শার্শা(যশোর)সংবাদদাতা : যশোরের শার্শার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে জিয়া, জামাল ও সাইফুল সিন্টিকেটের মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার হাজার বোতল ফেনসিডিল আসছে। যাচ্ছে সোনা ও নারী, শিশু ও ধুড়। করোনার মধ্যেও জমজমাট দৌলতপুর মাদকের ঘাট । যার সব কিছুই চলছে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই । যে কারনে একাধিক মাদক মামলার আসামী হয়েও অধরা রয়ে যাচ্ছে দৌলতপুর সীমান্তের সিন্টিকেট প্রধান জিয়া, জামাল ও সাইফুল। এই সিন্টিকেটের মাধ্যমে প্রতিদিন দৌলতপুর সীমান্তের ওপারে ভারতীয় ঘোনার মাঠ থেকে এ পারের দৌলতপুর গ্রামের ব্রীজ হয়ে মনিরের মেহগনি বাগান, বালুর মাঠ নেদার বাড়ির পিছনের আম বাগান ও বিজিবি ক্যাম্পের পিছনের তালতলা দিয়ে ফেনসিডিল আসছে। অসাধু কিছু প্রশাসনের কর্মকর্তা, সরকারী দলের কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের মদদ থাকায় এরা রয়ে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাহিরে।
সূত্রে জানা গেছে, শার্শার উপজেলার সীমান্ত ঘেষা গ্রাম দৌলতপুর। এই গ্রামের পশ্চীশ পাশে রয়েছে ভারতের ইছামতি নদীর শাখা। শাখা নদীটি ছোট হওয়ায় চোরাচালানীদের নিরাপদ রুট দৌরতপুর সীমান্ত। যে কারনে এই গ্রামের একটি প্রভাবশালী মহল ৬০ সদস্য বিশিষ্ট একটি চোরাচালান পরিচালনার জন্য সিন্টিকেট গড়ে তুলেছে। যার নেতৃত্বে রয়েছে দৌলতপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে জিয়াউর রহমান (৪৫), মৃত আবু তাহেরের ছেলে জামাল উদ্দিন (৫২) ও মুক্তার আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৬)। এই সিন্টিকেটের নেতৃত্বে প্রতিদিন হাজার হাজার বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল আসছে। বিনিময়ে যাচ্ছে সোনা ও নারী, শিশু ও ধুড়।
সূত্রে আরও জানাগেছে, দৌলতপুর সীমান্ত চোরাচালান সিন্টিকেটের প্রধান জিয়া, জামাল ও সাইফুল এর নামে ৮ থেকে ১০টি করে মাদকের মামলা রয়েছে। তার পরেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পরিচালনা করছে মাদকের ব্যবসা। নাম না প্রকাশ করার শর্তে দৌলতপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে ৪/৫ হাজার বোতল ফেনসিডিল ভারত থেকে আসছে। প্লাস্টিকের বোতল হওয়ায় ১শটির এক একটি কার্টুন ভর্তি হয়ে ফেনসিডিল আসে। তিনি জানান, প্রতিপিস ফেনসিডিলের বর্তমান মুল্য ভারতীয় ৫/৬শ টাকা। অপরদিকে বাংলাদেশে প্রতিপিস এর মুল্য ৮শ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা।
সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রতিদিন দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিল আসায় সিন্টিকেটের অনেক সদস্য খুচরা হিসেবেও বিক্রি করছে। যার কারনে প্রতিদিন সকাল থেকে যশোর, ঝিকরগাছা,গদখালী, নাভারন, শার্শা ও বেনাপোল এলাকার অনেক কলেজ পড়–য়া ছাত্র ও যুবক মাদক সেবিরা দৌলতপুর গ্রামে গিয়ে ফেনসিডিল খাচ্ছে। এসব দেখে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। কারন কেউ প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদকারীকে সিন্টিকেট সদস্যরা মারপিট করে। ফেনসিডিল দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বিসয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল ভুইঞা বলেন , আমি নতুন এসেছি। তবে মাদকের ব্যাপারে কোন ছাড় নেই। তিনি বলেন মাদক ব্যবসায়ী যেই হোক মাদকের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন মাদকের সিন্টিকেট থাকলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি মাদক সেবি ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তথ্য দেওয়ার জন্য সমাজ সেবকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
কিউএনবি/আয়শা/১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৬:৩৯