে গেলেই বয়সের সমাধান মিলে।

এমনই এক কনে নবম শ্রেণিতে পড়–য়া শিউলি আক্তার। তার জন্ম তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০০৬। ২০২১ সালের ১ জুন শিউলির বয়স প্রায় ১৫ বছর। পিতা আজাহার হাওলাদার ও মাতা নারগিস মিলে মেয়ে শিউলির জন্য তাদের পছন্দের পাত্রের সন্ধান পায়। মেয়ের বয়স ১৫ হওয়ায় তার বিয়ে দিতে সমস্যার সম্মুখিন হন তারা। পরে কাজী কেফায়েতুল্লাহ (উত্তম আলী) শিউলির জন্ম মাস ও তারিখ ঠিক রেখে জন্ম সাল ২০০৩ দেখিয়ে শিউলিকে বিয়ে দেন। সেই বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় বিষয়টি প্রকাশ পায়। এখন এই নিয়ে বিপাকে রয়েছেন এই কাজী।

শিউলির বর মেহেদী হাসান জানায়, শিউলির অপ্রাপ্ত বয়স গোপন রেখে কাজী কেফায়েতুল্লাহ বিয়ে নিবন্ধন করেন। উভয় পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেনমোহর চুড়ান্ত হয় ২ লাখ টাকা। পরে কাজী কনে পরিবারের সাথে আলাদা চুক্তি করে দেনমোহর ৪ লাখে রূপান্তরিত করে। এমনি ভাবে সে এলাকায় অসংখ্য বাল্যবিয়ে দিয়ে থাকেন। ধানকাঠি এলাকায় গিয়ে জানাগেছে, কনের বয়স যত কমই হোক না কেন, এই কাজী ও তার ছেলে মিলে বিয়ে নিবন্ধন করতে পারে। জুন মাসে কাজির অফিসে অডিট হয়েছে। সেখানেও অনিয়ম ধরা পড়েছে।

এই বিষয়ে কাজী কেফায়েতুল্লাহ বলেন, আমার বিরুদ্ধে এলাকায় কিছু লোকজন কানকথা ছড়ায়। আমার কোন সহকারী নাই। আমার অনুপস্থিতিতে ছেলে মোতালেব নিবন্ধনের কাজ করে। তবে আমরা কোন বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করি না। এই বিয়ে নিয়ে সমস্যা চলছে তাই এই বিষয় নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। অডিটে যে ত্রুটি ধরা পড়েছে তার জন্য আমি জেলা রেজিষ্ট্রারের কাছে গিয়েছিলাম। সে গত তিন বছরের বিবাহ নিবন্ধন বই নিয়ে যেতে বলেছে। আসি তা প্রস্তুত করে জেলা নিবন্ধকের সাথে দেখা করব।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৩ জুলাই ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit