স্পোর্টস ডেস্ক : ইতালির বিপক্ষে ‘লা ফিনালিসিমা’য় আর্জেন্টিনার রাইটব্যাক পজিশনে খেলেছিলেন নাহুয়েল মলিনা। ২৪ বছর বয়সী রাইটব্যাককে আর্জেন্টিনা দলে এ পজিশনে অটোচয়েজ বলা চলে এখন। গত কোপা আমেরিকায় ও ক্লাবের হয়ে পারফরম্যান্সে নজর কেড়েছেন তার জাতীয় দলের অধিনায়ক লিওনেল মেসির। মেসির চোখে তিনিই আগামীর দানি আলভেজ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের কিংবদন্তির সঙ্গে এই তুলনা নিশ্চয়ই উপভোগ করছেন উদিনেসের রাইটব্যাক।
উপভোগ তো করারই কথা। এ রাইটব্যাককে যে দলে ভেড়াতে চায় ইউরোপের বশ কয়েকটি বড় ক্লাব। সে তালিকায় আছে য়্যুভেন্তাস,বার্সেলোনাম,আর্সেনাল ও আতলেতিকো মাদ্রিদের মতো ক্লাবের নাম। তবে তাকে নিয়ে যুদ্ধটা নাকি য়্যুভেন্তাস ও বার্সেলোনার মধ্যেই বেশি জমাট। এ নিয়ে য়্যুভেন্তাসের একটু ক্ষ্যাপার কথাও। বার্সেলোনা যে ইদানীং য়্যুভেন্তাসের খাবারে নজর দিচ্ছে!
পিএসজির সঙ্গে এই মৌসুমেই চুক্তি শেষ হয়েছে উইঙ্গার অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার। আসছে মৌসুমে তিনি য়্যুভেন্তাসে যোগ দিচ্ছেন এটা মোটামুটি নিশ্চিতই ছিল। কিন্তু সেখানে বাগড়া দিয়েছে বার্সেলোনা। শেষ মুহূর্তে ডি মারিয়াকে দলে ভেড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটি। মারিয়াও তুরিনের বুড়ির প্রস্তাব ঝুলিয়ে আলোচনায় বসেছেন বার্সেলোনার সঙ্গে। ব্যাটে বলে মিলে গেলে তাই য়্যুভেন্তাসে নয় বরং বার্সেলোনায় দেখা যেতে পারে আর্জেন্টিনার কোপা আমেরিকা জয়ের নায়ককে।
এই অনিশ্চয়তার মাঝেই নতুন উপদ্রব হয়ে এসেছে মলিনার দলবদলে বার্সেলোনার বাগড়া। য়্যুভেন্তাসের রক্ষণভাগ বয়সের ভারে ন্যুজ্ব। তাই এই তরুণের দিকে কয়েক মৌসুম থেকে নজর সিরি ‘আ’ জায়ান্টের। মলিনা যে য়্যুভেন্তাসে যাবেন সেটা মোটামুটি নিশ্চিতই ছিল এতদিন। তার দল উদিনেসের চাওয়াও তিনি ইতালিয়ান কোন দলে যান যেন ভালো দাম পাওয়া যায়। তার গায়ে ৩০ মিলিয়নের প্রাইস ট্যাগ লাগিয়ে রেখেছে উদিনেস।
বার্সেলোনাও খুঁজছে মলিনার মতো রাইটব্যাক। দানি আলভেজের বিকল্প খুঁজে পেতে তো কম খরচ করেনি তারা। জুনিয়র ফিরপো, সার্জিনিয়ো দেস্ত, কেউই দিতে পারেনি দানি আলভেজ হওয়ার ভরসা। তাই মেসির দানি আলভেজকে দলে নিতে চান বার্সেলোনা কোচ জাভি।
মেসি যখন মলিনার মাঝে দেখছেন দানি আলভেজ, মলিনা জানাচ্ছেন তার ফুটবলার হওয়ার পেছনে আদর্শ স্বয়ং এই আর্জেন্টাইন গ্রেট। ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট গোলডটকমে সাক্ষাৎকারে নিজের আদর্শ নিয়ে মলিনা জানান, ‘(আমার আদর্শ) মেসি! কারণ যখন ছোট ছিলাম, আমি রাইটব্যাক ছিলাম না। আক্রমণে ওপরের দিকেই খেলতাম। মেসিকেও অনেক ভালো লাগে। এর মানে এই নয় যে আমি তাঁর কাছাকাছি মানের ছিলাম বা এ রকম কিছু, কারণ শুধু এটাই ছিল যে—তিনি কী অসাধারণ একজন খেলোয়াড়! অন্য যে কারও চেয়ে উঁচু মানের।’
মলিনার দিকে নজর যে শুধু বার্সেলোনা বা য়্যুভেন্তাসের বিষয়টা এমনও নয়। তার দিকে নজর আর্সেনাল ও আতলেতিকো মাদ্রিদেরও। সিমি ভারসালিকো ও ড্যানিয়েল ভাস থাকলেও আতলেতিকো কোচ সিমিওনে চাচ্ছেন আরেকটু কম বয়সী এবং সম্ভাবনাময় কাউকে। একই ভাবনা আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতারও। তমিয়াসু আছেন, এক মৌসুম ধারে বেতিসে খেলে আবার লন্ডনে ফিরেছেন এক্তর বেয়েরিনও। কিন্তু মলিনাকেও দলে চান তিনিও।
তবে ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যম তুত্তোস্পোর্তসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, দৌড়ে এখনো এগিয়ে জুভেন্টাসই। উদিনেস ক্রীড়া পরিচালক পিয়েরপাওলো মারিনো কয়েকদিন আগে তুত্তোস্পোর্তকে বলেন, ‘মলিনাকে ঘিরে আগ্রহ অনেক, ওকে আগামী মৌসুমেও আমাদের ক্লাবে রাখা কঠিন হবে। তবে আমি আশায় আছি কোনো ইতালিয়ান ক্লাব যাতে ওকে নেয়, তাতে ওর মূল্য বাড়বে। জুভের সেই ক্ষমতা আছে।’ সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে উদিনেসের হয়ে ৩৭ ম্যাচে ৮ গোল ও ৫ অ্যাসিস্ট করেছেন মলিনা।
কিউএনবি/আয়শা/১৩.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:১৯