স্পোর্টস ডেস্ক : লর্ডস থেকে ট্রেন্টব্রিজ হয়ে লিডস; ভেন্যু বদল হলেও রানের বন্যা থামেনি ড্যারিল মিচেলের ব্যাটে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে টানা তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকালেন নিউজিল্যান্ডের এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। যাতে ওলট-পালট হলো রেকর্ড বইয়ের পাতা।
শুক্রবার হেডিংলির লিডস স্টেডিয়ামে তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ৯৫ থেকে ইংলিশ স্পিনার জ্যাক লিচকে লং-অফ দিয়ে ছক্কা মেরে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন মিচেল। পরে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে তার উইলো থেকে আসে ২২৮ বলে ১০৯ রান। যে ইনিংসে ৯টি চারের সঙ্গে ছিল ৩টি ছক্কা।
আর এরই সঙ্গে টেস্ট ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে দেশের বাইরে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেই সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন কিউয়ি এই মিডল অর্ডার।
টেস্টে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রতিটিতেই সেঞ্চুরি আছে আরও ৬ জনের। তবে সেগুলোর সবই এসেছে স্বাগতিক হিসেবে নিজ দেশের মাটিতে।
আর এই কীর্তি প্রথম গড়েন ইংল্যান্ডের কেন বেরিংটন, ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। পরের জন অবশ্য পাকিস্তানেরই একজন, ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেন শোয়েব মোহাম্মদ। ২০০২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে একই কাজ করে দেখান অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন।
এছাড়া ২০০৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইউসুফ, ২০১৩ সালে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেই নিউজিল্যান্ডের রস টেইলর ও ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের বিরাট কোহলি সিরিজের তিন টেস্টেই সেঞ্চুরি হাঁকান।
এদিকে, টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরি করা নিউজিল্যান্ডের পঞ্চম ব্যাটার হলেন ড্যারিল মিচেল। আগের চার জন হলেন মার্ক বার্জেস (১৯৬৯-৭২), রস টেইলর (২০১৩), টম ল্যাথাম (২০১৮-১৯) ও কেন উইলিয়ামসন (২০২০-২১)।
এখানেই শেষ নয়, ৩১ বছর বয়সী মিচেল ভেঙে দিয়েছেন ৭৩ বছরের এক পুরনো রেকর্ডও। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি সিরিজে নিউজিল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রান এখন তারই দখলে।
চলমান সিরিজে ৫ ইনিংসে এখন পর্যন্ত মিচেলের রান ৪৮২। ১৯৪৯ সালে ইংল্যান্ড সফরে ৪ টেস্টে ৬ ইনিংসে ৪৬২ রান করে এতদিন রেকর্ডটি ছিল মার্টিন ডনেলির।
বাঁহাতি ব্যাটার ডনেলি নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলেছেন মাত্র ৭টি, যার সবগুলোই ইংল্যান্ডের মাটিতে। ১৯৩৭ সালে অভিষেক সিরিজে তিন ম্যাচে খুব একটা ভালো করতে পারেননি তিনি। ১২ বছর পর পরের সিরিজে লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টে তিনি করেন ডাবল সেঞ্চুরিসহ চার শতাধিক রান।
এদিকে, মিচেলের এমন রেকর্ডের দিনে ৩২৯ রানে প্রথম ইনিংস শেষ করেছে নিউজিল্যান্ড। জবাবে কিউয়ি পেসারদের তোপের মুখে মাত্র ৫৫ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। ট্রেন্ট বোল্ট ৩টি, নেইল ওয়াগনার ২টি ও টিম সাউদি ১টি উইকেট নেন।
এই তিন পেসারের সামনে এক জনি বেয়ারস্টো ছাড়া দাঁড়াতেই পারেনি ইংলিশ ব্যাটিং লাইনের কেউই। অ্যালেক্স লিস ৪, জ্যাক ক্রাউলি ৬, অলি পোপ ও জো রুট পাঁচ রান করে আউট হন। যার ফলে মাত্র ২১ রানেই ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।
এ অবস্থায় জনির সঙ্গে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন অধিনায়ক বেন স্টোকস। তিনিও সাজঘরে ফেরেন ব্যক্তিগত ১৮ রান করে। এরপর শূন্য রানেই আউট হন বেন ফোকস। ফলে মাত্র ৫৫ রানেই ৬টি উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে দলটি।
তবে সেখান থেকে জেমি অভারটনকে সঙ্গী করে দলকে উদ্ধার করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বেয়ারস্টো। ইতোমধ্যেই ১০২ রানের জুটি গড়েছেন এই দুজন। যাতে ইংল্যাডের সংগ্রহ পৌঁছেছে ১৫৭ রানে। জনি ৭৩ রানে এবং জেমি ৪২ রানে ক্রিজে আছেন।
কিউএনবি/অনিমা/২৪.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ১০:১৫