শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন

পরিসংখ্যান প্রকাশ না করেই বিদায় নিল নুরুল হুদা কমিশন

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৬২ Time View

 

ডেস্ক নিউজ : কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশের ব্যবস্থা না করেই বিদায় নিয়েছে। নির্বাচনী ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত এ প্রতিবেদন কবে প্রকাশ হবে বা আদৌ হবে কি না তা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলতে পারছেন না। তাঁরা বলছেন, নতুন যে কমিশন গঠন হবে সেই কমিশন যদি উদ্যোগ নেয় তাহলে এ পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশ হতে পারে।

এ বিষয়ে বিদায় নেওয়া নির্বাচন কমিশনারদের একজন বলেছেন, তাঁরা প্রতিবেদন প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছিলেন। পরে প্রকাশ হয়েছে কি না জানা নেই। আর একজন বলেছেন, এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কি না সেটা তিনি স্মরণ করতে পারছেন না। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান প্রতিবেদনকে নির্বাচনী ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। এটি প্রকাশ না করা দুঃখজনক। এক ধরনের দায়িত্বহীনতাও।  

এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত একপক্ষীয় ষষ্ঠ নির্বাচন ছাড়া সব জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েই তখনকার নির্বাচন কমিশনগুলো পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীদেরসহ ৩২ ধরনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে পরের বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশ করা হয়েছিল।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশ করা সে সময়ের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগেই। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ২০০২ সালের এপ্রিলে। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান প্রতিবেদন রয়েছে। কমিশনের পাঠাগারেও পুস্তকাকারে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে এসব প্রতিবেদন সংরক্ষিত রয়েছে।

এবার কেন এ পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো না—এ প্রশ্নে সদ্য বিদায় নেওয়া কমিশনের জ্যেষ্ঠ সদস্য মাহাবুব তালুকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, “এটি প্রকাশ করার বিষয়ে কমিশনে কখনো আলোচনা হয়েছে কি না আমার মনে পড়ছে না। তবে নাগরিক সংগঠন ‘সুজন’ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার তথ্য অধিকার আইনের বলে ওই নির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক ফল চাইলে তা কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। ” বিদায় নেওয়া আরেক নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার তো মনে হয় আমরা অনুমোদন দিয়ে এসেছিলাম। প্রকাশ হয়েছে কি না বলতে পারছি না। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা এটা বলতে পারবেন। ’

কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘আমি ২০২০ সালের নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে যোগ দেওয়ার পর এ বিষয়ে কোনো আলোচনার কথা জানি না। বিদায় নেওয়া কমিশন এ বিষয়ে কোনো অনুমোদন দিয়ে গেছে বলেও আমার জানা নেই। ’কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য তথ্য-উপাত্ত এখনো প্রস্তুত করা হয়নি। তা ছাড়া বিদায় নেওয়া কমিশনাররা এ বিষয়ে অনুমোদনও দিয়ে যাননি। তাঁরা প্রকাশ করে গেছেন তাঁদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ, যোগদান, শপথ গ্রহণ, বিভিন্ন সভা-সম্মেলনে যোগদান—এসবের ছবিসংবলিত ‘নির্বাচন কমিশন প্রতিবেদন’, যা আগের কোনো কমিশন করার প্রয়োজন মনে করেনি।

বিষয়টিকে দায়িত্বহীনতা হিসেবেই দেখছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, এটি না করা দুঃখজনক এবং এক ধরনের দায়িত্বহীনতা। এ ধরনের প্রতিবেদন দেশের নির্বাচনের ইতিহাস হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। এরশাদ সরকার আমলে সে সময়ের নির্বাচনের অনেক তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট করার চেষ্টা হয়েছিল। পরে সেগুলোর আংশিক উদ্ধার করা হয়।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/ সকাল ১১:০৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit